বিজ্ঞাপন

স্বামীকে খুন করে সেজেছেন মামলার বাদী, পিবিআই’র তদন্তে ধরা

December 21, 2020 | 8:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: অবৈধ সম্পর্ককে নিরাপদ করতে ৩০ হাজার টাকায় ‘খুনি’ ভাড়া করে স্বামীকে খুন করান এক নারী। পরে আবার স্বামীকে খুনের অভিযোগে নিজেই বাদী হয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় মামলাও করেন। ঘটনার একবছর পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ওই নারীই আসলে স্বামীর অন্যতম হত্যাকারী। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২০ ডিসেম্বর) রাতে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার আচলতা এলাকা থেকে ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়ছেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান।

গ্রেফতার হওয়া উম্মে ছালমা (৩০) নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তারা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের বিএমএ গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পিবিআই কর্মকর্তা নাজমুল হাসান সারাবাংলাকে জানান, ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে সীতাকুণ্ড-হাটহাজারী সড়কের পাশে একটি লাউ ক্ষেত থেকে রফিকুল ইসলামের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার স্ত্রী উম্মে ছালমা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের করেন। সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ মো. এমরান (২৪) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করে।

বিজ্ঞাপন

তবে মামলার তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পরে সেটির দায়িত্বভার আসে পিবিআই’র কাছে। চলতি বছরের অক্টোবরে পিবিআই মৃত রফিকুলের প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া সাকিবুল ইসলাম সাকিবকে (২০) গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়। এরপর সাকিব ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার বর্ণনা দেয় এবং এমরান ও উম্মে ছালমার জড়িত থাকার কথা প্রকাশ করে। পিবিআই জেলে থাকা এমরানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এমরানও আদালতে জবানবন্দি দিয়ে অভিন্ন তথ্য দেয়। এসব তথ্যের ভিত্তিতে উম্মে ছালমাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান এসপি নাজমুল।

আসামিদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল আব্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাশাপাশি বাসা হওয়ায় উম্মে ছালমা ও সাকিবের মধ্যে অবৈধ প্রণয় গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর রফিকুল বিষয়টি জেনে যান। তখন তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এদিকে সাকিব তাকে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের জন্য চাপ দেয়। তখন ছালমা বলেন যে আমি তাকে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দিচ্ছি। এরপর পূর্বপরিচিত এমরানকে ৩০ হাজার টাকায় স্বামীকে হত্যার জন্য ভাড়া করে ছালমা।’

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে এসপি নাজমুল বলেন, ‘ছালমা, এমরান ও সাকিব মিলে খুনের পরিকল্পনা করে। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর রাতে সাকিব রফিকুলকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে। ছালমা দূরে দাঁড়িয়েছিল। এমরান ও সাকিব মিলে তাকে গলাকেটে খুন করে লাশ ফেলে রাখে লাউ ক্ষেতে। পরদিন সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশ থেকে সাকিবের জুতা ও রক্তমাখা ছোরা উদ্ধার করা হয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা নিশ্চিত হই যে খুনের সময় তিন জনই ঘটনাস্থলে ছিল।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন