বিজ্ঞাপন

‘একটু খুঁত পেলেই বড় করে লিখে, এটা তাদের দীনতা’

January 4, 2021 | 10:42 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কোনো কোনো পত্রপত্রিকা ছাত্রলীগের সামান্য কোনো খুঁত পেলেও সেটাকে বড় করে খবর প্রকাশ করে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়টিকে ওইসব পত্রিকার দীনতা ও ব্যর্থতা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, এগুলোকে পাত্তা দেন না তিনি।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা যে কাজগুলো করে গেছো, তার জন্য সবসময় সাধুবাদ জানাই। আমি জানি, হয়তো ক্ষেত্রবিশেষে কোথাও কোথাও দুয়েকটা ঘটনা ঘটে। আর আমাদের কিছু পত্রপত্রিকা আছে, যতই ভাল কাজ করো— সেটা লেখার তাদের যোগ্যতা নাই। যদি কোথাও এতটুকু খুঁত পায়, সেটা বড় করে লিখতে পারে। এটা তাদের একটা দৈন্য, একটা ব্যর্থতা। কাজেই এগুলোকে বেশি একটা হিসাবে ধরি না।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কেআইবি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তি জ্ঞানের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আজ তোমাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কথা বলতে পারছি, নইলে পারতাম না। যখন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিই, অনেকে এটা নিয়ে অনেক কথা বলেছে। কিন্তু আজকে বাস্তবতা কী? ২০০৮ সালে যখন আমরা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা দেই, তখন যারা ব্যঙ্গ করেছিল আজকে তারা কোথায়? তারাও তো ব্যবহার করছে এই ডিজিটাল সিস্টেম।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে এবং বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমেই কিন্তু একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা আসছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, যেন কাজের সুযোগ হয়। সেদিকে লক্ষে রেখেই কৃষিতে গুরুত্বেও সঙ্গে শিল্পায়নের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগের নেতকার্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখন যেহেতু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি চলছে, তাই আমরা স্কুল-কলেজ চালু করতে পারছি না। যখন আবার চালু করতে যাচ্ছি, তখন আবার সেকেন্ড ওয়েভ চলে আসছে। তাই স্কুল-কলেজ চালু করতে পারলাম না। তারপরও আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে সংসদ টিভি ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা নিয়েছি। এসময় তিনি ঘরে বসে না থেকে পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও অন্যান্য বই পড়ার মাধ্যমে বেশি বেশি জ্ঞানার্জনের তাগিদ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তোমাদের ওপর তো আগে থেকেই আমার নির্দেশ ছিল— নিজের গ্রামে যারা নিরক্ষর, তাদের অক্ষরজ্ঞান দাও। স্কুলের বাচ্চাদের, আত্মীয়-স্বজন বা পাড়া-প্রতিবেশী যারা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে পারলে তাদের পড়ালেকায় সাহায্য করো। অর্থাৎ শিক্ষাটাই প্রধান— এই কথা মাথায় রেখে ছাত্রলীগকে চলতে হবে। ছাত্রলীগের যে মূলমন্ত্র— শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি। কাজেই শিক্ষা হচ্ছে এক নম্বর। শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা শান্তি চাই এবং এই শিক্ষা আমাদের জাতির পিতাও দিয়ে গেছেন যে আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আমরা সংঘাত চাই না। আমরা শান্তি চাই। সেই শান্তির পথ ধরে আমরা প্রগতির পথে এগিয়ে চলব, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে।

ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এবার ঘোষণাই দিয়েছি যেহেতু মুজিববর্ষে অন্যান্য অনুষ্ঠান করতে পারলাম না, তাই ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করব। বৃক্ষরোপণের কাজও করেছ। তোমরা যে কাজগুলো করে গেছ, তার জন্য সবসময় সাধুবাদ জানাই। আমি জানি, হয়তো ক্ষেত্রবিশেষে কোথাও কোথাও দুয়েকটি ঘটনা ঘটে। আর আমাদের কিছু পত্রপত্রিকা আছে, তারা সেই খুঁতগুলোই বড় করে লিখে। এটা তাদের মনমানসিকতার দৈন্য বলেই আমি মনে করি। কাজেই ওগুলা আমি বেশি একটা হিসাবে ধরি না। আমি দেখি যে আমি ছাত্রলীগকে যে নির্দেশ দিয়েছি, বৃক্ষরোপণ করা, ধান কেটে কৃষককে সহযোগিতা করা বা করোনাভাইরাসের সময় আক্রান্ত রোগী এবং যারা মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা, ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া, ঝড় এলে সেই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো— মানবসেবার এই কাজগুলো করে যাচ্ছ, এটাই বড় কথা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত ও কেআইবি মিলনায়তন প্রান্তে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এছাড়া ১৯৮১ সাল থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন