বিজ্ঞাপন

ন্যু ক্যাম্পে বিধ্বস্ত বার্সেলোনা

October 24, 2020 | 9:58 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

এবারের ‘এল ক্লাসিকো’র আগে স্বাভাবিক ঝাঁঝটা পাওয়া যাচ্ছিল না। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ দুই দলেরই যে আগের মতো ধার আর নেই। গত মৌসুম থেকেই বার্সাকে ‘মাঝারি মানের দল’ মনে করা হচ্ছে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো চলে যাওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদও ‘অচেনা’। তবে ‘এল ক্লাসিকো’র মাঠের লড়াই কিন্তু ঠিকই জমল। আর তাতে চওড়া হাসি হেসেছে জিনেদিন জিদানের রিয়াল। বার্সেলোনার ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে আজ ৩-১ গোলে জিতেছে মাদ্রিদের ক্লাবটি।

বিজ্ঞাপন

আগের দুই ম্যাচে জয় পায়নি রিয়াল। তার মধ্যে কদিন আগে শাখতার দোনেৎস্কোর মতো কম শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে জিদানের ছাত্ররা। ওই ম্যাচে একটা সময় রিয়াল পিছিয়ে ছিল ৩-০ ব্যবধানে। পরের ম্যাচেই মাদ্রিদের ক্লাবটি বার্সার মাঠে এসে রাজত্ব করবে কে ভেবেছিল! আজ রিয়ালের শুরুটা হলো দারুণ।

ভালভারদের গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় জিদানের দল। অবশ্য এতে বার্সার ভণ্ডুর রক্ষণের ‘অবদান’ও কম নয়। তেমন কোনো বাঁধা ছাড়াই বক্সের কাছে বল নিয়ে জান করিম বেনজেমা। সামনে থাকা ভালভারদেকে তাড়া করতে করতে থেমে গেলেন সার্জিও বুসকেট। এই সুযোগেই ভালভারদের উদ্দেশ্যে দারুণ এক পাস বাড়ান বেনজেমা। খানিক এগিয়ে দারুণ এক শটে রিয়ালকে গোল এনে দেন উরুগুয়ান তরুণ, ১-০।

বিজ্ঞাপন

অবশ্য জিদানের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন টিনেজার নিয়ে আজ সেরা একাদশ সাজিয়েছিলেন বার্সা কোচ রোনাল্ড কোম্যান। তাদেরই একজন আনসু ফাতি ম্যাচের অষ্টম মিনিটে সমতায় ফেরান বার্সাকে।

মেসির মাপা এক চিপ খুঁজে নেয় বাঁ-পাশে থাকা জর্দি আলবাকে। স্প্যানিশ তারকা বাইলাইনের কাছ থেকে কাটব্যাক করেন ফাতিকে। ১৭ বছর বয়সী তরুণ প্রথম ‘এল ক্লাসিকো’ খেলতে নেমে প্রথম গোলটি তুলে নেন। প্রথমার্ধে আরও একবার করে এগিয়ে যাওয়া সুযোগ পেয়েছিল দুই দলই।

২৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বার্সা। সার্জিও রামোসকে দারুণ এক টার্নে বোকা বানিয়ে দূরের পোস্টে শট নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা ঠেকিয়ে সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে দেননি রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।

বিজ্ঞাপন

মেসি শুধু এই যাত্রায় নয়, ব্যর্থ ছিলেন পুরো ম্যাচেই। দু’একবার ঝলক দেখিয়েছিলেন বটে, কিন্তু বার্সা ভক্তদের মন ভরাতে পারেননি। বার্সার আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দিতে পারেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

২৪ মিনিটে প্রতিআক্রামণে গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল রিয়াল। কিন্তু গোলরক্ষক নেতোকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি রিয়ালের করিম বেনজেমা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলের সমতায়।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে গোল পেতে পারত বার্সা। মেসির পাস ধরে দারুণ একটা শট নিয়েছিলেন ফাতি। কিন্তু বল বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে। দুই মিনিট পর ফাতির ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কুতিনহো। রিয়াল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ৬৩ মিনিটে। সার্জিও রামোসের পেনাল্টি গোলে ব্যবধান ২-১ করে মাদ্রিদের ক্লাবটি।

বিজ্ঞাপন

এই পেনাল্টি নিয়ে অবশ্য বেশ বিতর্ক হচ্ছে। ফি-কিকের সময় ডি-বক্সে রামোসকে ফাউল করেন রার্সার লংলে। ভিএআরে দেখা যায়, লংলেকে প্রথমে ধাক্কা মেরেছেন রামোস। এরপর বার্সা ডিফেন্ডা রামোসের সার্জি ধরে টান দিলে পরে যান তিনি। মনে হচ্ছিল লংলের টানে পরেননি রামোস। তবু ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন রেফারি।

৮৫ মিনিটে বার্সাকে বাঁচান গোলরক্ষক নেতো। টনি ক্রুসের দারুণ এক শট ফিরিয়ে দেন তিনি। তবে সেই নেতোর ভুলেই তিন নম্বর গোলটা হজম করেছে বার্সা।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের আক্রমণ রুখতে এগিয়ে গিয়েছিলেন বার্সা গোলরক্ষক। ভিনিসিয়ুসের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল চলে যায় অরক্ষিত লুকা মডরিচের কাছে। ফাঁকায় বল পেয়ে বুদ্ধিদিপ্ত শটে গোল আদায় করে নেন মডরিচ। এরপর আর কিছুই করতে পারেনি বার্সা। যাতে শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের বড় হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় কাতালান ক্লাবটিকে।

এ নিয়ে লিগে টানা দুই ম্যাচ হরল বার্সা। পাঁচ ম্যাচের দুটিতে হার, একটিতে ড্র, দুটিতে জয় নিয়ে বার্সেলোনা নেমে গেছে পয়েন্ট টেবিলের ১২ নম্বরে। অন্য দিকে ছয় ম্যাচে চতুর্থ জয় পাওয়া রিয়াল মাদ্রিদ টেবিলের শীর্ষে। ছয় ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ১৩। পাঁচ ম্যাচে বার্সার পয়েন্ট ৭।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন