বিজ্ঞাপন

সেলুলয়েডের ফিতায় যুদ্ধদিনের গল্প

December 16, 2020 | 9:11 pm

হৃদয় সাহা

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। রক্তক্ষয়ী ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। স্বাধীনতার লাল সূর্য সেদিন ছিনিয়ে এনেছিল বীর বাঙালি। ৩০ লাখ শহিদের রক্তস্নাত এই বাংলাদেশ অর্জনে একদিকে যখন বীর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখসমরে প্রাণ বলিদান দিচ্ছিলেন, তেমনি সেই যুদ্ধের আরেকটি ফ্রন্ট সক্রিয় ছিল সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে তখনকার প্রচারিত খবর থেকে শুরু করে দেশাত্মবোধক গানগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে মানসিকভাবে চাঙ্গা করেছে, তাতে এই গানগুলোও যেন ছিল যুদ্ধাস্ত্র।

বিজ্ঞাপন

কেবল মুক্তিযুদ্ধের সময়ই নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর ইতিহাসকে প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে প্রবাহিত করার কাজটি করতেও ভূমিকা রেখেছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যোদ্ধারা। আর এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী একটি ভূমিকা রেখেছিল চলচ্চিত্র শিল্প। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সত্তর দশক তো বটেই, আশি-নব্বইয়ের দশক পেরিয়ে নতুন শতকের শূন্য আর দশের দশকেও স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে একাধিক চলচ্চিত্র। এর মধ্যে অনেক চলচ্চিত্রই সেলুলয়েডের ফিতায় যেন মূর্ত করেছে রেখেছে মুক্তিযুদ্ধকে।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম যে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় সেটি ‘ওরা এগারো জন’। দেশ স্বাধীন হওয়ার ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন চাষী নজরুল ইসলাম। এই ছবির অধিকাংশ কলাকুশলী ছিলেন সদ্য মুক্তিযুদ্ধ ফেরত বাংলার সূর্য সন্তানেরা। যুদ্ধদিনের টান টান উত্তেজনা ঘিরে থাকা এই ছবিটি এখনো মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র হিসেবে দর্শকনন্দিত। ১৯৭২ সালেই মুক্তি পায় সুভাষ দত্তের ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীসহ তাদের দোসর এ দেশীয় রাজাকার-আলবদর বাহিনী নারীদের ওপর যে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছিল, সেই বিষয়টিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল এই চলচ্চিত্রে।

১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় আলমগীর কবিরের ‘ধীরে বহে মেঘনা’। যৌথ প্রযোজনার ছবি ছিল এটি। সর্বমহলে বেশ প্রশংসিতও হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র হিসেবে অনেকের কাছেই এটি অন্যতম সেরা। এ বছরেই মুক্তি পায় খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’। রণাঙ্গনের যোদ্ধারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর তাদের দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান ফুটে উঠেছে এই চলচ্চিত্রে।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৪ সাালে মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’। দর্শকনন্দিত এই ছবিটিতে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রেক্ষাপটের প্রাধান্য ছিল বেশি। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় হারুনুর রশীদ  পরিচালিত ‘মেঘের অনেক রং’। ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ পাঁচটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ১৯৭৯ সালে মুক্তি পায় আলমগীর কবিরের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দ্বিতীয় সিনেমা ‘রুপালী সৈকতে’।

এছাড়া সত্তরের দশকেই নির্মিত হয় ফখরুল আলমের ‘জয় বাংলা’, এস আলীর ‘বাঙালির ছাব্বিশ বছর’, মমতাজ আলীর ‘রক্তাক্ত বাংলা’, আনন্দের ‘কার হাসি কে হাসে’, আলমগীর কুমকুমের ‘আমার জন্মভূমি’, চাষী নজরুল ইসলামের ‘সংগ্রাম’সহ বেশকিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। তবে এর মধ্যে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রই নির্মাণের দুর্বলতার কারণে সমালোচিতও হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পরপরই এই জনযুদ্ধকে রুপালি পর্দায় নিয়ে আসার যে আগ্রহ ছিল পরিচালক-প্রযোজকদের মধ্যে, পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাসহ সামরিক শাসনের প্রভাবে তাতে ধীরে ধীরে ভাটা পড়তে থাকে। আশির দশকে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা নির্মিত হয় মাত্র দুইটি— শহিদুল হক খানের ‘কলমিলতা’ (১৯৮১) ও মতিন রহমানের ‘চিৎকার’ (১৯৮২)। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হলেও খুব বেশি আলোচিত হতে পারেনি এই দুইটি চলচ্চিত্র।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধকে সেলুলয়েডের পর্দায় ফিরিয়ে আনার প্রবণতাটি ফের ফিরে আসে নব্বইয়ের দশকে। এই দশকে বেশকিছু গুণী চলচ্চিত্রকার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি চলচ্চিত্র একদিকে যেমন দর্শকনন্দিত হয়েছে, তেমনি সমালোচকদের কাছেও পেয়েছে প্রশংসা।

১৯৮২ সালের প্রায় এক যুগ পর ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় ‘একাত্তরের যীশু’। শাহরিয়ার কবিরের লেখা উপন্যাস থেকে এই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়। পরের বছরই নিজের লেখা উপন্যাস ‘আগুনের পরশমণি’কে চলচ্চিত্রকে রূপ দেন হুমায়ূন আহমেদ। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে কেন্দ্র করে ‍যুদ্ধদিনের বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল এই চলচ্চিত্রে। জুরি বোর্ডের রায়ে ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট আটটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে এসে ১৯৯৫ সালে তানভীর মোকাম্মেল নির্মাণ করেন ‘নদীর নাম মধুমতি’। সর্বমহলে প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র একাধিক শাখায় জাতীয় পুরস্কারও লাভ করে। দুই বছর পর সেলিনা হোসেনের আলোচিত উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় চাষী নজরুল ইসলামের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তৃতীয় ছবি ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’। প্রশংসিত এই ছবিটিও একাধিক শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

১৯৯৭ সালেই মুক্তি পায় খান আতাউর রহমানের শেষ সিনেমা ‘এখনো অনেক রাত’। মুক্তিযুদ্ধের এই ছবিটিতে সেন্সর বোর্ড কাঁচি চালিয়েছিল। তা নিয়ে খান আতা আপত্তিও তুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ছুরি-কাঁচি পেরিয়ে মুক্তি পাওয়া ছবিটিও একাধিক শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

বিজ্ঞাপন

নব্বইয়ের দশকেই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক না হলেও যুদ্ধ পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে নির্মিত হয় বেশকিছু চলচ্চিত্র। প্রচলিত অর্থে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মাতারাই এগুলো নির্মাণ করেন। এর মধ্যে কাজী হায়াতের ‘দাঙ্গা’ (১৯৯১) ও ‘সিপাহি’ (১৯৯৪), মুহম্মদ হান্নানের ‘বিক্ষোভ’ (১৯৯৪), উত্তম আকাশের ‘মুক্তির সংগ্রাম’ (১৯৯৫), সোহানুর রহমান সোহানের ‘আমার দেশ আমার প্রেম’ (১৯৯৭) উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া তানভীর মোকাম্মেলের ‘চিত্রা নদীর পাড়ে’ (১৯৯৯) ছিল মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী ষাটের দশকের প্রেক্ষাপটে নির্মিত। ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট সাতটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

নতুন শতকের শুরুতে, অর্থাৎ ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে বাংলা চলচ্চিত্রে দেখা দেয় দুরবস্থা। তবে এই সময়ের মধ্যেও বেশকিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, যেগুলো দেশে ও দেশের বাইরে সমাদৃত হয়েছে। এর মধ্যে ২০০২ সালে মুক্তি পায় তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’। মুক্তিযুদ্ধ ভিন্ন আঙ্গিকে উঠে আসা এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই বাংলা সিনেমার অস্কারযাত্রা শুরু  হয়।

২০০৪ সালে মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তিনটি সিনেমা। আমজাদ হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে তৌকির আহমেদ নির্মান করেন ‘জয়যাত্রা’। সর্বমহলে প্রশংসিত এই ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট সাতটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। একই বছর মুক্তি পায় হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্যামল ছায়া’। জনপ্রিয় এই ছবিটিও বাংলাদেশের হয়ে অস্কারে প্রতিনিধিত্ব করেছিল। এ বছর কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস অবলম্বনে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চতুর্থ ছবি ‘মেঘের পরে মেঘ’।

২০০৬ সালে মাহমুদুল হকের ‘খেলাঘর’ উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে সিনেমা নির্মাণ করেন মোরশেদুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার একটি গ্রামের পটভূমিতে যুদ্ধ আর ভালোবাসার কাহিনী ফুটে ওঠে এই চলচ্চিত্রে। একই বছর রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস নিয়ে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মান করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পঞ্চম চলচ্চিত্র ‘ধ্রুবতারা’। পরিচালকদের মধ্যে চাষী নজরুল ইসলামই সবচেয়ে বেশি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি নির্মাণ করেন।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জীবনী নিয়ে খিজির হায়াত খান ২০০৭ সালে নির্মাণ করেন ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’। এই দশকে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত হয় আরও কিছু চলচ্চিত্র। এর মধ্যে রয়েছে— শাহজাহান চৌধুরীর ‘উত্তরের ক্ষেপ’ (২০০০), দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘বীর সৈনিক’ (২০০৩), শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘লাল সবুজ’ (২০০৫), তানভীর মোকাম্মেলের ‘রাবেয়া’ (২০০৮)। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট নিয়ে শহিদুল ইসলাম খোকন নির্মাণ করেন ‘বাঙলা’ (২০০৬)। ছবিটির গল্প নেওয়া হয়েছিল আহমদ ছফার উপন্যাস থেকে। তবে ২০০৫ সালে নির্মিত গাজী জাহাঙ্গীরের ‘জীবন সীমান্তে’ (২০০৫) ছবিটি সমালোচিত হয়েছিল।

২০১০ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি হিসেবে অন্যতম আলোচিত ছিল ‘গেরিলা’। সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ অবলম্বনে ২০১১ সালে এই ছবিটি নির্মাণ করেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। দর্শকপ্রিয় ও প্রশংসিত এই ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট ১০টি শাখায় জাতীয় পুরস্কার পায়। বেশকিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কারও রয়েছে এই সিনেমার ঝুলিতে।

একই বছর মুক্তি পায় মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস অবলম্বনে দেশের প্রথম কিশোর মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা ‘আমার বন্ধু রাশেদ’। মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত এই ছবিটিও একাধিক শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ২০১৪ সালে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্প নিয়ে জাহিদুর রহিম অঞ্জন নির্মাণ করেন ‘মেঘমল্লার’। একই বছর নির্মলেন্দু গ‍ুনের কবিতা অবলম্বনে মাসুদ পথিক নির্মাণ করেন ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এই দুইটি ছবিরই জয়জয়কার ছিল।

এই দশকে মুক্তি পাওয়া মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা হিসেবে খালিদ মাহমুদ মিঠুর ‘গহীনে শব্দ’ (২০১০), মাসুদ আখন্দের ‘পিতা’ (২০১২), মোরশেদুল ইসলামের ‘অনিল বাগচীর একদিন’ (২০১৫) উল্লেখযোগ্য। তবে এই সময়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশকিছু চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য এবং কারিগরি ও নির্মাণ দুর্বলতার কারণে সমালোচিতও হয়। এর মধ্যে রয়েছে সোহেল আরমানের ‘এই তো প্রেম’ (২০১৫), দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তর’ (২০১৬)। এছাড়া রুবাইয়াত হোসেনের ‘মেহেরজান’ (২০১১) ছবিটি মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কভাবে উপস্থাপনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সর্বশেষ সংযোজন ফাখরুল আরেফিনের ‘ভুবন মাঝি’ (২০১৭)। ছবিটি দর্শকমহলে বেশ সাড়া ফেলে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে জাহিদ হোসেনের ‘লীলা মন্থন’সহ আরও কয়েকটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র।

চলচ্চিত্র সমালোচক ও সংশ্লিষ্টদের অভিমত, মুক্তিযুদ্ধের পর পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধকে সেলুলয়েডের ফিতায় তুলে ধরার মতো চলচ্চিত্রের সংখ্যা খুবই সামান্য। বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই সব মিলিয়ে বিশ্বমানের নয়। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক দিকটিও উঠে আসেনি বেশিরভাগ চলচ্চিত্রেই। ফলে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে মুক্তিযুদ্ধকে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়নি। দর্শকদেরও চাহিদা, মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে প্রকৃত অর্থেই বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ হোক, যেগুলো বাংলাদেশের শৃঙ্খলমুক্তির সেই রক্তক্ষয়ী ইতিহাসকে তুলে ধরতে সক্ষম হবে।

স্বাধীনতা উত্তর সময়ে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে আলোচনার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যে চলচ্চিত্রটির নাম না নিলেই নয় সেটি হলো ‘জীবন থেকে নেওয়া’। এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণ হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের আগেই, ১৯৭০ সালে। জহির রায়হানের এই চলচ্চিত্রটি মূলত বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত রূপ রণাঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্রেক্ষাপটটি তুলে ধরেছে। স্বাধীনতাকামী মানুষদের কাছে এই সিনেমাটি ছিল অনুপ্রেরণা।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন