বিজ্ঞাপন

আদালতে বাকবিতণ্ডা,ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি

March 14, 2018 | 12:42 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বক্তব্য শুনতে আদালতকে এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করায় প্রধান বিচারপতি তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (১৪ মার্চ) খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা কোর্টকে থ্রেট (হুমকি) দিচ্ছেন। এটা বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমরা পাবলিক পারসেপশনের দিকে তাকাই না বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

সকালে শুনানির শুরুতেই দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, হাইকোর্ট ৪ টি কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। আমরা এখনও সে আদেশের সার্টিফায়েড কপি পাইনি। আদেশের কপি পেলে লিভ টু আপিল করবো।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, সিপি ফাইল করে আসেন।

বিজ্ঞাপন

তখন দুদকের আইনজীবী বলেন, সিপি ফাইল করতে রোববার-সোমবার পর্যন্ত আমাদেরকে সময় দেয়া হোক। এ সময় পর্যন্ত জামিন স্থগিত রাখা হোক।

এরপর আদালত বলেন, ঠিক আছে সিপি ফাইল করে আসেন রোববারের মধ্যে। এ পর্যন্ত জামিন স্থগিত থাকবে।

তখন খালেদার আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের বক্তব্য আগে শুনেন। আমাদের বক্তব্য তো শুনেন নাই। আমাদের বক্তব্য না শুনে এভাবে আদেশ দিতে পারেন না।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, শুনতে হবে না। রোববার পর্যন্ত তো স্থগিত দিয়েছি। ওই দিন আসেন তখন শুনবো।

বিজ্ঞাপন

জয়নুল আবেদীন বলেন, আপনি যে এক তরফাভাবে শুনানি করে আদেশ দিলেন এতে আদালতের প্রতি পাবলিক পারসেপশন খারাপ হবে।

জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, কোর্ট পাবলিক পারসেপশনের দিকে তাকায় না। কোর্টেকে কোর্টের মত চলতে দিন।

এসময় আইনজীবী জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, না শুনেই তো আদেশ দিলেন।

আদালত বলেন,আমরা অন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়েছি। আমাদের শোনার দরকার নেই।

জয়নুল আবেদীন বলেন, এই মামলায় চেম্বার আদালত তো স্ট্রে (স্থগিত) দেয়নি। এই সময়ের মধ্যে আসামিও বের হবে না। তাই স্ট্রে (স্থগিত) প্রয়োজন নেই।

এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা তো শুনানির সুযোগ পেলাম না।

এ সময় আদালত কার‌্য তালিকার তিন নম্বর আইটেম শুনানি শুরু করেন।

তখন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে বেশ দাঁড়িয়ে থাকেন।

কিছু সময় পর প্রধান বিচারপতি তাদের উদ্দেশ্য করেন বলেন, আপনারা সবাই দাড়িঁয়ে আছেন কেন। এতে আদালতের সৌন্দয্য নষ্ট হয়।

তখনই খালেদা জিয়ার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমদ দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, আপনি তো না শুনেই একতরফা আদেশ দিলেন। আমাদের কথা শুনতে হবে। কেন শুনবেন না।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কার কথা শুনবো আর কার কথা শুনবো না তা কি আপনার কাছে শুনতে হবে।

গিয়াস উদ্দিন আবারও উচ্চ স্বরে বলেন, আপনাকে শুনতে হবে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন,আপনি কি আদালতকে থ্রেট (হুমকি) দিচ্ছেন? বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে।

আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, শুনে তারপর আদেশ দিতে হবে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন,থ্রেট দিবেন না।

এ সময় আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উচ্চ স্বরে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আপনি তো কোর্টকে শেষ করে দিলেন। তখন অ্যাটর্নি কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়েই ছিলেন। তখন একদল আইনজীবী দালাল দালাল বলে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিএম

আরও পড়ুন

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন