বিজ্ঞাপন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: দণ্ডিত ২ আসামিকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ

December 6, 2020 | 2:55 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চার দলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ। পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তা হলেন- সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক উপ কমিশনার ওবায়দুর রহমান খান।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৬ ডিসেম্বর) পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তার জামিন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

আদালতে তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ ও সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জামিলুর রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এ ম আমিন উদ্দিন।

দণ্ডিত দুই পুলিশ কর্মকর্তার জামিন আবেদন খারিজ করার বিষয়টি সারাবাংলা.নেটকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।’

এ মামলায় সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক উপ-কমিশনার ওবায়দুর রহমান খানকে দুই বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আইনজীবীরা জানান, পরে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি তারা আত্মসমর্পণ করে আপিল করেন।

বিজ্ঞাপন

হাইকোর্ট তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে জরিমানা স্থগিত করেন। ২০২০ সালে ৯ মার্চ তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর তার আপিল বিভাগে আবেদন করেন। যেটি আজ খারিজ হয়ে যায়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় অল্পের জন্য হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।

তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

বিজ্ঞাপন

এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।

মোট ৫২ আসামির মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগী শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হয়। তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলার আসামির সংখ্যা ৪৯ জন হয়।

এ বিষয়ে রায় দেওয়ার সময় ৩১ জন কারাগারে ছিলেন। পলাতক ছিলেন বাকি ১৮ জন। তারা হলেন- তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, খান সাঈদ হাসান, ওবায়দুর রহমান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, রাতুল বাবু, মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল মালেক ওরফে, শওকত ওসমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বকর, খলিলুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম। তবে এর মধ্যে এ দুইজন আত্মসমর্পণ করেন।

পরে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই ঘটনায় বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন