বিজ্ঞাপন

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা মূল্যায়নে ১২৩ সূচকের তথ্য নেই

October 20, 2020 | 8:10 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট

ঢাকা: তথ্য-উপাত্ত সংকটের চ্যালেঞ্জে রয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। বর্তমানে এসডিজি মূল্যায়নে ১২৩ সূচকের কোনো তথ্য নেই। ২৪৪টি সূচকের মধ্যে মাত্র ১০৮টির তথ্য রয়েছে। গত ২-৩ বছরে ১৩টি সূচকের উপাত্ত যোগ হয়েছে তথ্য ভাণ্ডারে। ফলে এখন ১২১ সূচকের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট: বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২০-এ এই তথ্য সংকটের বিষয়টি উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সরকারি এই সংস্থাটি। এই প্রেক্ষপটে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস। তবে তথ্যের এই সংকট শিগগিরই পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনটি তৈরির দায়িত্ব প্রাপ্ত জিইডির সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এসডিজি মূল্যায়নে তথ্যপ্রাপ্তি এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এসডিজির ২৪৪টি সূচকের তথ্য সংগ্রহে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ১০৫টি উপাত্ত সরবরাহ করবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সরবরাহ করবে ৪২টি উপাত্ত। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৩৪টি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ২৮টি এবং অর্থ বিভাগ ২০টি সূচকের তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করবে।’

ড. আলম আরও বলেন, ‘তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেও রয়েছে। উপাত্তের দুষ্প্রাপ্যতার কারণে এসডিজির সব সূচকের জন্য একই ভিত্তিবছর নির্ধারণ করা যায়নি।’

এসডিজিতে তথ্য-উপাত্ত সংকটের কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এসডিজির তথ্য সংকট পূরণে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০২১ সালে জনশুমারিটি পরিচালনা করা হলে সেখান থেকে অনেক তথ্য আসবে। এসডিজির প্রায় ২৯টি নির্দেশকের তথ্য পাওয়া যাবে। তাছাড়া ইতো মধ্যেই প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি  বিবিএসের যেসব তথ্য রয়েছে সেগুলোর জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন জরিপ পরিচালনা করা হচ্ছে। এভাবেই তথ্য-উপাত্তের সংকট পূরণ হবে।’

বিজ্ঞাপন

জিইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিবিএস অর্থনীতির অনেকগুলো বিষয়ে উপাত্ত প্রস্তুত করে না। ফলে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনাসমূহ প্রণয়ন ও এসডিজির অনেক সূচকের জন্য প্রয়োজনীয় উপাত্ত মিলছে না। সাধারণত বিবিএস অথবা অন্যান্য সরকারি সংস্থা নির্দিষ্ট সময় অন্তর জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে বেশিরভাগ উপাত্ত প্রস্তুত করে। সচরাচর ৫ বছর অন্তর খানা আয়-ব্যয় জরিপ (হায়েস) ও তিন বছর পর পর বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা পরিচালনা করে। এছাড়া প্রান্তিক ভিত্তিতে শ্রমশক্তি জরিপের ফল পকাশ করে। ঘনঘন জরিপ পরিচালনা ও বহুমাত্রিক উপাত্ত যেমন- ভৌগলিক অবস্থান, জেন্ডার, বয়সভিত্তিক, ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠী ও কর্মসংস্থানের অবস্থা সংক্রান্ত উপাত্তের অভাব রয়েছে। এগুলো প্রস্তুত করতে বাড়তি অর্থ, জনবল, বিভিন্ন লজিস্টিক এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ২০ অক্টোবরকে বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সেসময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রতি পাঁচ বছর পর পর জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলো এ দিবস পালন করবে। সে অনুযাযী ‘বিশ্বায়নে নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান’ স্লোগানকে সামনে রেখে এবার বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)  বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম কর্মসূচি হলো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন