বিজ্ঞাপন

খুচরা বাজারে ৫০ টাকার কমে আলু মিলছে না!

October 22, 2020 | 1:32 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলুর মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও কোথাও এই দামে আলু মিলছে না। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে আগের মতোই প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিল এজিবি কলোনী কাঁচাবাজার, আরামবাগ কাঁচাবাজার, খিলগাও কমলাপুরসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে মতিঝিল এজিবি কলোনী কাঁচাবাজারের আলু বিক্রেতা অলি মিয়া বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে ৪০ টাকার বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচ, আবার প্রতিবস্তা তিন-চার কেজি আলু পঁচা থাকে। ফলে ৫০ টাকা বিক্রি করলেও খুব বেশি লাভ হয় না। তারপরেও ক্রেতারা চায় তাই আলু রাখি।

সরকার খুচরা বাজারে আলুর দাম ৩৫ টাকা এবং পাইকারি বাজারে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে জানালে তিনি বলেন, ‘এইসব বলে লাভ নাই। যদি তাই হয়, পাইকারি বাজার থেকে কেন আমাদের ৪০ টাকা করে আলু কিনতে হয়? সরকার আমাদের ২৫ টাকা ধরে আলু দিক আমরা ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করবো।’

বিজ্ঞাপন

একই কথা বলেছেন খিলগাঁও বাজারের আলু বিক্রেতা জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘৫০ টাকার নীচে আলু বিক্রি করার কোনো উপায় নেই। কারণ আমাদের ৪০-৪১ টাকায় কিনতে হয়। তারসঙ্গে পরিবহন খরচ যোগ করলে দাম আরও বেড়ে যায় ফলে ৫০ টাকার নীচে আলু বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে।’

অন্যদিকে রাজধানীর আরামবাগ কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা জাফর আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম ছিল আলুর। কিন্তু বর্তমানে এখানে শকুনের চোখ পড়েছে। ফলে এক মাসের মধ্যে ২০ টাকার আলু ৬০ টাকা হয়ে গেছে। এইসব দেখার কেউ নেই। কারণ সরকারও এখন জনগণ বান্ধব না হয়ে ব্যবসায়ী বান্ধব হয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘এক মাস ধরে আলু কেনা প্রায় ছেঁড়ে দিয়েছি। আজ অনেকটা বিপদে পড়ে আলু কিনালাম।‘ বিপদে পড়ে আলু কেনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৭০ টাকা দিয়ে এক কেজি করলা কিনলাম। কররা কিনার পর মনে হলো বাসায় আলু নেই। আর আলু ছাড়া করলা খাওয়া যায় না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে ৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি আলু কিনলাম।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নিয়ে আলুর দাম বাড়িয়ে পুনঃনির্ধারণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা, পাইকারিতে ৩০ টাকা এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৭ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এর আগে গত ১৪ অক্টোবর প্রথমবারের মতো খুচরা, পাইকারি ও হিমাগার— তিন পর্যায়ে আলুর দাম বেঁধে দেয় সরকার। কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে বরা হয়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৩০ টাকার বেশি দরে আলু বিক্রি করা যাবে না। আর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম সর্বোচ্চ ২৫ টাকা, হিমাগারে সেটি ২৩ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। এদিকে আলুর দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় টিসিবির ট্রাকে ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতেও বাজারে দাম কমছে না।’

উল্লেখ্য, চলতি বছর দেশে এক কোটি ৯ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়। প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ হয়েছে ৮ টাকা ৪০ পয়সা। অন্যদিকে, দেশে বছরে আলুর চাহিদা রয়েছে ৭৭ লাখ টন। সে হিসাবে দেশে প্রায় ৩০ লাখ টন আলু উদ্ধৃত্ত থাকার কথা। তারপরেও সারাদেশে আলুর দাম বেড়ে গেছে।

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন