বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্রের দায়ে বাংলাদেশি দণ্ডিত

January 10, 2021 | 3:31 pm

ঢাকা: ওয়াশিংটন–মেক্সিকো থেকে বহিরাগতদের যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখার দায়ে মেক্সিকোর মন্টেরিতে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি নাগরিককে ৪৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। এছাড়া তাকে পরবর্তী আরও তিন বছরের জন্য পর্যবেক্ষণের আওতায় মুক্ত রাখার দণ্ড দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা মিশন থেকে রোববার (১০ জানুয়ারি) এক বার্তায় জানানো হয়, দণ্ড পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের নাম মোক্তার হোসেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মোক্তার হোসেন স্বীকার করেছেন যে, তিনি ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে অর্থের বিনিময়ে টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার পরিকল্পনা করেছেন এবং এনেছেন। মোক্তার হোসেন মেক্সিকোর মন্টেরিতে থেকে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। সেখানে তিনি একটি হোটেলের ব্যবস্থা রেখেছিলেন, যেখানে বহিরাগতরা যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে আশ্রয় গ্রহণ করতো। এসব বহিরাগতকে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি গাড়িচালকদেরকে অর্থ দিতেন এবং কিভাবে রিও গ্র্যান্ডে নদী পার হতে হবে সে বিষয়ে বহিরাগতদেরকে পরামর্শ দিতেন।

জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ক্রিমিনাল ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ডেভিড পি বার্নস বলেন, ‘মামলার আসামি একটি সংগঠিত চোরাচালান নেটওয়ার্কের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। যিনি মুনাফার জন্য কাজ করতেন এবং যেসব বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাইতো তাদেরকে শিকার বানাতেন। এই দণ্ডাজ্ঞা এ ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ সংঘঠনে জড়িতদের জন্য একটি সুস্পষ্ট নিরোধক হিসাবে কাজ করে। যারা আর্থিক লাভের জন্য আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয়।’

বিজ্ঞাপন

‘সীমান্ত নিরাপত্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা আসলে একই বিষয়’—বলে মন্তব্য করেন টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলার জন্য নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি রায়ান কে প্যাট্রিক। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কারা আমাদের দেশে প্রবেশ করছে এবং কাউকেই আমরা অবারিত সুযোগ দিতে পারি না। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমার অফিস সকল সহযোগী সংস্থার সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করছে।’

সান অ্যান্টোনিওস্থ যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-এর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন (এইচএসআই)-এর ভারপ্রাপ্ত বিশেষ প্রতিনিধি শেন ফোল্ডেন বলেন, ‘হোসেনের অপরাধের তদন্ত, বিচারকাজ ও দণ্ডাজ্ঞা প্রদানের বিষয়টি আন্তঃদেশীয় তদন্তে বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা এবং বিদেশি প্রতিনিধি সংস্থার সমন্বয়ে আন্তঃদেশীয় তদন্তকাজ সমন্বয়ে এইচএসআই-এর অনন্য সক্ষমতার ফলাফল। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী অপরাধমূলক পাচার নেটওয়ার্কগুলোকে শক্তহাতে নির্মূল করতে এইচএসআই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করবে।’

এইচএসআই হিউম্যান স্মাগলিং ইউনিট, এইচএসআই মন্টেরি, এইচএসআই হিউস্টন, এইচএসআই ক্যালেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্যাট্রল, যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডার প্যাট্রল ও যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল সার্ভিসের সহায়তায় এই মামলার তদন্ত পরিচালনা করেছে এইচএসআই লারেডো। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ক্রিমিনাল ডিভিশন এবং এইচএসআই-এর যৌথ অংশীদারত্বে কার্যক্রম এক্সট্রাটেরিটোরিয়াল ক্রিমিনাল ট্রাভেল স্ট্রাইক ফোর্স (ইসিটি) কর্তৃক মামলার তদন্তটি পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা বা জন নিরাপত্তা ঝুঁকি অথবা গুরুতর মানবিক উদ্বেগ সৃষ্টিকারী মানব পাচার নেটওয়ার্ক বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকে ইসিটি কার্যক্রম। তদন্ত, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং বিচারকার্য পরিচালনায় ইসিটির রয়েছে নিবেদিত জনসম্পদ। ইসিটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিদেশি আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষসমূহের সঙ্গে সমন্বয় করে এবং তাদের সহায়তা পেয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নির কার্যালয়ের সহায়তায় এই মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেন ক্রিমিনাল ডিভিশনের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড স্পেশাল প্রসেকিউশনস সেকশনের ট্রায়াল অ্যাটর্নি জেমস হেপবার্ন এবং এরিন কক্স।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন