বিজ্ঞাপন

বিজয়ের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ

December 16, 2020 | 8:15 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিজয়ের আনন্দ নিয়ে রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকেই ঘুরতে বেড়িয়েছে সাধারণ মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে ছিল জনসাধারণের ভিড়। এর বাইরেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিরাজ করছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

বিজ্ঞাপন

ছুটি আর বিজয়ের আবহে দিনটি পার করতে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালের তীব্র শীতও বাঁধা হতে পারেনি বিজয় আপ্লুত নাগরিকদের কাছে। এদিন জাঁকজমকপূর্ণ আলোকসজ্জায় বিজয়ের রঙে মেতে উঠেছিল হাতিরঝিল, শিশু পার্ক, চিড়িয়াখানা, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আগারগাঁওয়ে বিমান বাহিনী জাদুঘর এবং বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের মতো স্থাপনাগুলো।

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, জাতীয় প্রে সক্লাব, রবীন্দ্র সরোবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে হয়েছে বিজয়ের গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিজয় দিবসের আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই পরদিন সকাল পর্যন্ত এসব জায়গায় জমে উঠেছিল নানা বয়সের মানুষের মিলন মেলা।

বিজ্ঞাপন

টিএসসির ঐতিহ্যবাহী কনসার্টে গান শোনার পাশাপাশি মানুষ এসেছিল ফানুস আর আগুন খেলা দেখতে। এরপর সকাল বেলা এখান থেকেই সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যান তারা। অনেকে আবার চলে যান বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও।

বুধবার সকালে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল হাতিরঝিলে। এখানে কুয়াশা থাকায় বিজয়ের উল্লাসের সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও উপভোগ করেছেন সবাই।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাতিরঝিলে ঘুরতে যাওয়া সোহেল রায়হান বলেন, এবার কুয়াশা নামায় হাতিরঝিলকে নান্দনিক প্রাকৃতিক পর্যটন স্পট মনে হচ্ছে। বিজয় দিবসে অনেক মানুষ ঘুরতে আসায় ভালো লাগছে। একসঙ্গে সব মানুষের বিজয় উদযাপন দেখলে সত্যিই ভালো লাগে। এই একতা, মতের মিল সব বিষয়ে থাকলে বাংলাদেশ অনেক বড় হবে।

বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে সারাবছর স্কুল বন্ধ ছিল, কিন্তু আমাদের কাজের কোনো কমতি ছিল না। বরং ঘরে বসে আরও বেশি কাজ করতে হয়েছে। আজকের দিনটা তাই সারাদিন ছুটি কাটাতে চাই। পরিবার নিয়ে যতটা সম্ভব ঘুরব। হাতিরঝিল থেকে যাব সামরিক জাদুঘরে। এরপর নভোথিয়েটারে। বিজয়ের এই দিনে একমাত্র সন্তানকে কিছু সুন্দর সুন্দর অনেক স্মৃতি উপহার দিতে চাই।

বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কথা হয় আফরোজা হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই সময়টায় ঢাবি ক্যাম্পাসে আসি। এরপর যাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনের ওদিকটায়। একাত্তরের সেই দিনগুলো কেমন ছিল, কেমন ছিল সেদিনের মানুষগুলোর অনুভূতি— সেগুলো ধারণা করার চেষ্টা করি। এখানে বাংলাদেশের ভ্রূণ রোপণ করা হয়েছিল, যে বাংলাদেশ এখন উন্মাতাল তরুণ।

বিজ্ঞাপন

পেশায় শিল্পী আফরোজা আরও বলেন, পরিবারে দু’জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন— আমার বাবা ও চাচা। তাদের কাছে যুদ্ধের গল্প শুনে বড় হয়েছি। তখন থেকেই মাথায় ঘুরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী শিক্ষার্থীদের মুখ, এখানে এলে বর্তমানের মানুষগুলোর মঙ্গে মিলিয়ে দেখতাম। ‍এখনো দেখি। এখন তো আর যুদ্ধ করতে হবে না, আমরা দারুণ একটি শান্তিকাল পার করছি। এখন আমাদের পড়তে হবে, জ্ঞান অর্জন করতে হবে। বিজয়ের এই দিনে আমি চাই এই বোধটি যেন ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জন্ম নেয়।

এদিকে, ঢাবি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়াও রবীন্দ্র সরোবর, চিড়িয়াখানার মতো জায়গাতেও আজ মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব এলাকায় বিশেষত তরুণ বয়সী ছেলেমেয়ের আনাগোনা বেশি ছিল। ধানমন্ডি লেকে ডিঙি নৌকায় ঘুরে, ছবি তুলে তারা বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করছেন।

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন