বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় ঢেউ নয়, তবে বিপদ এখনো পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান

November 18, 2020 | 6:58 pm

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) শনাক্ত হওয়ার পর কখনো সংক্রমণ বেড়েছে, আবার কখনো কমেছে। তবে গত কিছুদিন হলো দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত দুই মাসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এই সময়ের মধ্যে সবশেষ এক সপ্তাহে দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণ করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও আগের কয়েক সপ্তাহের চেয়ে বেশি।

বিজ্ঞাপন

তবে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়লেও এটাকেই করোনা সংক্রমণের ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ বা ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলে মানতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশে এখনো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে, যেটিকে চলমান বিপৎসীমা বলা যেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ অবশ্যই বিপৎসীমা ছাড়াতে পারে।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রথম মৃত্যুবরণের ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। প্রথম দিকে দেশে মৃত্যুহার বেশি থাকলেও সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকলে এই হার কমে আসে। এর মধ্যে এপ্রিল পেরিয়ে মে মাস থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকে দ্রুত গতিতে। জুন মাসে দেশে সর্বোচ্চসংখ্যক ব্যক্তির মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তবে জুলাই মাস থেকে এই সংখ্যা কিছুটা কমে আসতে থাকে। ওই সময়ের পর থেকে করোনা সংক্রমণ ও করোনায় মৃত্যুর হার প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে।

সবশেষ গত ১৪ অক্টোবর থেকে ১৭ নভেম্বর একমাস তিন দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সময়ের মধ্যে সবশেষ এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাতে করে এই সপ্তাহে সংক্রমণ শনাক্তও হয়েছে আগের তিন সপ্তাহের চেয়ে বেশি, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এ সপ্তাহেই বেশি।

বিজ্ঞাপন

১৪ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে দেশে ৯৪ হাজার ২৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় ১০ হাজার ৩১১ জনের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যায়। এই সময়ে দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১২২ জন। এই সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

২১ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে দেশে ৯১ হাজার ৬৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কোভিড সংক্রমণ পাওয়া যায় ১০ হাজার জনের মাঝে। এই সময়ে দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৩৯ জন। এই সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক ৯১ শতাংশ।

২৮ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে ৯১ হাজার ৭৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১১ হাজার ৬১ জনের মধ্যে। এই সময়ে দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৪৫ জন। এই সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের হার ছিল আগের দুই সপ্তাহের চেয়ে বেশি— ১২ দশমিক ০৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

৪ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে ৯৪ হাজার ৪০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৭৯৩ জনের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া যায়। এই সময়ে ১২৫ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মারা যান। এই সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের হার আগের সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬২ শতাংশে।

সবশেষ ১১ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশে এক লাখ ২ হাজার ৭৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৬৪ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া যায়। এই সময়ে ১৪৬ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মারা যান। এই সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের হার ছিল আগের চার সপ্তাহের চেয়ে বেশি— ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৯ জন। গত ২১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে দেশে একদিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এত বেশি মানুষ মারা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব বলছে, ওই দিনের হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে ৪০ জন মারা গিয়েছিলেন।

একই সঙ্গে এই ২৪ ঘণ্টা সময়ে মোট ২ হাজার ২১২ জন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫৮১ জন। এরপর গত আড়াই মাসে একদিনে এত বেশি করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি দেশে শনাক্ত হননি।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে কোনো ঢেউ এসেছে কি না বা ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আসলে তেমন ভাবার দরকার নেই। বাস্তবতা হচ্ছে আমরা বিপৎসীমার মধ্যেই আছি। আমাদের এখানে সংক্রম স্থিতিশীল একটি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিন বাদে সংক্রমণের হার কখনোই ১০ শতাংশের নিচে আসেনি। গত কিছুদিনের তথ্যও যদি হিসাব করা হয়, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার কিন্তু ১০ থেকে ১১ বা ১২ শতাংশের কাছাকাছিই আছে। এটা যদি চলমান চিত্র হয়, তাহলে ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বা ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ এলে এই হার দেড়গুণ পর্যন্ত হয়ে যাবে। অর্থাৎ সংক্রমণের হার তখন ১০-১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ পেরিয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতি যদি সপ্তাহ দুয়েক বজায় থাকে, তখন দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু এখনো আমরা সে পরিস্থিতিতে যাইনি।

তবে দ্বিতীয় ঢেউ না এলেও স্থিতিশীল পরিস্থিতিটিকেই যথেষ্ট বিপদজনক বলে মনে করছেন ডা. মোশতাক। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় ঢেউ না বলে বিপৎসীমা বাড়ছে বলাই শ্রেয়। জুন-জুলাইয়ের পর সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমলেও অবস্থা যে খুব বেশি ভালো হয়ে গেছে, তেমনটা বলার সুযোগ নেই। কারণ আমাদের এখানে মাসখানেক হলো সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট অবস্থানের আশপাশেই রয়েছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনোভাবেই এই শতাংশের হার বেড়ে না যায়।

কোভিড প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও ভাইরোলজিস্ট ডা. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে— এটা সত্য। কিন্তু এটাকে দ্বিতীয় ওয়েভ বা ঢেউয়ের সঙ্গে তুলনা করা আসলে ঠিক হবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী যদি বলা হয়, তবে এই মাত্রা পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরেই বলতে হবে। আমাদের কিন্তু এখনো একবারও সেই মাত্রায় নেমে আসেনি। তাই দ্বিতীয় ওয়েভ বলতে যা বোঝানো হচ্ছে, তেমন কিছু দেখা যাবে কি না, তা হয়তো দিনগুলোই বলে দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে সংক্রমণের চিত্র, তাতে কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়া ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নমুনা পরীক্ষাও কিন্তু বাড়ছে। এ কারণেও সংক্রমণ বাড়তে পারে। কিন্তু শতাংশ হিসাব করলে তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে না। তবে নমুনা পরীক্ষায় উৎসাহিত করতে হবে মানুষকে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ নিয়ে যেতে হবে। কারণ, অনেকেই এখন নমুনা পরীক্ষা নিয়ে অনীহা প্রকাশ করছেন। সেইসঙ্গে আমাদের মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও আগের চেয়ে এখনও আমাদের শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা একটা স্টেডি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক এই উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। প্রথম দিকে মানুষজন যখন বাসায় ছিল, তখন স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা হলেও মানা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত নজরদারি রাখা গেছে। মানুষজন নমুনা পরীক্ষা করিয়েছে সময়মতো। তবে বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি কিন্তু তেমন মানা হচ্ছে না। আমরা লকডাউন ও রোগী শনাক্ত— কোনোটাই করতে পারছি না। সব মিলিয়ে মৃত্যুর হার বাড়ছে। অথচ আমরা যদি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নির্বাচন করে নমুনা পরীক্ষা ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে পারতাম, তাহলে সেটি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করত। আর তাই সংখ্যা দিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা না করাই শ্রেয়।

একই ধারণা পোষণ করছেন বিএসএমএমইউ মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহও। তিনি বলেন, ওয়েভ নিয়ে চিন্তা করার আগেও জরুরি আমাদের সবার সচেতন হওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে গা ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে। অনেকেই মনে করেন করোনা নেই। নিম্ন আয়ের মানুষ মনে করে এটি বড়লোকের রোগ। এসব বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা, আর এ কারণে মানুষের মধ্যে গা ছাড়া ভাব রয়ে গেছে। সেজন্য এখন আবার সংক্রমণ বাড়ছে। সামনে শীত, সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। কারণ করোনা সংক্রমণ যখন বিভিন্ন দেশে ছড়িয়েছে, তখন সেসব দেশে শীতকাল ছিল। এখনো অনেক দেশে শীত রয়েছে, তার ওপর লকডাউন চলছে। আমাদের সচেতন থাকতেই হবে, জনগণকে সচেতন করে তুলতেই হবে।

সামনে শীতকাল। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের সংক্রমন নিয়ে একটু বেশি সচেতন থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমরা পরিসংখ্যান যা দেখছি, তাতে আসলে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো কিছু নেই। শীতকালে এমনিতেই আমাদের দেশের মানুষজন শ্বাসকষ্টজনিত কিছু রোগে ভুগে থাকেন। এর মধ্যে ডেঙ্গুতেও ইদানীং অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আমাদের আসলে কোনোভাবেই রিল্যাক্স থাকার সুযোগ নেই। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জ্বর, সর্দি, কাঁশি বা যেকোনো শারীরিক অসুস্থতার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে নমুনা পরীক্ষায় অনীহার কারণে অধিকাংশ সময়ে উপসর্গহীন রোগীদের প্রথমদিকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। যখন শনাক্ত করা হচ্ছে, তখন হয়তো হাসপাতালে নিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই আবার দেখা যাচ্ছে, কোমর্বিডিটি আছে এমন রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরে যখন হাসপাতালে আনছেন, তখন আর কিছুই করার থাকছে না। এসব কারণেও মৃত্যু হার বাড়ছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে

চলমান পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনার বদলে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণের প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একদিকে করোনার ভ্যাকসিনও আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে ভ্যাকসিন না পেলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব— সে বিষয়টিই জোর দিয়ে বলছেন তারা। সেক্ষেত্রে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি কার্যকরভাবে প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সম্ভব হলে এখনো এলাকাভিত্তিক আইসোলেশন বাস্তবায়নের কথাও বলছেন তারা।

ডা. আবদুল্লাহ বলেন, সরকার একটি উদ্যোগ নিয়েছে— ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’। দোকান মালিক সমিতি বলেছে— মাস্ক না থাকলে দোকানে ঢুকতেই দিবে না। তবে এসব যেন কাগজে-কলমে না থাকে, বাস্তবায়ন যেন থাকে। সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। সবাই মিলে জনগণকে সচেতন করে তুলতে পারলেই আমরা কেবল দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে পারব, সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারব।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক হাসপাতাল করোনার চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছে। এর কারণও আছে। রোগী কম থাকায় সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের অবকাঠামো আছে। যেকোনো সময় সংক্রমণ বাড়লে এসব হাসপাতাল ফের চালু করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এসব হাসপাতাল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চালু করা যাবে বলে তারা জানিয়েছেন।

ডা. মোশতাক বলেন, দেশের জনগণ এখন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না— এটি বিপদজনক হতে পারে। এ অবস্থায় আমাদের নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি সম্ভব হলে এলাকাভিত্তিক আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে হয়তো সংক্রমণের মাত্রা আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। তবে সংক্রমণের মাত্রা ৫ শতাংশের নিচে নামার পর তিন সপ্তাহের মতো সে সংখ্যায় স্থির না থাকলে নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই। সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগুলো নিয়ে ভাবা দরকার ও সচেতনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দরকার।

আইইডিসিআর পরিচালকও বলছেন, মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে এর কোনো বিকল্প নেই।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন