October 19, 2020 | 9:49 pm
মিজানুর রহমান
পেঁয়াজ বাংলাদেশের মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম প্রধান ফসল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক সংগৃহীত মাঠ তথ্য মোতাবেক ২০১৯-২০ সালে দেশে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিমাণ ২৫ লাখ, ৬৬ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। ৬২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কন্দ পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন এবং ৩৪০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ২৮৬৯.৬০ মেট্রিক টন। এরপরও ২০১৯-২০ সালে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১০ লাখ মেট্রিক টন। সে হিসেবে ধারণা করা হয় দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩৪ থেকে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ঘাটতি প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। পেঁয়াজ পচনশীল কৃষি পণ্য । কাজেই প্রতিবছর সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে শতকরা ২০-২৫ ভাগ পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায়। দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের ঘাটতি মোকাবিলা বা পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে নিম্নের কৌশলসমূহ গুরুত্ব সহকারে অবলম্বন করা যেতে পারে।
পেঁয়াজের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চারটি কৌশল গুরুত্ব সহকারে অবলম্বন করা হবে
পেঁয়াজ আবাদ এলাকা বৃদ্ধি করে
২০১৯-২০ সালে অর্জিত আবাদ ছিল ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯২৮ হেক্টর জমি। ১৪ অঞ্চলে পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধি করা হবে ১২ হাজার ১২ হেক্টর জমি। আবাদ বৃদ্ধির ফলে মোট আবাদ হবে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমি। বর্ধিত ১২ হাজার ১২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬২১ মেট্রিক টন।
অঞ্চলওয়ারী আবাদ বৃদ্ধির পরিকল্পনা
২০১৯-২০ সালে হেক্টর প্রতি পেঁয়াজের গড় ফলন ছিল ৭৯ মেট্রিক টনহেক্টর প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি করে
পেঁয়াজের কর্তনোত্তর ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধি করে
২০১৯-২০ সালে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ ছিল ৩৪০ হেক্টর। সারা দেশে সম্ভাবনাময় স্থান নির্ধারণ করে আরও মোট ৫০০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবদা বৃদ্ধি করা হবে। এতে ফলন বৃদ্ধি পাবে ৪ হাজার ২২০ মেট্রিক টন।
পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে
পেঁয়াজের কর্তনোত্তর ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে
পেঁয়াজের কর্তনোত্তর অপচয় কমানোর জন্য কৃষক সচেতনতা দরকার। এজন্য প্রগতিশীল পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকদের প্রশিক্ষিত করে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করে, পেঁয়াজ অপচয়ের কারণগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারনা প্রদান করে পেঁয়াজের কর্তনোত্তর ক্ষতি কমানো সম্ভব। প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা নিম্নরূপ—
প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা
অন্যান্য করণীয়
পেঁয়াজ উৎপাদনকারী চাষীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ঠ সংকট মোকাবিলায় শস্য ও ফসলখাতে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে কৃষি ঋণ প্রদান স্কিমের আওতায় পেঁয়াজ আবাদের জন্য ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। এ স্কিমের আওতায় দানাদার শস্য, ডালজাতীয় শস্য, তৈলজাতীয় ফসল, অর্থকরী ফসল, মসলাজাতীয় ফসল, শাকসবজীর চাষের জন্য ঋণ প্রদানে ব্যবস্থা রয়েছে। কৃষকগণ যাতে সহজ শর্তে এসব ঋণ পেতে পারে সেজন্য সদর দফতর ও জেলা-উপজেলা পর্য়ায় থেকে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে এতদসংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্য়ায়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকায় বিশেষায়িত কুল স্টোরেজ তৈরি
পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকগণ যাতে সহজে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন সেজন্য পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকায় বিশেষায়িত কুল স্টোরেজ স্থাপন করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হবে। এছাড়া কুল স্টোরেজ স্থাপনের জন্য জাতীয় ও স্থানীয় পর্য়ায়ের উদ্যোক্তাগণের সাথে আলোচনা সভা করে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।
পেঁয়াজ বীজ এর প্রয়োজন, বর্তমান মজুদ অতিরিক্ত পরিমান সরবরাহ নিশ্চিত করা
বাস্তবায়ন রোডম্যাপ
সারাবাংলা/এসবিডিই/আইই