বিজ্ঞাপন

১৫ দিনের ব্যবধানে রিজার্ভ ৪২ থেকে রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন ডলারে

December 30, 2020 | 8:57 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৩ বিলিয়ন বা চার হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে এর পরিমাণ তিন লাখ ৬২ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। সে হিসাবে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানেই রিজার্ভে আরও এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। এদিন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ১৭২ বিলিয়ন ডলার।

বুধবার রাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ দশমিক ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গেছে। এটি আমা‌দের অর্থ‌নৈ‌তিক সক্ষমতার অন্যতম মাইলফলক। নতুন এক‌টি বছ‌রের শুরু‌ হওয়ার আগ মুহূর্তে এমন একটি অর্জন জাতির জন্য অত্যন্ত সুখকর ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯-এর ম‌ধ্যেও রিজার্ভের পরিমাণ এভাবে বাড়তে থাকার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে রেমিট্যান্সের অন্তঃপ্রবাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বেই সরকারের এটি একটি অভূতপূর্ব সাফল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ অর্জন, সেসব প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটি দেশের কাছে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে কমপক্ষে ১১ মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনের আগে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে— ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর চলতি বছরের গত ৪ জুন প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এরপর মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে গত ২৪ জুন রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। পরবর্তী সময়ে গত ৩০ জুন ৩৬ বিলিয়ন ডলার এবং গত ২৮ জুলাই ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ।

বাংলাদেশ ব্যাঙকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৮ দশমিক ১৫ বিলিয়ন এবং ১ সেপ্টেম্বর ৩৯ দশমিক ৪০ ডলারে উন্নীত হয়। এরপর গত ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারে, ৩০ অক্টোবর ৪১ বিলিয়ন ডলার এবং ১৫ ডিসেম্বর ৪২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জিত হয়। করোনা অভিঘাতের বছর শেষ হওয়ার একদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করল।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভে একের পর এক নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় প্রতি মাসেই প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। এর আগে, গেল নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা ২০৭ কোটি ৮৯ লাখ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এছাড়া অক্টোবরে দেশে আসে ২১১ কোটি ২০ লাখ  ডলার রেমিট্যান্স। আর গত সেপ্টেম্বরে ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা এখন পর্যন্ত দেশে একমাসে রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড।

বিজ্ঞাপন

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি প্রবাসী রয়েছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো— সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুর ও ইতালি।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন