বিজ্ঞাপন

করোনা শনাক্তে দেশের ১০ জেলায় অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু

December 5, 2020 | 9:07 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তে দেশে চালু হয়েছে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা। প্রাথমিকভাবে দেশের ১০ জেলায় এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সব জেলায় করোনা শনাক্তের এ সুবিধা চালু করা হবে। শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন ।

বিজ্ঞাপন

যে ১০টি জেলায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করা হচ্ছে সেগুলো হলো— পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মেহেরপুর, মুন্সিগঞ্জ, যশোর, পটুয়াখালী ও জয়পুরহাট। যাদের করোনা উপসর্গ আছে তারা এসব জেলার সদর হাসপাতালে গিয়ে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন।

দশ জেলা থেকে সারাবাংলার ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টের পাঠানো সংবাদ—

পঞ্চগড়: দ্রুততম সময়ে করোনা শনাক্তের জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট সেবা চালু হয়েছে। শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বাইরে অস্থায়ী ক্যাম্পে বহু প্রতিক্ষিত এই সেবা চালু করে স্বাস্থ্যবিভাগ।

বিজ্ঞাপন

প্রথম দিনেই করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা ৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয় এবং ২০/২৫ মিনিটের মধ্যেই তাদের ফলাফল দেওয়া হয়। ৩ জন রোগীর মধ্যে ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হবে। কেবল মাত্র যাদের করোনার উপসর্গ রয়েছে তারাই ১০০ টাকা ফি দিয়ে এই পরীক্ষা করাতে পারবেন। ১ জন মেডিকেল অফিসার ও ২ জন মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট এই সেবা দেবেন। জেলায় ৫০০ কিট সরবরাহ করা হয়েছে।

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আফরোজা বেগম রীনা বলেন, ‘আজ থেকে প্রাথমিকভাবে আমরা র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করলাম। প্রতিদিন ১০টা হতে ১টা পর্যন্ত এ টেস্টের কার্যক্রম চলবে। ইতিমধ্যে ১ জন চিকিৎসক, দুইজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আমরা ৫০০ কিট হাতে পেয়েছি। আশা করছি এত করোনাপরীক্ষা করতে আসা সবাই উপকৃত হবে।’

বিজ্ঞাপন

মুন্সীগঞ্জ: জেলায় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে করোনা শনাক্তে অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট শুরু হয়। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সকাল সাড়ে ১০টার পর র‌্যাপিড কিটের মাধ্যমে এই টেস্ট শুরু করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। এই হাসপাতালে প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৫০০ কিট দেওয়া হয়েছে।


মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট শহীদুল ইসালাম জানান, এখান থেকে সরাসরি রিপোর্ট দেওয়ার আদেশ এখনও তারা পাননি। তাই ঢাকাতে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে, সেখান থেকে রিপোর্ট জানানো হবে। এতে ২-৩ দিন লেগে যাবে।

তবে জেলার অধিবাসীদের দাবি, যেহেতু টেস্ট এখানে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেহেতু স্থানীয় ভাবেই তাৎক্ষণিক ফলাফল দিতে হবে।

যশোর: জেলায় আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম দিন তিন জনের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে তিন জনেরই নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় জানান, যশোর থেকে একজন চিকিৎসক, একজন টেকনিশিয়ান ও একজন আইটি স্পেশালিস্ট ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা যশোরে আসার সময় একহাজার কিট নিয়ে এসেছেন। ওই কিট দিয়ে পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো আরও আসবে বলেও তিনি জানান।

তিনি আরও জানান, এই টেস্ট সবার জন্যে নয়। শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকরা যাকে প্রেসক্রাইব করবেন, শুধুমাত্র তাদেরই পরীক্ষা করা হবে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, ‘ভৌগোলিক কারণে যশোরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া যশোরে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর, বিমানবন্দর এবং রেলওয়ে স্টেশন। ফলে র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করোনা রোগী শনাক্ত ও চিকিৎসায় নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।’

জয়পুরহাট: জেলায় শুরু হয়েছে র‌্যাপিড এন্টিজেন করোনা টেস্ট। ৩০ মিনিটেই পাওয়া যাবে এর ফলাফল। সারাদেশে ১০ জেলা হাসপাতালের মতো শনিবার সকাল থেকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালেও এই টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজ শুরু হয়। এ টেস্টর জন্য খরচ হবে ১০০ টাকা।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘টেস্টের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০০ কিট দেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। যাদের সর্দি কাশি আছে, তাদেরই টেস্ট করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি পরীক্ষাগুলো ভালভাবে সম্পন্ন করার।

মেহেরপুর: বহুল প্রতিক্ষিত আ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে মেহেরপুর। শনিবার সকালে এই টেস্টের উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন। এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাসির উদ্দীন।

এর আগে, অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য একজন চিকিৎসক, একজন টেকনেশিয়ান ও একজন অফিস সহকারীকে ঢাকাতে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, টেস্টের ফল দ্রুত পাওয়ায় রোগীরা আসছেন চিকিৎসার আওতায়। ফলে রোগীর মাধ্যমে রোগটি ছড়ানোর সম্ভাবনাও কম থাকছে।

এছাড়াও গাইবান্ধা, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পটুয়াখালীতে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে সরকারের পক্ষ থেকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দেওয়ার কথা জানান স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. বিলকিস বেগম। এর দেড় মাস পর দশ জেলায় অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু হলো।

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন