বিজ্ঞাপন

‘পাওনা টাকা চাওয়ায় খুন, পরে লাশ গুমের চেষ্টা’

October 24, 2020 | 5:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে বিকাশ এজেন্ট নৃশংসভাবে খুনের ১০ দিনের মাথায় হত্যার নেপথ্যের রহস্য উদঘাটন করে একজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি জানিয়েছে, পাওনা টাকা চাওয়ায় তার ব্যবসায়ী বন্ধু কর্মচারীকে নিয়ে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়। পরে ওই ব্যবসায়ী বন্ধু পালিয়ে গিয়ে অপহরণ নাটক সাজায়।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ ‍পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।

চট্টগ্রামে বিকাশ এজেন্টের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

গ্রেফতার আব্দুর রহমান (৪০) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার গোলাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার নেভি ওয়েলফেয়ার মার্কেটের দোতলায় আব্দুর রহমানের রাইড এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স হাওলাদার বিল্ডার্স নামে দুটি দোকান আছে বলে সিআইডি জানিয়েছে। তার বাসা বন্দরটিলা এলাকায়।

বিজ্ঞাপন

গত ১৫ অক্টোবর সকালে নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকায় আলিফ গলি থেকে বিজয় কুমার বিশ্বাস (৩২) নামে এক বিকাশ এজেন্টের লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত বিজয় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মৃত সন্তোষ কুমার দাশের ছেলে। সিআইডি জানিয়েছে, নগরীর নেভী ওয়েলফেয়ার মার্কেটের নিচতলায় চাঁদনী এন্টারপ্রাইজ এন্ড গিফট শপ ও বিকাশ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান আছে বিজয়ের।

লাশ উদ্ধারের পর বিজয়ের বড় ভাই সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে নগরীর পাহাড়তলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২০ অক্টোবর মামলাটির তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। এর আগে লাশ উদ্ধারের সময় সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছিল।

পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ সারাবাংলাকে জানান, মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডির পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে। তদন্তে একই মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের পুরো ঘটনা উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আব্দুর রহমান ও বিজয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। এর সুবাদে আনুমানিক ৮-৯ মাস আগে বিজয়ের কাছ থেকে আব্দুর রহমান দেড় লাখ টাকা সুদে ঋণ নেন। কিন্তু আব্দুর রহমান সুদ-আসল কিছুই পরিশোধ করছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের আগে বিজয় টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আব্দুর রহমানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এতে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে আব্দুর রহমান তার কর্মচারি নাছির উদ্দিনকে নিয়ে বিজয়কে খুনের পরিকল্পনা করেন। আব্দুর রহমান ১৪ অক্টোবর গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর নাছিরসহ মিলে লাশ গুমের উদ্দেশে বস্তায় ভরে পেপার ও ককশিট দিয়ে মুড়িয়ে প্রথমে রিকশা এবং পরে সিএনজি অটোরিকশায় করে ফেলে দিয়ে আসে সড়কে।’

সিআইডি কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ জানান, হত্যাকাণ্ডের পর আব্দুর রহমান ও নাছির দু’জনই পালিয়ে যান। আব্দুর রহমান নীলফামারির সৈয়দপুরে আত্মগোপনে থেকে অপহরণ নাটক সাজান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নিজের এবং নিহত বিজয়ের মোবাইল ফোন সিমসহ নষ্ট করে ফেলে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শনাক্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার কাছে আরও কয়েকজন টাকা পান। তাদের বিষয়ে ফয়সালা করার জন্য চট্টগ্রামে আসার পর আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।’

পলাতক নাছির উদ্দিনকেও (২৩) গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ খালেদ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন