বিজ্ঞাপন

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্দা নামল শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক দাবার

September 27, 2020 | 4:50 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শেষ হলো চার দিনের জমজমাট আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত হয় এই টুর্নামেন্ট।

বিজ্ঞাপন

প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন ইন্দোনেশিয়ার গ্র্যান্ডমাস্টার মেগারান্ত সুসান্ত। ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার এসএল নারায়াণন দ্বিতীয় ও ইরানের আমিন তাবতাবেই তৃতীয় হন।

রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে রোববার বেলা ১১টার দিকে আয়োজিত হয় বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। অনলাইনে যোগ দেন এশিয়ান চেস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিশাম আল তাহির। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন ও নেতৃত্বের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা ও আন্তরিকতার কথা উল্লেখ করে জাহিদ আহসান রাসেল আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। দাবার জন্য শিগগিরই অবকাঠামোসহ একটি স্থায়ী জায়গা ঠিক করার আশ্বাস দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা’ টুর্নামেন্ট আয়োজনে দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সর্বাত্মক উদ্যোগ ও সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে আরও একটি দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে। এই আয়োজনেও সহযোগিতা করবেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন প্রতিটি বাঙালির জন্য এক মাহেন্দ্রক্ষণ। এই জন্মদিন উপলক্ষে ৭৪ দাবাড়ুকে নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন সবার জন্যই অত্যন্ত আনন্দের।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের বর্ণনাও দেন আইজিপি।

সভাপতির বক্তব্যে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, “বৈশ্বিক চিন্তাবিদ এবং মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা ২০২০’ টুর্নামেন্টর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং সম্মানিত।”

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনের উল্লেখ করে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, “সকালে আমি প্রধানমন্ত্রীর একটি উক্তি পড়ছিলাম। সেটি এ রকম, ‘আমার শৈশব সবসময় আনন্দে কাটেনি, কারণ আমার বাবা প্রায়শই কারাবন্দি থাকতেন এবং আমরা তাকে জেলখানায় দেখতে যেতাম’।” চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমি এই বাক্যটি পড়ি এবং প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য নিরলসভাবে যা করে যাচ্ছেন, তা নিয়ে ভাবি। আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, সুখী হওয়াই জীবনের লক্ষ্য নয়। জীবনকে হতে হবে অপরের জন্য কার্যকরী, সম্মানজনক, সহমর্মী, নিজের জীবন দিয়ে বদল আনতে হবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিজের জীবন আমাদের কল্যাণের জন্য ব্যয় করেছেন। শাসক হিসেবে নয়, একজন মহান নেতা হিসেবে তিনি এ কাজে নিজের সর্বান্তকরণ নিযুক্ত করেছেন।’

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বলেন, ‘সুন্দর মনের মানুষেরা মর্যাদাবান হয়ে থাকেন। এ কারণেই আমাদের টুর্নামেন্ট এতটা সফল হয়েছে। জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই আসরে অংশ নিতে পেরে প্রতিযোগী, আয়োজকসহ সবাই সম্মানিত বোধ করেছেন। তারা কেউ বাধ্য হননি; মানবতার জননীর জন্য শ্রদ্ধা থেকেই করেছেন।’

টুর্নামেন্ট আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে ধন্যবাদ জানান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, গোল্ডেন স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আমির আলী রানা, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুর রহমান মল্লিকও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান শেষে চ্যাম্পিয়নসহ শীর্ষস্থানে থাকা দাবাড়ুদের পুরস্কৃত করা হয়। দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে পুরস্কার নেন বিজয়ীরা।

টুর্নামেন্টের মোট প্রাইজমানি ৬ হাজার ডলার। চ্যাম্পিয়ন ইন্দোনেশিয়ার গ্র্যান্ডমাস্টার মেগারান্ত সুসান্ত পান ১ হাজার ২০০ ডলার। রানার আপ হয়েছেন ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার এস এল নারায়াণান এবং তৃতীয় হয়েছেন ইরানের গ্র্যান্ডমাস্টার আমিন তাবতাবেই।

স্বাগতিক বাংলাদেশের কেউ নেই শীর্ষ দশে। সেরা স্কোর করেন ফিদে মাস্টার সুব্রত বিশ্বাস। তিন রাউন্ড থেকে তার অর্জন ৬ পয়েন্ট।
সমান পয়েন্ট নিয়ে ১৪তম হন ফিদে মাস্টার মোহাম্মদ জাভেদ। অন্যদিকে ৫.৫ পয়েন্ট নিয়ে আবু সুফিয়ান শাকিল আছেন তার পরের স্থানে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের সব প্রতিযোগীকে বিশেষ উপহার দেওয়া হয়। সুইস লিগ পদ্ধতির এই দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নেন ৪৯ স্বাগতিকসহ ৭৪ দাবাড়ু।

রাজধানীর বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম অ্যাভেনিউয়ের কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হয়।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন