বিজ্ঞাপন

এইচএসসি মূল্যায়নে গুরুত্ব পাবে এসএসসির ফল

October 17, 2020 | 11:50 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার বিকল্প মূল্যায়নে জেএসসির থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে মাধ্যমিকের (এসএসসি) ফল। আর যারা এসএসসির পর বিভাগ পরিবর্তন করেছেন তাদের গড় রেজাল্ট তৈরি করতে কাজে লাগানো হবে আগের বছরগুলোর অভিজ্ঞতা— এমন পরিকল্পনা নিয়েই উচ্চ মাধ্যমিকে মূল্যায়নের চিন্তা করছে এ সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

বিজ্ঞাপন

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় নিয়মিত অনিয়মিত মিলিয়ে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে পরীক্ষার বিকল্প মূল্যায়ের উপায় খুঁজছে সরকার। এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে এ সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার বিকল্প মূল্যায়নে জেএসসি ও এসএসসির ফল মূল্যায়ন করে ফলাফল তৈরি করার কথা বলা হলেও অষ্টম শ্রেণির সমাপনীর চেয়ে গুরুত্ব পাবে এসএসসির ফল। সেই সঙ্গে যারা এসএসসির পর বিভাগ পরিবর্তন করেছেন তাদের গড় রেজাল্ট তৈরির সময় আগের বছরগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে।

এ প্রসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য সচিব ও আন্তবোর্ড সমন্বয়ক প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় মূলত একই বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। পরীক্ষার যে গড় ফল আসে তা সবসময় কাছাকাছি জায়গায় থাকে। এখন দেখা হচ্ছে, আগের বছরগুলোতে পরীক্ষার ফল কী রকম হয়েছে, সেখানে যারা বিভাগ পরিবর্তন করে এসেছিলো তাদের কী কী পরিবর্তন হয়েছে। এসব তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা একটি সমন্বয় করার একটা সূত্র খুঁজে পাব।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের পেশাগত জীবনের পথ অনেকটাই এই উচ্চ মাধ্যমিকে নির্ধারণ হয়। তাই এ পর্যায়ের পরীক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

এইচএসসি: ফল প্রস্তুতে একাদশ-দ্বাদশের মূল্যায়ন দাবি শিক্ষার্থীদের

অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার কথা আগে চিন্তা করতে হবে। সেদিক থেকে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ঠিক আছে। কিন্তু অন্যদিক থেকে চিন্তা করলে উচ্চ মাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এভাবে মূল্যায়ন না করে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে পরীক্ষার আয়োজন করা যেতো।

তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে একাধিক প্রশ্নপত্রের সেট তৈরি করে একেক জেলায় আলাদা আলাদা দিনে পরীক্ষা নেওয়া যেতো। তিনি আরো বলেন, যারা ফেল করেছে তাদের কী হবে, সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে বোর্ড সমন্বয় প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এইচএসসি পরীক্ষার যে বিকল্প মূল্যায়ন করা হচ্ছে তার সুফল পেতে পারে গেল বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করা শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, কে উত্তীর্ণ হবে আর কে হতে পারবে না, সেটা এই প্রক্রিয়ায় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। ফলে এই শিক্ষার্থীরা একটা সুবিধা পেয়েই যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আরো জানা গেছে মাধ্যমিক পর্যায়ে মূল্যায়নের বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করবে। সেক্ষেত্রে আগে ক্লাস টেস্টের ফল বিবেচনা করা হবে। অথবা বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ব্যক্তিগত পরিচিতি ও মূল্যায়ন থেকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন।

এদিকে, কোন প্রক্রিয়ায় এইচএসসিতে মূল্যায়ন হবে তার গাইডলাইন তৈরির কাজ চলছে। যা চলতি মাসের শেষের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দেবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যে কারণে গত ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের কথা থাকলে তা সম্ভব হয়নি। একইসঙ্গে স্থগিত করা হয় সব ধরনের পাবলিক পরীক্ষা। শিক্ষার্থীরা যাতে একবছর ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য পরীক্ষার বিকল্প মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ জেআর/টিসি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন