বিজ্ঞাপন

যমুনার ৬.৫ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণে বাঁচবে বসতবাড়ি-ফসলি জমি

December 28, 2020 | 8:26 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তন রোধের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ সংক্রান্ত প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদীর ডান তীরে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বরাবর ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ সম্ভব হবে। ফলে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি, ফসলি জমি, স্কুল, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদরাসাসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা যমুনা নদীর ভাঙন ও পরিবেশের বিরূপ প্রভাব থেকে প্রকল্প এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত প্রকল্পের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন ব্রাক্ষণ গ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ এবং বেতিলস্পার-১ ও এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ কাজ’। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটির ব্যয় ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জ জেলা ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে অবস্থিত। ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় থেকে উৎপত্তি হয়ে ভারত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার পর থেকে যমুনা নদী নামে বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা ও মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গোয়ালন্দ এলাকার পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর বাংলাদেশ অংশের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫০ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৮০ কিলোমিটার সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। নদীর গড় প্রস্থ ১২ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ১৬ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৯ কিলোমিটার।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয় বলছে, ব্রহ্মপুত্র ডান তীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রকল্পের আওতায় ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করা ২১৭ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। গত কয়েক বছরের বন্যা ও নদীর ডান তীরে ভাঙনের ফলে তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ, সরকারি মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট এবং বিদ্যমান বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। এসব কারণেই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে— ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ, ৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ, ১ দশমিক ৪ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনর্বাসন, বেতিল স্পার-১ শক্তিশালী করা এবং এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালী করা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি ও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। তাই এটি অনুমোদনের সুপারিশ দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন