বিজ্ঞাপন

প্রসবের আগে স্বামীর জন্য রান্না করে রাখার নির্দেশ, সমালোচনার ঝড়

January 16, 2021 | 9:55 pm

রোকেয়া সরণি ডেস্ক

সন্তান জন্মদানের আগে দেখুন বাড়িতে পর্যাপ্ত টয়লেট পেপার আছে কি না? স্বামীর জন্য খাবার প্রস্তুত করে রাখুন, যিনি অবশ্যই রান্না জানেন না। গোসল যদি নাও করেন, চুল সবসময় পরিপাটি করে বেঁধে রাখুন। আর বাচ্চার জন্মের পর চোখের সামনে একটি ছোট আকারের জামা ঝুলিয়ে রাখুন যাতে ওজন কমানোর কথা মাথায় রেখে কম খান—দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে নগর কর্তৃপক্ষ সেখানকার গর্ভবতী নারীদের জন্য এসব নির্দেশনা জারি করে, যা দেশব্যাপী ব্যপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞদের ধারণা এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে কম জন্মহারের এই দেশে নারীরা সন্তান নিতে উৎসাহ হারাবেন।

সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে একটি সরকারি ওয়েবসাইটে এই বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছিল। তবে সম্প্রতিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হওয়ায় ওই ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। অভিযোগ ওঠে দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজব্যাবস্থার গভীরে থাকা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে। নির্দেশনাটি উঠিয়ে নেওয়ার জন্য পিটিশন দায়ের করা হয়।

ইয়ং হায়ে-ইন নামের একজন অ্যাকটিভিস্ট এবং রাজনীতিবিদ টুইটারে তার প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘এই গাইডলাইনের মাধ্যমে একজন প্রসূতির জন্য সন্তানের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর দেখাশোনা করতেও বাধ্য করা হয়। রান্নার মতো দরকারি কাজ না জানা পুরুষকে রান্না করে খাওয়ানোর দায়িত্ব নেওয়ার চেয়ে ডিভোর্স নেওয়া অনেক ভালো কৌশল।’

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নির্দেশনার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরীয় সরকার দারুণ একটি সুযোগ হারিয়েছে।

কোরিয়ান অ্যাসোসিয়সন অব অবস্ট্রিসিয়ান ও গাইনোকলজিস্টের চেয়ারম্যান কিম জায়ে-ইয়ানের মতে, ‘আমার মনে হয় এটি এমন একজন লিখেছেন যিনি কখনো সন্তান জন্ম দেননি। এমন অবাস্তব পরামর্শের পরিবর্তে সরকার বরং স্তন্যপানের মতো জরুরি বিষয়ের ওপর জোর দিতে পারতো।’

এদিকে নির্দেশনাটি সরানোর পাশাপাশি যারা এটির সঙ্গে জড়িত তাদের জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার জন্য গত সপ্তাহ থেকে অনলাইনে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর গ্রহণ চলছে। এখন পর্যন্ত ২১ হাজার মানুষ এটিতে অংশ নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছে পাঠানো এক ইমেইল বার্তায় সিউল সিটির কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন একটি নির্দেশনা জারির আগে একাধিকবার ভালোভাবে খুটিয়ে পর্যবেক্ষণ না করার দায় তাদের। তাদের অনলাইন কন্টেন্টগুলো আবার খুটিয়ে দেখা হবে ও নগররক্ষণের কাজ করা সব কর্মীকেই ‘জেন্ডার-সেনসিটিভিটির’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এদিকে গাইডলাইনের সবচেয়ে আপত্তিকর অংশগুলো সরিয়ে ফেলা হলেও এখনো যা আছে তাও যথেষ্ট আপত্তির। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এসংক্রান্ত স্ক্রিনশটে ছয়লাব। ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সারাবাংলা/আরএফ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন