বিজ্ঞাপন

ফুরিয়ে যাননি রুবেল, তাসকিন

October 26, 2020 | 8:42 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

অনেকেই হয়তো ধরে নিয়েছিলেন তাদের দিন শেষ। আর কোনোদিনই স্বরুপে উদ্ভাসিত হবেন না রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। সুইং ভেলকিতে অহরহ শত্রুর বেলস উড়িয়ে দিতে পারবেন না রুবেল, আর গতির ঝড় তুলে প্রতিপক্ষের স্ট্যাম্প উপড়ে দিতেও দেখা যাবে না তাসকিনকে। কিন্তু কী অবিশ্বাস্য! সদ্য সমাপ্ত বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে এই দুই টাইগার ছন্দে ফিরলেন প্রবল বিক্রমে। পারফর্ম করে জানিয়ে দিলেন, তারা ফুরিয়ে যাননি।

বিজ্ঞাপন

৫ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা বোলার হয়েছেন রুবেল। তাসকিন আহমেদ অবশ্য এতগুলো উইকেট পাননি। সমান সংখ্যক ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ৭টি। কিন্তু তবুও টিম ম্যানেজমেন্ট তো বটেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতির হৃদয় জিতেছেন লাল সবুজের এই গতি তারকা। সেটা কিভাবে? অবশ্যই দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে।

শুনতে খারাপ শোনালেও এই টুর্নামেন্টের আগেও জাতীয় দলের নির্বাচকমন্ডলীর সদস্য ও টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে ব্রাত্য ছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালের স্বাদ পাইয়ে দেওয়া পেসার রুবেল হোসেন আর অভিষেকে বল হাতে চমকে দেওয়া তাসকিন। দুজনের কেউই যেন জাতীয় দলের রাডারে ধরা পড়তেন না!

বিজ্ঞাপন

তাসকিন না হয় ইনজুরড ছিলেন। কিন্ত রুবেল কেন হুট করেই অপাংতেয় হয়ে উঠলেন? ধরেই নিচ্ছি সাদা পোষাকে তার গড় (৭৬.৭৭) বেশি তাই এই ফরম্যাটে খেলানো অনুচিত। কিন্তু ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে তার সমস্যাটা কোথায় ছিল? যে মাশরাফির চোখে সব সময়ের সেরা পেসার তিনি, সেই তাকেই কেন লাল সবুজের জার্সিতে অনিয়মিত হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিল?

টিম বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ তাকে দেখা গিয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে। এরপর ঘরের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ে এল বটে কিন্তু রুবেল থাকলেন উপেক্ষিত। ডান হাতি এই পেসার সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে ফিরে, জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কায়। আর টি-টোয়েন্টি ২০১৮ সালে উইন্ডিজ সফরে।

পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট কতটা অনিয়মিত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বিষয়টি তার জন্য চরম অবমাননাকর হয়ে উঠেছিল। তখনই পণ করলেন দেখিয়ে দিতে হবে। এবং সেটা করে দেখিয়েছেনও। অন্যকোনোভাবে নয়, পারফর্ম করে।

বিজ্ঞাপন

দলের প্রয়োজনে যখন জ্বলে উঠা দরকার, সেই সময়ে উঠেছেনও। বিধ্বংসী বলে তছনছ করে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপ। তাতে কাজও হয়েছে বিস্তর। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ হেসেছেন শিরোপাজয়ের গর্বিত হাসি। মূলত দিনের পর দিন জাতীয় দলে উপেক্ষিত থাকাটাই টুর্নামেন্টে তাকে দারুণ কিছু করে দেখানোর জ্বালানি যুগিয়েছে।

সারাবাংলার সঙ্গে একান্তে আলাপকালে সেকথাই জানাচ্ছিলেন অভিজ্ঞ এই টাইগার পেসার । ‘অবশ্যই নির্বাচকদের দেখিয়ে দেওয়ার ব্যাপার ছিল যে আমি এখনো ফুরিয়ে যাইনি। আপনারা দেখেছেন গত দুই তিন বছরে আমি জাতীয় দলে কতটা অনিয়মিত। ম্যাচ পাইনি ঠিকমতো। দলে ডাক পেলেও ডাগআউটে বসে থাকতে হয়েছে। তখনই জিদ কাজ করেছে, আমাকে দেখিয়ে দিতে হবে। কিন্তু করোনার কারণে সুযোগ পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট’স কাপে সুযোগ পেলাম। সুযোগটা কাজে লাগালাম। আশা করি নির্বাচকেরা আমার এই পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করবেন। আমি পারফর্মার, পারফর্ম করাটাই আমার কাজ। সবার মনে রাখা উচিৎ মানুষের সব সময় একরকম যায় না।’

আর তাসকিন সম্পর্কে যা বলার তা গতকাল রাতে টুর্নামেন্টের ফাইনাল শেষ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই বলে দিয়েছেন। তার ছান্দসিক প্রত্যাবর্তনে মুগ্ধ ও অভিভূত বিসিবি বস। অবশ্য রুবেল হোসেনও তার প্রশংসা বঞ্চিত হননি।

বিজ্ঞাপন

‘সবচেয়ে ভালো লেগেছে তাসকিন যেভাবে ফিরেছে। একটা সময় ভেবেছিলাম ও হয়তো আর জাতীয় দলে ফিরবেই না। কিন্তু ও খুব ভালো করেছে। রুবেল যাকে নিয়ে আমরা কী করব কী করব ভাবছি। কতদিন খেলবে কি খেলবে না করছি। রুবেল দারুণ বল করেছে।’

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন