বিজ্ঞাপন

ভিডিও ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে— দাবি নিক্সন চৌধুরীর

October 13, 2020 | 9:35 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন। ওই ভিডিও’তে দেখা যায়, চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) গালিগালাজ করছিলেন নিক্সন চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

‘শত্রুপক্ষ’ তাকে ফাঁসাতে এই ভিডিও বানিয়েছে দাবি করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ইউএনও’র সঙ্গে আমার এমন আচরণ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমি তাকে কোনো ধরনের গালাগালি করিনি। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি ভিডিও। আমার শত্রুপক্ষ ভয়েস এডিট করে এটা তৈরি করেছে। আপনারা ইউএনওকেই জিজ্ঞাসা করুন, আসলেই আমি তাকে এ ধরনের কিছু বলেছি কি না।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে ‘জেলা প্রশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও নিযা‍র্তনের বিরুদ্ধে’ এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন তিনি।

আরও পড়ুন- এমপি নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সিইসি

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন চৌধুরী বলেন, দুই-তিন ধরে ফেসবুক বা ইউটিউবে যে ভিডিও ছড়িয়েছে, সেটি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে চাই। আমার নির্বাচনি এলাকা তিনটি উপজেলা নিয়ে। জনগণ তাদের উন্নয়ন ও সেবা করার জন্য আমাকে দ্বিতীয়বারের মতো ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এই সাত বছরে আমি ও আমার নেতাকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে জনগণের সেবা করছি। আমার তিন উপজেলায় তিন জন ইউএনও আছেন। চরভদ্রাসন ও সদরপুরের ইউএনও নারী, ভাঙ্গার ইউএনও একজন পুরুষ। আমরা সবাই একসঙ্গে ভাই-বোনের মতো কাজ করি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আমাদের যে প্রার্থী ছিলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা তার জন্য কাজ করছিলেন। ওই দিন আমার একজন কর্মী মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল। ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এই বিষয়টি অবগত করার জন্য সকাল ১১টার দিকে ইউএনও’কে ফোন করেছিলাম। তার সঙ্গে শুধু সেটুকুই কথা হয়েছে। কিন্তু আমার ভয়েস সুপার এডিট করে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে ছাড়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও তো একজন বিসিএস কর্মকর্তা। তিনি তো আইন সম্পর্কে সবই জানেন। যদি আমার সঙ্গে তার যে কথোপকথন, সেটা যদি রেকর্ডিংই হয়, সেটি তো আইনের লঙ্ঘন। কারণ আমাদের হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে যে কারও বক্তব্য বা রেকর্ডিং করা যাবে না এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া যাবে না। আমার মনে হয় না যে উনি (ইউএনও) এত বোকা যে আইন লঙ্ঘন করে অডিও রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবেন।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিক্সন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার বিপক্ষে অনেক বড় বড় নেতারা কাজ করছেন। তারা একজোট হয়ে এই ষড়যন্ত্রটা করেছেন। আমি নালিশ করেছি, এটা কখনো নির্বাচনি আচরণবিধি হতে পারে না। আর নির্বাচনের পর যখন ফল জানানো হলো, এরপর বলা হয়েছে— আমি জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে কিছু বলেছি। সেটাও পুরোপুরি এডিট করা। এছাড়া নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে চার জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলো। কিন্তু নির্বাচনের দিন দেখা গেল, সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন ১৩ জন। ওই নির্বাচনে কিন্তু বিএনপি প্রার্থী কোথাও অভিযোগ করেননি যে তাকে কেউ মেরেছে বা ভয় দেখিয়েছে। এমনকি কোথাও একটা সংঘর্ষও হয়নি। তাহলে চার জন ম্যাজিস্ট্রেটের জায়গায় ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট কেন দেওয়া হলো? নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করার কোনো চিঠি আছে? আর যেখানেই নৌকার ভোট বেশি, সেখানেই সেদিন তাণ্ডব চালানো হয়েছে।

নিক্সন চৌধুরী আরও বলেন, সেদিন ম্যাজিস্ট্রেটরা যে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন, সে কারণে নেতাকর্মীরা সবাই উত্তেজিত ছিল। আমি প্রশাসনের অনুরোধে তাদের শান্ত করতে সেখানে গিয়েছিলাম। আর সেটা যদি আইন ভঙ্গ হয়, তাহলে পরের দিন সকালে ডিসির নির্দেশে ইউএনওকে আমার বাড়িতে পাঠানো হলো কেন? তিনি তো ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমার বাড়িতে আসতে পারেন না। তাহলে ইউএনও ও ডিসিও তো আইন ভঙ্গ করেছেন। আমি যদি আইন ভঙ্গ করে থাকি, তাহলে ডিসিও আইন ভঙ্গ করেছেন। ডিসিও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

এর আগে অবশ্য মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (নিক্সন চৌধুরী) যে আচরণ করেছেন, সেটি কাম্য নয়। তিনি নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। আইনে যেরকম বিধিবিধান আছে, তার ব্যাপারে আইনের বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। যদি মামলা করার বিধান থাকে, তাহলে মামলাই করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসজে/টিআর

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন