বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা স্থানান্তর বন্ধের আহ্বান

December 3, 2020 | 2:44 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজারের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে দুর্গম ভাসানচরে স্থানান্তর অবিলম্বে বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামেনস্টি ইন্টারন্যাশনাল। খবর রয়টার্স।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সংস্থা দুইটি তাদের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য চার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। ৩ ডিসেম্বর থেকে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।

এদিকে, বাংলাদেশের উচিত একটি স্বচ্ছ স্থানান্তর প্রক্রিয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে – বলে উল্লেখ করেছে এইচআরডব্লিউ।

বিজ্ঞাপন

পাশাপাশি, ভাসানচরের ভেতরে-বাইরে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা থাকতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরের আগে স্বাধীন কারিগরি ও সুরক্ষাগত যে মূল্যায়নের আহ্বান জাতিসংঘ জানিয়েছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে মনোযোগী হতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এ ব্যাপারে এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, মানবিক বিশেষজ্ঞদের সবুজ সংকেতের আগে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে স্থানান্তর না করার বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে বাংলাদেশ সরকার সক্রিয়ভাবে সরে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্বীপটির বসবাসযোগ্যতা সম্পর্কে সত্যিই আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে এ ব্যাপারে তাদের স্বচ্ছ হওয়া উচিত।

অন্যদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হামাদি বলেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তর বন্ধ করা উচিত। যারা ইতোমধ্যেই সেখানে আছে, তাদের মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে আনা উচিত।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও, স্থানান্তরের যে কোনো পরিকল্পনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পূর্ণ ও অর্থবহ অংশগ্রহণসহ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন সাদ হামাদি।

এ প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ ও অবহিতপূর্বক সম্মতি ছাড়া তাদের ভাসানচর বা অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা নেওয়া যাবে না।

ওদিকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে বুধবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক দফতর এক বিবৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় তাদের যুক্ত করা হয়নি। রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যও নেই। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন প্রাসঙ্গিক, নির্ভুল এবং হালনাগাদ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে বিষয়ে জোর দিয়েছে জাতিসংঘ।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর ওপর থেকে চাপ কমানোর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে ভাসানচরে পাঠানোর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। কয়েকটি বাসে করে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্প থেকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) তত্ত্বাবধানে তাদেরকে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকের বিরোধিতার পরও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন