বিজ্ঞাপন

মিড ডে মিল: কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিল নয়, কাটছাঁট হচ্ছে

September 16, 2020 | 11:21 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য বহুল আলোচিত ‘মিড ডে মিল’ বা ‘স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচি প্রকেল্পে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিল নয়, কাটছাঁট করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা নিতে স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তাকে এই কর্মসূচিতে সফল ভারতে পাঠানোর সুপারিশ করবে পরিকল্পনা কমিশন। গ্রাম ও শহর— দুই ধরনের এলাকার অভিজ্ঞতা নিতে এসব কর্মকর্তার কলকাতা, কেরালা ও দিল্লি সফরের বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় সম্মত হয়েছেন সবাই।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় কর্মকর্তাদের খাবার বিতরণ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য বিদেশ সফরে যতটা সম্ভব কম অর্থ ব্যয়ের পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ। তার সভাপতিত্বেই সোমবারের পিইসি সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সূত্র জানায়, দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ফিডিং কর্মসূচির জন্য ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবে খাবার বিতরণ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা নিতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে ৫ কোটি টাকা এবং দেশে প্রশিক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। তবে কত জন কর্মকর্তা বিদেশ সফরে যাবেন, সেটি উল্লেখ করা হয়নি প্রস্তাবে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, এক হাজার কর্মকর্তা ওই বিদেশ সফরের আওতায় থাকছেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে তা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটির বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাব পাঠিয়েছে, নিশ্চয়ই তা ভেবেচিন্তেই পাঠিয়েছে। তারা তাদের মতো করে চিন্তা করেছে। কিন্তু আমরা আমাদের মতো করে মূল্যায়ন করেছি। জ্ঞান অর্জনের জন্য বিদেশ সফরের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য আমরা বলেছি, ছোট ছোট তিনটি টিমে ভারতের দিল্লি, কলকাতা ও কেরালা সফর করে তাদের দেশের মিড-ডে মিল কর্মসূচি পরিচালনার অভিজ্ঞতাটা কর্মকর্তারা নিতে পারেন। তবে এ বৈঠকের রেজ্যুলেশনই এখনো হয়নি। রেজ্যুলেশন হলে তারপর আগামী রোববার তা পাঠানো হবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

সচিব বলেন, আমাদের সুপারিশ অনুযায়ী বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে খরচ ৮০ লাখ টাকা থেকে খুব বেশি হলেও দেড় কোটি টাকার মধ্যেই থাকবে। কেননা এই তিনটি টিমে ১০ জন করে সর্বোচ্চ ৩০ জন কর্মকর্তা যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব কমাতে বলা হয়েছে। তাছাড়া দেশে প্রশিক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, এক্ষেত্রে ব্যয় কমিয়ে অল্পসংখ্যক কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের জন্য বাস্তবসম্মত ব্যয় প্রস্তাব দিতে হবে।

এক হাজার কর্মকর্তার বিদেশ সফরের তথ্যটি ভুল জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, এক হাজার কর্মকর্তা বিদেশ সফরে যাবেন— এই তথ্যটি সঠিক নয়। আমি খুব ভালো করে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দেখেছি। কোথাও কর্মকর্তার সংখ্যা লেখা ছিল না। এ তথ্য কোথায় থেকে বের হলো, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। তাছাড়া এক হাজার কর্মকর্তা বিদেশ সফরে গেলে তো পাঁচ কোটি টাকা খরচে কুলানোর কথা নয়। তখন আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হতো।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ১০৪ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। এই কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের বিস্কুট দেওয়া হয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় পরিচালিত এই প্রকল্পে এরই মধ্যে তিনটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। এই প্রকল্পের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।

জানা গেছে, এই প্রকল্প শেষ হলে জানুয়ারি থেকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরে পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করতে চায় সরকার। এই উদ্যোগের আওতায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে তিন দিন খিচুড়ি ও তিন দিন বিস্কুট দেওয়া হবে। এ জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে প্রায় ১৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকার প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন