বিজ্ঞাপন

বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং চক্র ডিবি’র জালে

September 30, 2020 | 6:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিকাশের দোকানে গিয়ে বিকাশ বা রিচার্জ করার নাম করে কৌশলে বিকাশ লেনদেনের খাতার ছবি তোলেন একজন। গ্রাহকদের বিকাশ নম্বর সম্বলিত ওই পাতার ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন হ্যকারদের কাছে। এরপর লেনদেনের তথ্য মিলিয়ে গ্রাহকের মোবাইল নম্বরে ফোন যায়। দোকানদার সেজে ফোনে বলা হয়, দোকান থেকে ভুলে টাকা চলে গেছে। তার অ্যাকাউন্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে বিকাশ অফিস থেকে ফোন দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

এরপর ভিওআইপি ব্যবহার করে বিকাশ কল সেন্টার সেজে কল চলে যায় গ্রাহকের নম্বরে। পাঠানো হয় একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)। এরপর কৌশলে গ্রাহককে দিয়ে একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান করিয়ে জেনে নেওয়া হয় সেই ওটিপি ও গ্রাকের বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর।

এভাবেই বিকাশ গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি চক্র। ফরিদপুরের মধুখালী থেকে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান ।

গ্রেফতার ৯ জন হলেন— রানা খান, মো. লিটন, নয়ন শেখ, টিটু মোল্ল্যা, সালমান মোল্লা, আকাশ, মোয়াজ্জেম হোসেন ও রহিম, তানজিল। ডিবি জানিয়েছে, প্রতারণায় তারা আইফোন ব্যবহার করত। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত দুইটি আইফোনসহ ১০টি মোবাইল ফোন, ৩৭টি সিম ও একটি প্রোভক্স গাড়ি জব্দ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন গ্রামে বসবাস বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং চক্রের মূল হোতাদের। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের মনোনীত এজেন্টের দিয়ে বিকাশ গ্রাহকের তালিকা তৈরি করতেন। এরপরে সেই তালিকা ধরে হ্যাকাররা গ্রাহকের নম্বরে ফোন দিয়ে ভুলে টাকা চলে গেছে বলে পিন নম্বর দিতে বলেন।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর মূল হ্যাকার বিশেষ আ্যপ ব্যবহার করে বিকাশ অফিসের নাম করে বিকাশ সেন্টারের মূল নম্বর বানিয়ে বিকাশ গ্রাহককে ফোন দিতেন। কলসেন্টারের ব্যক্তি গ্রাহকের নম্বরে একটি ওটিপি পাঠিয়ে একটি অঙ্ক করার জন্য বলে গ্রাহকের কাছ থেকে কৌশলে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরটি জেনে নিতেন।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, হ্যাকার বিকাশ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর অ্যাকাউন্টের টাকা বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্টে পাঠিয়ে দিয়ে মনোনীত ব্যক্তিদের দিয়ে ক্যাশ আউট করিয়ে নিতেন। টাকা ক্যাশ আউট হলে হ্যাকাররা মাঠ পর্যায়ে তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের প্রতি ১০ হাজার টাকায় এক হাজার টাকা করে কমিশন দিতেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও হ্যাকাররা বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন করা বিকাশ পারসোনাল অ্যাকাউন্টের বিপরীতে থাকা সিম কার্ড তিন থেকে চার হাজার টাকায় কিনে নিতেন। যে ৯ জনকে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা প্রতারণাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন