বিজ্ঞাপন

কমেছে পেঁয়াজ-আলু-কাঁচা মরিচের দাম, স্থিতিশীল নিত্যপণ্যের বাজার

January 9, 2021 | 5:22 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ, আলু, কাঁচা মরিচ ও শীতকালীন সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে মাছ ও চালের বাজার স্থিতিশীল। অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে এসে বেড়েছে তেল ও চিনিসহ আরও কিছু নিত্যপণ্যের দাম।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা নিত্যপণ্যের কাঁচাবাজার মার্কেট ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে চলতি সপ্তাহের বাজারের এই চিত্র।

এই বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছ ২৫ টাকা কেজি দরে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৩০ টাকা। দাম কমছে কেজি প্রতি ৫ টাকা। একইভাবে একেকটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছ ২০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ২৫ টাকা ছিল। বাঁধাকপির দামও ৩০ টাকা থেকে কমে ২৫ টাকায় নেমে এসেছে। প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের এখনকার দাম ৮০ টাকা।

অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, কাঁচা পেপে ২০ টাকা ও মটরশুঁটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহেও টমেটো ৬০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পেঁপে ২৪ থেকে ৩০ টাকা ও মটরশুঁটি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। সে হিসাবে সব সবজিতেই দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। তবে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে শিম (৩০ টাকা), কালো বেগুন (৪০ টাকা), সাদা বেগুন (৩০ টাকা)। মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও গাজরের দামও আগের মতোই আছে। তবে দাম বেড়েছে লেবুর। গত সপ্তাহে ২০ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

সবজির বাজার সম্পর্কে বিক্রেতা মো. নুরু ভান্ডারি সারাবাংলাকে বলেন, অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে আলু-শিম-টমেটো-কাঁচা মরিচের যেমন দাম কমেছে, তেমনি ক্রেতার চাহিদাও এ সবজিগুলোতে বেশি। আরও কয়েক সপ্তাহ দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

মাছের বাজার দর

গত সপ্তাহের মতো চলতি সপ্তাহেও মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এ সপ্তাহে দুই কেজি সাইজের রুই-কাতল মাছের দাম কেজি প্রতি আড়াইশ টাকা। আর ১ কেজি ওজনের রুই-কাতল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। পাঙ্গাস মাছ ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিংড়ির কেজি ৫০০ টাকা চলছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫০ টাকা। আর গত সপ্তাহের মতোই তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, সরপুঁটি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

তবে এ বাজারে ইলিশের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা কেজি দরে। তবে শোল কেজি প্রতি ৫০০ ও শিং মাছ কেজি প্রতি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দরেই।

মাছ বিক্রেতা মো. রাসেল জানালেন, এ সপ্তাহে মাছের বাজারে ক্রেতার চাহিদা একটু কম। শীতকালীন সবজি নাগালের মধ্যে চলে আসায় সবজিতে ঝুঁকেছেন ক্রেতারা। সে তুলনায় মাছের দাম কমেনি, তবে বাড়েওনি।

দাম কমেছে ডিম-মাংসের

বিজ্ঞাপন

দোকানিরা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কেজি প্রতি মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে হাড়সহ গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকায়, এ সপ্তাহে দাম ৫৫০। আর হাড় ছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। অন্যদিকে খাসির মাংস গত সপ্তাহের মতোই ৮৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আর ছাগলের মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা।

এই বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ টাকা বেশি। সোনালি মুরগির কেজি ২৩০ টাকা, যেটিও গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেশি। তবে দাম বাড়েনি দেশি মুরগির, আগের মতোই ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির মতো ডিমের দামও কমেছে। লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৮৫ টাকায়, কর্কের ডিমের ডজন ৯৬ টাকা। অন্যদিকে, দেশি মুরগির ডিম গত সপ্তাহে ১৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে এই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিমের ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা।

ডিমের দোকানদার মো. ইয়ারুল শেখ সারাবাংলাকে বলেন, এ সপ্তাহে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ডজন প্রতি ডিমের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়তি ছিল। এ সপ্তাহে সে তুলনায় কম।

চালের বাজার অপরিবর্তিত

অপরিবর্তিত রয়েছে চালের বাজার মূল্য। মিনিকেট চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। এছাড়া নাজির ৬৫ টাকা, আটাশ ৫২ টাকা ও পাইজাম ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম সারাবাংলাকে বলেন, যদি সামনে সরকার বাইরে থেকে চাল আমদানি করে, তবে দাম কমবে। আর আমদানি বন্ধ থাকলে চালের দাম হয়তো বাড়তেও পারে।

মুদি বাজার

সবজি, মাছ ও মাংসের বাজারের তুলনায় মুদি পণ্যের দামে কিছুটা হেরফের রয়েছে চলতি সপ্তাহে। আমদানি করা মশুর ডাল (মোটা) কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, দেশি মশুর ডালের (চিকন) দাম ১০৫ টাকা। ক্যাঙ্গারু মশুর ডাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। ডালের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বাড়েনি বা কমেনি।

এই বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আমদানি করা নেদারল্যান্ডের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৫ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজে ১০ টাকা ও নেদারল্যান্ডের পেঁয়াজে কেজি প্রতি ৫ টাকা দা, কমছে। ভারতীয় ও দেশি দুই ধরনের রসুনইবিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা।

এদিকে, দেশি চিনি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, ভারতীয় চিনি ৬৫ টাকায়। চিনিতে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। সেই সঙ্গে বোতলজাত সয়াবিন তেলেও কেজি প্রতি বেড়েছে ১৩ টাকা।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের দোকানি মো. বাহার সারাবাংলাকে বলেন, কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আবার কিছু পণ্যের দাম কমেছে-বেড়েছে। তবে কেন দাম বাড়ছে, তা আমরা সঠিক বলতে পারিনি। ডিলাররা বলছে বেড়েছে, তাই আমাদেরও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে।

তিনি বলেন, আমাদের মার্কেটে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ নেই। ক্রেতাদের চাহিদা না থাকায় এ পেঁয়াজ আনা হয়নি। তবে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। দামও কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে।

সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন