বিজ্ঞাপন

‘শেখ হাসিনা বিস্ময়, এ ধারা অব্যাহত থাকুক’

October 1, 2020 | 2:37 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের বিস্ময়’ অভিহিত করে তার দীর্ঘায়ু ও সফলতা কামনা করেছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। তারা বলেছেন, নেতৃত্ব দিয়ে তিনি যেন অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পূর্ণ করার সুযোগ পান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা ও একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করে বাংলাদেশকে পাপমুক্ত করেছেন। তিনি এই দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের বুকে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। আজকে তিনি বিস্ময়, বাংলাদেশ বিস্ময়। এই ধারা অব্যাহত থাকুক।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায়  নেতারা এসব কথা বলেন।

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আসুন আমরা এই কেন্দ্রীয়১৪ দলকে মুক্তিযুদ্ধের এ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করি, আরও শক্তিশালী করি। নেত্রী শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন, সেই বাংলাদেশকে আজ তিনি এক নতুন বাংলাদেশে পরিণত করেছেন। এই বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ নয়। আজকের বাংলাদেশ জঙ্গিবাদমুক্ত, আজকের বাংলাদেশ সন্ত্রাসমুক্ত। তিনি তার সাহসিকতা, দক্ষতা, সততা দিয়ে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার জীবনের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, তিনি রাজনীতিতে সাহসের নাম। মাঠের লড়াইয়ে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনর্গঠনে তিনি তার সাহস ও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। দৃঢ়তা দেখিয়েছেন যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারে। দৃঢ়তা দেখিয়েছেনে এ দেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এবং দৃঢ়তা দেখিয়েছেন রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে। মেধার পরিচয় দিয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। সেজন্য তিনি এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তিনি তার আসন করে নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মেনন আরও বলেন, দূরদর্শিতা আমরা দেখি যখন তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে ঘোষণা করেছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আজ এই করোনাকালে আমরা ডিজিটাল মাধ্যমে শুভ জন্মদিনটা পালন করতে পারছি। তিনি মেধা দেখিয়েছেন, দূরদর্শিতা দেখিয়েছেন পরিবেশের পক্ষে। শেখ হাসিনা একজন সাহসী রাজনীতিকের নাম, মেধাবী রাজনীতিকের নাম, দূরদর্শী রাজনীতিকের নাম। সবচয়ে বড় কথা হচ্ছে তিনি বাংলা ও বাংলার মানুষের নেত্রী।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশের একজন সৃষ্টিশীল রাজনীতিক নেতা, যিনি বাংলাদেশে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছেন। সেই রাজনীতিক, সেই নেতা হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে গেছেন। জাতির জনক বঙ্গিবন্ধু তার জীবনের ১৪ বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। তিনি জেলখানায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। বাবার আদর-স্নেহ ভালবাসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধুর কাছে থেকে দেখেছি, বঙ্গবন্ধু যখনই সুযোগে পেয়েছেন, যখনই সন্তানদের কাছে পেয়েছেন— তিনি আদর-স্নেহে ভরিয়ে দিতেন। আমি, আমু ভাই— আমরা স্বচক্ষে দেখেছি বঙ্গবন্ধুর সেই বাৎসল্য।

বিজ্ঞাপন

‘১৯৮১ সালের ১৩, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। সেই পতাকা হাতে নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে, জেল-জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে দীর্ঘ ২১ বছর পর তিনি আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে নিজে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দেশ যখন স্বাধীনতার চেতনা-মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছিল, তিনি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার করেছেন। একে একে সব কলঙ্ক থেকে বাঙালি জাতিকে তিনি মুক্ত করেছেন,’— বলেন তোফায়েল আহমেদ।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা আজ কেবল বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বে একজন মর্যাদাশীল নেতা। তিনি যখন জাতিসংঘে ভাষণ দেন, আমরা দেখেছি বিদেশি রাষ্ট্রনায়করা তাকে কিভাবে সম্মান করে। আজ তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলছেন। আশা করি সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করবেন এবং বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করবেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পর তার নির্ভিক-দূরদর্শী একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে এই দেশকে একটি পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। বঙ্গবন্ধু যেটা চেয়েছিলেন যে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক, আজ তার নেতৃত্বে সেটা সফল হয়েছে। তার যেসব গুণ আমরা আলোচনা করেছি, তিনি কিন্তু সেগুলো সব একেকটি একেক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছেন। ওইরকম পরিস্থিতিতে কেউ এমনটি করতে পারত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ বিদেশে অবস্থান করার সময় যেভাবে গোটা পরিবারকে হারাতে হয়েছে, এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কয়জনকে হতে হয়েছে?

আমু আরও বলেন, ছয় বছর বিদেশে থেকে দেশে ফিরলেন একা। সন্তানদের আনতে পারলেন না। একদিকে সব নিঃস্ব, আবার সবাইকে রেখে আসতে বাধ্য হলেন। এমন একটি পরিস্থিতিতে তিনি যখন যাত্রা শুরু করেন, সেই যাত্রাপথ ছিল অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ। প্রতিটি পদে, প্রতিটি মুহূর্তে ছিল তার জীবনের ঝুঁকি। বারবার তাকে হত্যার প্রচেষ্টা চলে। এইরকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কোনো দেশের কোনো রাষ্ট্রনায়ক এমন দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও রাষ্ট্রপরিচালনা করতে পেরেছিলেন কি না, সেটাই বিবেচ্য বিষয়। অন্যসব দেশের রাজনীতিবিদদের মতো ‍সুষ্ঠু পরিবেশে শেখ হাসিনা রাজনীতি করতে পারেননি। তবু সবকিছু মোকাবিলা করে যেভাবে তিনি পথ চলেছেন, তা অকল্পনীয়।

বিজ্ঞাপন

‘আজ তার নিষ্ঠা বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে উন্নয়নের ধারা দেখে। আজ তিনি শুধু বাংলাদেশকেই মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেননি, রাষ্ট্রনায়কোচিত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন বিশ্বনেতার মধ্যেও স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন,’— বলেন আমির হোসেন আমু। অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার দীর্ঘ জীবন ও সফলতা কামনা করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও ড. হাছান মাহমুদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির জাকির হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার, ন্যাপের ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন ওয়েবিনারে।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন