বিজ্ঞাপন

আমনের ‘ভালো ফলন’ আর ‘দামে’ কৃষক খুশি

November 21, 2020 | 10:12 am

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মাঠে মাঠে এখন আমন ধান ঘরে তোলার ধুম চলছে। সারাদেশে পুরোদমে চলছে আমন ধান কাটার কাজ। এরই মধ্যে ২০ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধানের উৎপাদনও হয়েছে এবার অন্যবারের চেয়ে বেশি। বন্যায় ধানের যে ক্ষতি হয়েছিল, ফলন ভালো হওয়ায় তা কাটিয়ে ওঠার প্রত্যাশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এবার ধানের দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। হাজার টাকা মণে এবার ধান বিক্রি হচ্ছে। বেশি ফলনের পাশাপাশি ধানের দাম পেয়ে কৃষকরা এবার অন্যবারের চেয়ে খুশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সারাদেশে এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছে। রংপুরসহ দুয়েকটি জায়গায় ফলন একটু কম হয়েছে। বন্যায় প্রায় ৫৪ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়েছিল। ফলন ভালো হওয়ায় আমরা সেই ক্ষতি এবার কাটিয়ে উঠতে পারব। আশা করি এবার অন্যবারের চেয়ে ফলন খুব একটা কম হবে না। হয়তো ধানের উৎপাদন এক বা দেড় লাখ টন কম হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বন্যার কারণে আমনের ফলন এবার কিছুটা কম হলেও আউশের ফলন আবার বেশি হয়েছিল। এবার বোরো আবাদে হাইব্রিড জাতের ধানকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। ফলে আমনে ধানের ফলন যতটুক কম হবে, আউশ ও বোরোতে তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের উত্তরে কৃষি সম্প্রসারণের ডিজি বলেন, ‘আমনে এবার আমরা বাম্পার ফলন বলছি না। এখন পর্যন্ত হেক্টরে ৩ টনের বেশি ফলন হলেও শেষ পর্যন্ত তা থাকবে না। কারণ হেক্টর প্রতি আমাদের লক্ষ্যমাত্রই ২ দশমিক ৭ টন। তবে এবার ফলন ভালো। আর কৃষকরাও খুশি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে এবার আমনের আবাদ হয়েছে ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ২৪৩ হেক্টর জমিতে। ক্ষয়ক্ষতি বাদে অর্জিত জমির পরিমাণ ৫৫ লাখ ৩৬ হাজার ৮১৩ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৯ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। সমপরিমাণ জমিতে ধানের উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার টন। প্রতি হেক্টর জমিতে ধানের উৎপাদন হয়েছে গড়ে ৩ দশমিক ১২ টন।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে সরেজমিন উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মাহফুজ হোসেন মিরদাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্যার কারণে আমনের যে ক্ষতি হয়েছিল, আশা করছি আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারব। এবার আমন মৌসুমে যে রকম প্রণোদনা ছিল, আগামী মৌসুমেও বিশেষ কিছু পদ্ধতি হাতে নেওয়া হবে। অধিক ফলন সম্পন্ন ধানের জাতের প্রদর্শনী ও বীজ সম্প্রসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাম্পার ফলন শব্দটি আমরা এখনও বলছি না। কারণ এখন পর্যন্ত খুবই অল্প জমির ধান কাটা হয়েছে। আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছি। ধান মাড়াই শেষেই প্রকৃত পক্ষে উৎপাদন কেমন হল তা বলা যাবে।’

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কৃষক মোস্তাফা সারাবাংলাকে বলেন, ‘পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধানের উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে। নতুন ধানের দামও রয়েছে ভালো। বাজারে হাজার টাকা মণে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত হয়তো এই দাম থাকবে না। সবার ধান উঠলে দাম হয়তো ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় নেমে যাবে।’

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষক হিমেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘ধানের উৎপাদন ভালোই হয়েছিল। তবে শেষের দিকে ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে ধানের দাম এবার ভালোই রয়েছে। এক হাজার টাকা মণে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কম রয়েছে।’

নরসিংদীর কৃষক শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাঠে এখন পুরোদমে ধান কাটা চলছে। এবার অমনের ফলন ভালোই হয়েছে। প্রতি মণ ধান (৪৮ কেজি) ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকের কাছ থেকেও প্রায় একই রকম তথ্য পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন