বিজ্ঞাপন

‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলে কোভিড নিয়ন্ত্রণে’

September 17, 2020 | 1:40 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন বলে মন্তব্য করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে সমালোচনায় কান না দিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজের কাজ সঠিকভাবে করে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কী বললো বা কে কী লিখলো— ওই দিকে কান দিলে কোনো কাজ করতে পারবেন না। আপনার নিজের বিশ্বাস থাকতে হবে, নিজের ওপর আস্থা খাকতে হবে। আপনি সঠিক কাজটি করছেন— সেই আস্থাটা নিজের ওপর থাকলে সে কাজের ফল দেশবাসী পাবে, দেশের মানুষ পাবে। যেমন— অনেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক সমালোচনা করে। কিন্তু আমি মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং সেই সময় তাৎক্ষণিকভাবে যে কাজগুলো করার দরকার ছিল, সেটা যথাযথভাবে করা হয়েছে বলেই কোভিড-১৯ আমরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছি।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে গণভবন থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) সই এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ আসবে, দুর্যোগের জায়গাই বাংলাদেশ। কিন্তু সেই দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের অর্থনীতি যেন বাধাগ্রস্ত না হয় বা গতিশীল থাকে, সেটা দেখতে হবে। আমরা যে প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া শুরু করলাম, এটা কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশ আমাদের আগে দিতে পারেনি। আমরাই প্রথম কিন্তু দিলাম। সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সবাই কাজ করেছে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় সাধারণত কিছু দিতে গেলে হাত টেনে রাখে। কিপটামি করে। কিন্তু এবারে কিন্তু কিপটামি করেনি। সবাইকে হাত খুলে যেখানে যেটা দরকার, আমরা দিয়েছি। সেভাবে দেওয়া হয়েছে বলেই এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থেকেছে। আমাদের ডিজিপির প্রায় ৪ দশমিক শূন্য ৩ ভাগ আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ হিসেবে দিয়েছি। নগদ টাকা দিয়েছি। সরকারি টাকার বাইরে আমি নিজে অর্থ সংগ্রহ করে সহায়তা দিয়েছি। এসময় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব শ্রেণিপেশার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে বিভিন্ন সহায়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষ আমরা পালন করব। তার জন্য সব কর্মসূচি নিয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে করতে চেয়েছিলাম, সেটা পারলাম না। এখন সীমিত আকারে সেটি করছি। আমাদের লক্ষ্যটা হলো— আমরা পার্টি থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা এক কোটি বৃক্ষরোপণ করব। আবার সরকারিভাবেও সিদ্ধান্ত দিয়েছি বৃক্ষরোপণের।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসকদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমাদের সবসময় মাথায় রাখতে হবে— প্রত্যেকেই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। অনেক ডাক্তার মারা গেছেন, নার্স মারা গেছেন, স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। তারা কিন্তু সবাই কাজ করেছেন। আমাদের দেশে এক শ্রেণির লোক থাকে, তাদের সমালোচনাটা করাই অভ্যাস। পান থেকে চুন খসলে পরে অনেক কথা বলবে, কিন্তু নিজেরা কিছু করবে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমি তো বেসরকারি টেলিভিশন অনেকগুলো দিয়ে দিয়েছি। তারপর আছে বিদ্যুৎ। আর এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এরাই একসময় সমালোচনা করেছিল। এখন সেই ডিজিটাল বাংলাদেশে বসে আমাদের বিরুদ্ধে নানারকম অপপ্রচার তারা চালাতে থাকবে। সেটা বলুক। আমি মনে করি, আমরা সঠিক পথে আছি কি না, এটা নিজের আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বহুদিন পর সবাইকে একসঙ্গে পেলাম। সে কারণে অনেক লম্বা ভাষণ দিয়ে ফেললাম। আমাদের এই কাজগুলোর জন্য, বিশেষ করে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং তার সঙ্গে তার যে ফলাফল, এটা সাধারণ মানুষের কাছেই যাবে। মানুষই এ শুভ ফলটা পাবে। আর আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। আমরা জনগণের ভোট নিয়ে এসেছি, আমরা মানুষের কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আর আপনারা যারা চাকরি করেন, আপনারাও কিন্তু জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আপনাদের কিন্তু আমাদের চেয়েও অনেক বেশি সময় কাজ করে যেতে হবে। আপনাদের জনসেবা করতে হবে। জনসেবা করাটাই আপনাদের দায়িত্ব।

‘আমি বিশ্বাস করি, এই বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, আমাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমরা পেছনে ফিরব না। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব এবং বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসাবেই গড়ে তুলব। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি,’— বলেন শেখ হাসিনা।

যারা পুরস্কার পেয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। আগামীতে যেন আরও বেশি পুরস্কার পেতে পারেন, সেভাবেই সবাই কাজ করবেন বলেও আশাবাদ জানান সরকারপ্রধান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন