বিজ্ঞাপন

‘সন্ত্রাসী কাজের উদ্দেশেই অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করতে চায় বিএনপি’

December 3, 2020 | 6:57 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশেই বিএনপি অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করতে চায়। আর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যারা বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মাস্ক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের জন্য এসব মাস্ক বিতরণ করা হয়।

‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমরা অনুমতি না পাওয়ার কারণে বহু সমাবেশ করতে পারিনি, সেজন্য আমাদের রাস্তায় প্রতিবাদ করতে হয়েছে’ বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই বলবৎ যে নিয়মে সভা-সমাবেশের জন্য অনুমতি নেওয়ার কথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যখন আবার মনে করিয়ে দিল, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এ নিয়ে কথা বলছেন। আসলে তারা বিনা অনুমতিতে গত কিছুদিন ধরে হঠাৎ করে সমাবেশ আয়োজন করছিল। আর আমরা দেখেছি, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে হঠাৎ চোরাগোপ্তা মিছিল বের করে গাড়ি ভাঙচুর করা। অনুমতি নিয়ে তো সেটা করতে একটু অসুবিধা হয়।’

‘২১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যখন মুক্তাঙ্গনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, মুক্তাঙ্গনে অনুমতি দেওয়া হয় নাই, কারণ মুক্তাঙ্গনের আশেপাশে বিল্ডিং নাই, বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে বোমা মারার বা গ্রেনেড ছোঁড়ার সুযোগ ছিল না’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘মুক্তাঙ্গনে না দিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়েতে, কারণ বঙ্গবন্ধুর এভিনিউয়ের চারপাশের ভবন থেকে গ্রেনেড ছোঁড়ার সুবিধা ছিল।’

বিজ্ঞাপন

দেশে ভাস্কর্য নিয়ে অহেতুক একটি বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উপমহাদেশে ইংরেজরা আসার পর কেউ কেউ ইংরেজি শিক্ষা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিল, টেলিভিশন চালু হলে তা দেখা হারাম এবং হজে যাওয়ার জন্য ছবি তোলাও হারাম বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফতোয়া দেওয়া হলো যে, যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা সবাই কাফের। সেই ধারাবাহিকতাতেই তাদেরই প্রেতাত্মারাই কিন্তু আজকে ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’

সমগ্র বিশ্বের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামি দেশগুলোসহ সারাবিশ্বে এমনকি সৌদি আরবেও মানুষের অবয়বসহ নানা ভাস্কর্য রয়েছে। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে যেখানে ইসলামি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে আয়াতুল্লাহ খোমেসিরও ভাস্কর্য আছে।’

বিজ্ঞাপন

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশেও অনেক আগে থেকে বহু নেতা, কবি, সাহিত্যিকের ভাস্কর্য আছে। তখন কেউ কিছু বলেন নাই। হঠাৎ করে এই প্রশ্ন আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারণ যারা এই প্রশ্নগুলো উপস্থাপন করছেন তাদের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। তারা বিভিন্ন দলের নেতা, তাদের দলগুলো আবার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। সুতরাং তারা যখন বক্তব্য দেয়, তখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বক্তব্য দেয়।’

ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম, এর অপব্যাখ্যা করে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘যারা এতদিন ধরে স্বাধীনতাবিরোধীদের লালন করেছে, পোষণ করেছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের দিয়ে রাজনীতি করে, তারাই এর পিছনে ইন্ধন দিচ্ছে। সুতরাং আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

সর্বসাধারণের মাঝে বিতরণের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটিকে ৫০ হাজার মাস্ক দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ ও সিডনী আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানান তথ্যমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাস্ক প্রদানকারী দু’টি সংগঠন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাউসুল আজম শাহজাদা এবং সিডনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আজাদকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদের হাতে মাস্ক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন