বিজ্ঞাপন

ল্যাম্পার্ডকে বাস্তবতা দেখালেন ক্লপ

September 21, 2020 | 11:47 am

স্পোর্টস ডেস্ক

মৌসুমের প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়েই শুরু করেছিল ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসি। আর দ্বিতীয় ম্যাচেই তাদের টেনে মাটিতে নামিয়েছে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। দুই দলের দুই ম্যানেজারের মধ্যে মাঠের বাইরে কথার লড়াই বেশ জমজমাট, এবার মাঠের লড়াইয়ে ল্যাম্পার্ডকে হারিয়ে ইয়্যুর্গেন ক্লপের বাজিমাৎ। এবারের দলবদলের মৌসুমে ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ততম ক্লাব ছিল চেলসিই। কোটি কোটি পাউন্ড খরচ করে বেশ কিছু নতুন মুখ দলে ভেড়ালেও খেলার মাঠে যেন কিছুটা নিশ্চুপই চেলসি। আর দলবদলের মৌসুমে স্বপ্নের সময় কাটানো ল্যাম্পার্ডকে এবার বাস্তবাতাটাই চোখের সামনে দেখালেন ক্লপ।

বিজ্ঞাপন

পিএসজি থেকে রক্ষণে থিয়াগো সিলভা ও লেস্টার থেকে বেন চিলওয়েলকে দলে ভেড়ায় চেলসি। মধ্যমাঠে বায়ার লেভারকুজেন থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে কাই হার্ভাটজকে কিনে আনেন ল্যাম্পার্ড। তবে সবচেয়ে বেশি যে জায়গায় নতুন সেনানী ভেড়ান ল্যাম্পার্ড সেটি হচ্ছে আক্রমণভাগ। আয়াক্স থেকে হাকিম জিয়েচ, আরবি লেইপজিগ থেকে টিমো ভার্নারকে দলে ভিড়িয়ে গোটা ইউরোপিয়ান ফুটবলকেই তাক লাগিয়ে দেয় চেলসি।

আর করোনা প্রাদুর্ভাবের এই সময়েও এভাবে খেলোয়াড়দের পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ খরচের ব্যাপারটি সহজভাবে নিতে পারেননি লিভারপুলকে সদ্য প্রিমিয়ার লিগ জেতানো কোচ ইয়্যুর্গেন ক্লপ। অবশ্য তার এমন আক্রোশের অন্য একটি কারণও ছিল। লেইপজিগ থেকে টিমো ভার্নারকে দলে ভেড়ানোর জন্য বেশ এগিয়েছিল লিভারপুল। লেইপজিগের সঙ্গে কথাও চলছিল অলরেডদের, কথা চলছিল ভার্নারের সঙ্গেই। ঠিক তখনই ছবির বাইরে থেকে হুট করে আবির্ভাব ল্যাম্পার্ডের। চোখের পলকে লেইপজিগের সঙ্গে চুক্তি করে ভার্নারকে দলে ভিড়িয়ে ফেলেন ল্যাম্পার্ড।

বিজ্ঞাপন

আর এই ঘটনার পর দলবদলের মৌসুমে চেলসির এত অর্থ খরচের সমালোচনা করেন ক্লপ। তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে চেলসির মতো এমন অবস্থায় নেই যেখানে ক্লাবের মালিক ক্লাবে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে এত খেলোয়াড় কিনে দলে ভেড়াব। আমরা এমন ক্লাব নই।’ আর এখানেই চেলসির ম্যানেজার ল্যাম্পার্ড যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেন ক্লপের বিরুদ্ধে। কথার জবাব কথাতেই দিয়েছিলেন তিনি। আর ক্লপের এমন দাবিকে হাস্যকর বলেই ইঙ্গিত করেছিলেন ল্যাম্পার্ড।

তবে কথার লড়াই যাই হোক না কেন মাঠের লড়াইয়ে ক্লপের কাছে এখনও রুকি ল্যাম্পার্ড। তাই তো গেল মৌসুমে লিগে দুইবারই অলরেডদের কাছে হেরেছিল ব্লুজরা। আর নতুন মৌসুমে নতুন খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়েও সেই ভাগ্যের কোনো রূপ পরিবর্তন আসেনি। এবারেও সেই হারের মুখটাই দেখতে হয়েছে চেলসিকে। ল্যাম্পার্ডের দলের রক্ষণ যে নড়বড়ে তা বেশ ভাল করেই বুঝতে পেরেছিলেন ক্লপ। তাই তো আক্রমণের পর আক্রমণ করে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলছিল ব্লুজদের রক্ষণ।

গোটা ম্যাচে মাত্র ৩৯ শতাংশ বলের দখল ছিল চেলসির আর লিভারপুলের দখলে ছিল ৬১ শতাংশ। আক্রমণের কথা বলতে গেলে দেখা যায় গোটা ম্যাচে মাত্র ৫টি শট নিতে পেরেছে চেলসি যেখানে লিভারপুলের শট নেওয়ার সংখ্যা ১৮টি। গোলের সুযোগ তৈরিতে রেডদের ধারে কাছেও ঘেষতে পারেনি ব্লুজরা। মানে-সালাহরা গোটা ম্যাচে গোলের সুযোগ তৈরি করেছে ১৩টি বিপরীতে চেলসির এই সংখ্যা মাত্র ২টি। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ঢুকে শট নেওয়ার সংখ্যার দিক দিয়ে রেডদের আরও পেছনে পড়েছে ভার্নাররা। সালাহরা যেখানে চেলসির ডি বক্সে ঢুকে মোট শট নিয়েছেন ১০টি সেখানে ভার্নার, হার্ভাটজরা ভ্যান ডাইকদের টপকে শট নিতে পেরেছিল মাত্র ৩টি।

বিজ্ঞাপন

মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাইটনের বিপক্ষে সস্তির ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় পেলেও তার অ্যানাটমি করলে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্রের। সে ম্যাচে চেলসির থেকে বল দখলে এগিয়ে ছিল ব্রাইটন। চেলসি ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ বল দখলে রাখতে পেরেছিল আর ব্রাইটনের ছিল ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ। গোলের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রেও চেলসির সঙ্গে সমানে সমান পাল্লা দিয়েছিল ব্রাইটন। চেলসির তুলনায় গোল বরাবর সে ম্যাচে বেশি শট নিয়েছিল ব্রাইটন। দুই দলের শটের সংখ্যা যথাক্রমে ১০টি (চেলসি) এবং ১৩টি (ব্রাইটন)। আর গোল করার সুযোগ তৈরিতেও সমানে সমান ছিল দুই দল।

তবে ইনজুরির কারণে নতুন দলে ভেড়ানো থিয়াগো সিলভা, বেন চিলওয়েল, আক্রমণভাগে হাকিম জিয়েচ এবং ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচকে গেল দুই ম্যাচ ধরেই পাচ্ছেন না ল্যাম্পার্ড। আর তাই তো এদিক দিয়ে কিছুটা দোষ ল্যাম্পার্ড চাপাতে পারেন ইনজুরির উপরেও। ওদিকে বায়ার্ন থেকে থিয়াগো সিলভাকে দলে ভিড়িয়ে মধ্যমাঠ আরও মজবুত করেছে লিভারপুল। দলবদলের মৌসুমে চেলসির মতো কাড়িকাড়ি অর্থ খরচ না করলেও দলের সাম্যাবস্থা ধরে রাখছেন ইয়্যুর্গেন ক্লপ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন