বিজ্ঞাপন

বেড়ালের মেজাজ বুঝবেন যেভাবে

December 17, 2020 | 3:48 pm

লাইফস্টাইল ডেস্ক

আহ্লাদী, আদুরে, ঘুমকাতুরে আর আয়েশি পোষা প্রাণী হিসেবে দুনিয়াজোড়া মানুষের পছন্দের শীর্ষে থাকবে বেড়াল। সারাদিনই ঘরজুড়ে নানান কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় তাকে। কখনো মিউ মিউ, ঘড়ঘড়, হিসহিস শব্দ করে আবার কখনও ঘরজুড়ে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে পোষা বেড়াল। প্রতিটি আচরণই তাই আমাদের বেড়ালের মেজাজ সম্পর্কে ধারণা দেয়।

বিজ্ঞাপন

অবাক লাগছে! বেড়ালের আবার মেজাজ! হ্যাঁ। উত্তেজিত বা আনন্দের অনুভূতি থেকে শুরু করে মানসিক চাপ কিংবা হতাশা সব ধরনের মেজাজই বেড়ালদের থাকে। চলুন জেনে নেই বেড়ালের শারীরিক ভাষা এবং কণ্ঠস্বর বুঝে তার মেজাজ সম্পর্কে কীভাবে ধারণা পাওয়া যায়।

যোগাযোগের জন্য বেড়াল তার লেজ থেকে শুরু করে চোখ, কান তথা পুরো শরীর ব্যবহার করে। যখন শারীরিক ভাষা বোঝা কঠিন হয়ে যায়, কিছু সাধারণ বিষয় আপনাকে বেড়ালের চিন্তাভাবনা ও অনুভূতি বুঝতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, প্রতিটি বেড়ালই আলাদা, তাই তাদের মেজাজ বোঝানোর জন্য যে নির্দিষ্ট ভঙ্গি তা আলাদা হতেই পারে।

বেড়াল যখন নিশ্চিন্ত ও সন্তুষ্টচিত্তে থাকে
বেড়াল সাধারণত বেশ নিশ্চিন্ত ও সন্তুষ্ট অর্থাৎ আরামদায়ক ভঙ্গিতে থাকে। এমন মেজাজে থাকলে তাদের বেশ ফুরফুরে দেখা যায়। সাধারণত যেকোনো একপাশে কাত হয়ে বা পেছনে হেলান দিয়ে পা ছড়িয়ে শুয়ে থাকে। মেঝেতে নখ দিয়ে ঘষতে থাকে বা গরগর শব্দ করতেও দেখা যায়। আরামদায়ক মেজাজে থাকলে বেশিরভাগ সময়ই বেড়ালের লেজটি স্থির থাকে, কান খাড়া থাকে, চোখের পাতা পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ করে রাখে।
আপনার নরম তুলতুলে বেড়ালটি যখন আপনার দিকে আংশিক বন্ধ চোখে বা মিটমিট করে তাকায়, তখন বুঝবেন সে আপনাকে এতটাই ভরসা করে যে আপনি আশেপাশে থাকলে তার শত্রুদের বিষয়ে সতর্ক থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

বিজ্ঞাপন

আনন্দিত বেড়াল
আপনার আদুরে বেড়ালটি যখন খুব ধীরে ধীরে আপনার দিকে পিটপিট করে তাকাবে বা আপনার শরীরে আলতোভাবে মাথা বা পিঠ ঘষবে তখন বুঝবেন সে খুব আনন্দে আছে।
একটি হাসিখুশি বেড়াল নিশ্চিন্তমনের বেড়ালের চেয়ে বেশি চঞ্চল দেখা যায়। বাসার অন্য বেড়াল, কুকুর বা মানুষের সঙ্গে খুব আনন্দের সঙ্গে মিয়াও বা গড়গড় আওয়াজ করতে দেখা যায় তাদের। খুব খুশি মেজাজে থাকা বেড়ালের লেজ সাধারণত সোজা থাকে আর লেজের লোমগুলো ফুলে থাকার পরিবর্তে সমান থাকে। কানটি সামনের দিকে খাড়া হয়ে থাকে।

চঞ্চল/কৌতুহলী বেড়াল
একটি চঞ্চল বা খেলাধুলার মেজাজে থাকা বেড়ালের মিউ মিউ ডাক বা আনন্দ দেখে আপনার নিজেরই তাকে কোলে নিয়ে আদর করতে ইচ্ছে করবে। মানুষ বা অন্য বেড়ালের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ বোঝানোর জন্য লেজটি উপরের দিকে টান করে থাকে এবং নাড়তে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই তারা শিকারি বেড়ালের মতো ‍খেলাধুলা করে। বেড়ালটি খেলনা বা লেজার লাইটের মতো কোনও বিষয়ের ওপর মনোযোগী হতে পারে। এসব করতে করতে যখন একসময় ক্লান্ত, হতাশ বা রাগান্বিত হয়ে যায় তখন সে হিসহিস শব্দ করে এবং কান চ্যাপ্টা করে ফেলে।

মানসিক চাপে থাকা বা ভীতু বেড়াল
এ ধরনের মেজাজে থাকা বেড়াল প্রায়ই লুকিয়ে থাকে, যেন এমন কিছু থেকে দূরে থাকতে চাচ্ছে যা তাদের মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। কোথাও লুকিয়ে থাকতে না পারলে তারা শরীরের অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে এমন কিছু ইঙ্গিত করবে যার মাধ্যমে কোনো সমস্যা বোঝানোর চেষ্টা করে। যেমন, তাদেরকে খুব চিন্তিত দেখা যায় এবং হঠাৎ করে হিসহিস শব্দ শুরু করে। কান, মাথা এবং লেজ নিচু করে পেছনের দিকেও হাঁটতে দেখা যায় তাদের।
আর সে যখন পিঠ ও লেজ ওপরের দিকে টান করে নিজেকে বড় দেখানোর চেষ্টা করবে তখন বুঝবেন বেড়ালটি আসলেই ভয় পেয়েছে। আবার ভয় পাওয়া বেড়াল তার লিটার বক্সের বাইরে মলমূত্র ত্যাগ করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

রাগী বা আগ্রাসী বেড়াল
একটি বেড়াল খুব বেশি রাগান্বিত হয়ে কাউকে আঁচড় বা কামড় দেওয়ার আগে তার রাগ বোঝা যায় না। বেড়াল যখন খুব বেশি মানসিক চাপে বা ভয়ে থাকে তখন খুব দ্রুত রেগে যায়। তবে তারা কি খুঁজছে তা যদি জানে তাহলে আগে থেকেই আপনাকে সতর্ক করবে।
আক্রমণ করার আগে বেড়াল স্থির হয়ে যায়। তারা তাদের লেজটি আছড়াতে পারে বা সোজা করে রাখতে পারে। তারা তাদের আক্রমণের দিকে লক্ষ্যস্থির করে। আবার রেগে গেলে বেড়ালের কান টানটান হয়ে যায় এবং তারা দাঁত বের করে হিস হিস শব্দ করে।

আপনার বেড়ালের মধ্যে এ ধরনের আচরণ লক্ষ্য করলে সেখান থেকে সরে যান এবং তাকে শান্ত হওয়ার সময় দিন। এমন মেজাজে থাকা বেড়ালের কাছে কখনওই যাবেন না, কারণ সে আপনার উপর হামলা করতে পারে। আসলে তাঁর শরীরী ভাষার মাধ্যমে সে আক্রমণের বিষয়ে আপনাকে সতর্ক করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে একজন পশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন।

অসুস্থ বা আহত বেড়াল
বেড়াল অসুস্থ বা আহত হলে বোঝা খুব কঠিন। কারণ তারা দুর্বলতা, অসুস্থতা এবং আহত অবস্থা খুব ভালোভাবে লুকিয়ে ফেলতে পারে। যতক্ষণ না পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা খুব বেশি খারাপ হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি বুঝতেও পারবেন না তার চিকিৎসা প্রয়োজন। বেড়াল অসুস্থ হলে সাধারণত খাবার বা পানির প্রতি অনীহা দেখায়, লিটার বক্সের বাইরে মলমূত্র ত্যাগ করে, খোঁড়াতে থাকে, মুখ খুলে নিঃশ্বাস নেয় এবং গড়গড় শব্দ করে। আপনার বেড়ালের এ ধরনের উপসর্গ দেখলে অবশ্যই পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ভালোবেসে বেড়াল পোষেন অনেকেই। আবার অনেকেই পোষার চিন্তা করছেন। তারা বেড়াল আনার আগে উপরের বিষয়গুলো মাথায় রাখলে নিশ্চিন্তে বেড়াল পুষতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএস/আরএফ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন