বিজ্ঞাপন

দূষণরোধে সেন্ট মার্টিন্স সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

December 21, 2020 | 6:41 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: কোকা-কোলা বাংলাদেশ এবং ‘ওশান কনজারভেন্সি’র দেশীয় সমন্বয়ক কেওক্রাডং বাংলাদেশ দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনসে দশম বারের মতো আয়োজিত আন্তর্জাতিক সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

বিজ্ঞাপন

২০৩০ সালের মধ্যে কোকা-কোলার ‘বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব’ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে, ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশে পরিচালিত হয়ে আসা এই স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগটিকে সহযোগিতা করে আসছে কোকা-কোলা। সমুদ্রের পরিবেশ রক্ষায় ওশান কনজানভেন্সির সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে, দি কোকা-কোলা কোম্পানি তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমুদ্র ও জলপথকে পরিচ্ছন্ন এবং দূষণমুক্ত রাখতে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে কোকা-কোলা।

চলমান করোনা মহামারি সত্ত্বেও নানান শ্রেণি-পেশার অন্তত ৫২০ জন স্বেচ্ছাসেবী এবছরের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেন এবং সমবেতভাবে তারা প্রায় ৮৭০ কিলোগ্রাম সামুদ্রিক আবর্জনা সংগ্রহ করেন। কেওক্রাডং ও কোকা-কোলা বাংলাদেশের যৌথ প্রচেষ্টায় গত ১০ বছরে সেন্ট মার্টিন কোরাল দ্বীপ থেকে প্রায় ১২ হাজার কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে, যাতে অংশ নিয়েছেন সারা দেশের ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী।

বিজ্ঞাপন

করোনা মহামারির কারণে এবারের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। অভিযানের আগেই অংশগ্রহণকারীদের সবাইকে করোনা টেস্ট করা হয়। এছাড়া ইভেন্ট চলাকালে ফেসমাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি কঠোরভাবে নিশ্চিত করা হয়। সারাদেশ থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ নানান পেশাজীবীরা পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা তৈরির এই কার্যক্রমে অংশ নেন।

যৌথ এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে ‘ওশান কনজারভেন্সি’র এদেশীয় সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন বলেন, ‘কোকা-কোলার সাথে নিজেদের অংশীদারিত্বকে গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করে কেওক্রাডং ও ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ। আমরা আমাদের নিবেদিতপ্রাণ সমন্বয়কদের নেটওয়ার্ক নিয়ে গর্বিত, যারা ১০ বছর ধরে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।’

এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সারাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে সমুদ্র দূষণের কারণ এবং সামুদ্রিক আবর্জনার ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হয়। পাশাপাশি আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়ে সমুদ্র ও নৌপথের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রত্যেক নাগরিকের ভূমিকা সম্পর্কেও সবাইকে সচেতন করা হয়। ৩৫তম ‘ইন্টারন্যাশনাল

বিজ্ঞাপন

কোস্টাল ক্লিনআপ’ কার্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনস দ্বীপে দিনব্যাপী এই পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’- স্লোগানকে সামনে রেখে সেন্ট মার্টিনস কোরাল দ্বীপে আয়োজিত সমুদ্র সৈকত পরিষ্কারের এবারের আসরটি টানা ১০ বছর ধরে পালিত হবার মাইলফলক স্পর্শ করেছে।

এ প্রসঙ্গে কোকা-কোলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অজয় বাতিজা বলেন, ‘সমুদ্র সৈকতকে প্লাস্টিকের আবর্জনামুক্ত রাখতে কেওক্রাডংয়ের নিরন্তর প্রচেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সমুদ্র তীর থেকে অবাঞ্ছিত আবর্জনা অপসারণ কেবল এখানকার পরিবেশেরই উপকার করছে না, পাশাপাশি সারা দেশের অন্যান্য মানুষদেরকেও এ কাজে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্র পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যক্রমে এই অংশগ্রহণ মূলত: আমাদের ‘বর্জ্য মুক্ত বিশ্ব’ তৈরির প্রচেষ্টারই অংশ।’

কার্যক্রমটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সেন্ট মার্টিনস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নূর আহম্মদ বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের এই দ্বীপের জীব-বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমটি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এই ধরণের চমৎকার ও কার্যকরী একটি আয়োজন করায় আমরা কেওক্রাডং ও কোকা-কোলার কাছে কৃতজ্ঞ।’

বিজ্ঞাপন

দিনব্যাপী এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেন্ট মার্টিনসের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রকে কিভাবে আরও কার্যকরভাবে দূষণমুক্ত এবং সমুদ্র তীরকে আরও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করাই ছিলো এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য ইউপি সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উক্ত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

‘ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী প্রয়াস। উদ্যোগটি সারা বিশ্বের হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে সমুদ্র সৈকত, জলাধার ও জলপথ থেকে লাখ লাখ পাউন্ডের সামুদ্রিক আবর্জনা পরিষ্কার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য- অপচনশীল আবর্জনা সংগ্রহ করা, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিগারেটের ফিল্টার, চিপসের প্যাকেটের মতো অপচনশীল মোড়ক ইত্যাদি। সেন্ট মার্টিনস ইভেন্ট চলাকালে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা সংগ্রহ করার পর একটি নির্দিষ্ট স্থানে সেগুলো জড়ো করেন স্বেচ্ছাসেবীরা। এরপর সেগুলো নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিত্তিতে আলাদা করা হয়। এই কার্যক্রমে সংগৃহীত আবজর্নাসমূহের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত্ব ওশান কনজারভেন্সির বৈশ্বিক ‘ওশান ট্র্যাশ ডাটাবেসে’ আপলোড করা হয়ে থাকে।

সারাবাংলা/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন