বিজ্ঞাপন

বেগমগঞ্জের ওই নারীর ভিডিও অপসারণ, নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ

October 5, 2020 | 5:29 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ওই নারী ও তার পরিবারের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সরিয়ে ফেলতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই ভিডিওটি সিডি বা পেনড্রাইভে কপি করে আদালতকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৫ অক্টোবর) বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

এসব নির্দেশনার পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার নারীর বক্তব্য নিতে বলা হয়েছে। বক্তব্য নিয়ে ওই ঘটনায় পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না— তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত। কমিটিতে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষকে তা অনুসন্ধান করে ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

‘শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় বেগমগঞ্জের গৃহবধূকে শ্লীলতাহানী’

এছাড়া নিপীড়নের ওই ঘটনায় দায়ের করা ফৌজদারি মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে ২৮ অক্টোবর আদালতকে প্রতিবেদন দিতে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এসব নির্দেশনার পাশাপাশি আদালত রুলও জারি করেছেন। রুলে ওই নারীকে রক্ষায় এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অবহেলার কারণে বেগমগঞ্জের ওসি ও বেগমগঞ্জ থানার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও বেগমগঞ্জ  উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সোমবার সকালে বেগমগঞ্জের ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাদের সঙ্গে সমর্থন দিয়ে আদালতে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। পরে আদালত এ বিষয় শুনানি ও পরবর্তী আদেশের জন্য দুপুর আড়াইটায় সময় ঠিক করে দেন

এরপর দুপুর আড়াইটায় ফের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতের কাছে নির্দেশনা চেয়ে বলেন, এ ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবেও দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও বিদেশেও মানুষ দেখতে পেয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ পদক্ষেপ নিতে কেন বিলম্ব করেছে, সে বিষয়ে নির্দেশনা চাচ্ছি।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আদালতকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা কেবল নোয়াখালী নয়, সারাদেশেই ঘটছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব হচ্ছে। কিন্তু কোথাও কোনো প্রতিকার বা সমাধান হচ্ছে না।

আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনা মানবতার ওপর জঘন্যতম অপরাধ। আপনারা এটি ফলোআপে রাখেন।

বিজ্ঞাপন

আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এ ঘটনায় আমাদের সমাজের ওপর প্রভাব পড়েছে। জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদাহানি হয়েছে। এটি সামাজিক অবক্ষয় বলেও আদালতের কাছে নির্দেশনা প্রার্থনা করেন।

এছাড়াও এ ঘটনায় আদেশ প্রার্থনা করে আদালতে মতামত তুলে ধরেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান, জামিউল হক ফয়সাল, রাশিদা চৌধুরী নিলু, তানজীম আল ইসলামসহ অন্যরা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন