বিজ্ঞাপন

প্রতিবেশি দেশগুলোর কারণে এইচআইভির ঝুঁকিমুক্ত নয় বাংলাদেশ

November 28, 2020 | 11:59 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইডস/এসটিডি কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আক্তারুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারতের মিজোরাম, মনিপুর, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে এবং সেখানে এইচআইভি পজিটিভ রোগীও আছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে রোগী থাকার কারণে আমরা এখনও নিরাপদ নই।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৮ নভেম্বর) ‘এইচআইভি এইডস সম্পর্কে সমাজে বিদ্যমান কুসংস্কার, ভ্রান্তধারণা ও বৈষম্য দূরীকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন মো. আক্তারুজ্জামান।

বিশ্ব এইডস দিবসকে সামনে রেখে সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সভায় জানানো হয়, দেশে প্রথম এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মেলে ১৯৮৯ সালে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভির সংক্রমণ ০.০১ শতাংশের কম। এ সংখ্যাটি একেবারেই সামান্য। ২০১৯ সালে এ রোগে শনাক্ত হন ৯১৯ জন, আর মারা যান ১৭০ জন। অপরদিকে, ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দেশে এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত সাত হাজার ৩৭৪ জন শনাক্ত হন, যার মধ্যে ১ হাজার ২৪২ জন মারা গেছেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতের শিলং, মেঘালয় এলাকায় শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ এবং সমকামীদের মধ্যে এইচআইভির সংক্রমণ বেশি। মেঘালয় অঞ্চলের ৫ শতাংশ যৌনকর্মী এইচআইভিতে আক্রান্ত। মনিপুর, ত্রিপুরা অঞ্চলে শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে ৮ শতাংশ এইচআইভিতে আক্রান্ত। আর মিজোরাম, মিয়ানমার অঞ্চলে মাদকাসক্তদের মধ্যে ১৯ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও ভালো নয়। ওইসব দেশের সাথে আমাদের অবাধ যাতায়াত। যা দেশে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

‘দেশে এইডস আক্রান্তদের অর্ধেকই চিকিৎসার বাইরে’

দেশের আট বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি, রংপুর বিভাগে কম। ঢাকায় এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৫২২ জন। চট্টগ্রামে ২ হাজার ৮ জন, সিলেটে এক হাজার ২১৯ জন, খুলনায় ৬৬০ জন, রাজশাহীতে ১৯২ জন, বরিশালে ১৭৯ জন, ময়মনসিংহে ৮৬ জন, এবং রংপুর বিভাগে ৬৮ জন এইচআইভি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। ২৩টি জেলায় সংক্রমিত ব্যক্তি বেশি শনাক্ত হওয়ায় সরকার ওই এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১১টি সেবা সেন্টারে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তিদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে পজিটিভিটির হার বেশি উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত এক বছরে নারী যৌনকর্মী, পুরুষ যৌনকর্মী, শিরায় মাদক গ্রহণকারী এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভেতরে পরীক্ষা করে শতকরা এক শতাংশ পজিটিভ পাওয়া গেছে, যা কিনা বিগত কয়েক বছর আগেও অনেক বেশি ছিল। আবার এর মধ্যে শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে পজিটিভিটির হার বেশি, শতকরা ২৪ শতাংশ, আর প্রবাসী ও অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন ২০ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডাইরেক্টর টিবি-এল ও এএসপি অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, আজাদ আবুল কালামসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ‘এইডস আক্রান্তরা পাপাচারী নয়, ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে হবে’

সারাবাংলা/এসবি/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন