বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফের পুরনো গৌরব ফিরে পাবে, আশা প্রধানমন্ত্রীর

January 22, 2021 | 10:32 am

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এটা চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবার তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই হচ্ছে আমাদের সারাদেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই এর পূর্ব গৌরব আবার ফিরে আসবে। আমাদের সকল অর্জনের বাতিঘর যেটা, তার সেই আলো ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রিফ্লেকশন ফর্ম অ্যালামনাই ন্যাশনাল এবং ইন্টারন্যাশনাল শীর্ষক ই-সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশ নিতে না পারার আক্ষেপও ঝরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থীর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা আমাদের বাঙালি হিসাবে আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, আমাদের সামাজিক অধিকার এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জন, এই প্রতিটি অর্জনের সূতিকাগার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে সত্যি খুব গর্বিত।’

বিজ্ঞাপন

নিজের পরিবারের অন্যান্য অনেকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালরে সাথে পরিচয় যখন আমি আজিমপুর গার্লস স্কুলে পড়ি সেই ৬২ সালে। শিক্ষা আন্দোলন যখন শুরু। স্কুলের দেয়াল টপকিয়ে পালিয়ে এসেছিলাম। ছাত্রীবোনদের নিয়ে মিছিল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই থেকে রাজপথের প্রতিটি মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছি। এরপর কলেজ জীবনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে প্রত্যেকটা আন্দোলনেই অমি সম্পৃক্ত ছিলাম।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তার বিভিন্ন ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই সময় একটা মুচলেকা দিলে, একটা ফাইন ধরা হয়েছিল; সেটা দিলে পরে তাকে আবার ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হতে। কিন্তু সেটি তিনি করেননি। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তিনি এটি করবেন না। করলে দোষ স্বীকার করা হবে। এভাবেই তিনি একটা আদর্শ নিয়ে তার যাত্রা শুরু করেন।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংগ্রাম করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি প্রতিটি আন্দোলনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ৭৫’র জাতির পিতাকে হত্যার পর মিলিটারি ডিটেকটররা ক্ষমতা দখল করে, সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি দেখেছি শুধু অস্ত্রের ঝনঝনানি। মেধাবী ছাত্রদের বিপথে নিয়ে যাওয়া, শিক্ষার মান নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত। তখন এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়, বোমাবাজি হয়, মেধাবী ছাত্রদের বিপথে ঠেলে দেওয়া হয়, শিক্ষার স্বাভাবিকভাবে পরিবেশ নষ্ট হয় এবং সেটি আমরা হতে দেখেছি।’

কাজেই এভাবেই একটা জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ৭৫’র আগস্ট জাতিকে হত্যার পর। একের পর এক আমাদের আদর্শ, আমাদের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সব ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আজকে করোনাভাইরাসে যখন সারাবিশ্ব স্থবির আমি ঘরেও অনেকটা বন্দি। মাঝে মাঝে মনে হয়, ২০০৭ সালে যখন গ্রেফতার হয়েছিলাম তখন একটা ছোট কারাগারে ছিলাম, এখন মনে হচ্ছে একটা বড় কারাগারে আছি। যে কারণে আজকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে, অথচ সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের, দুঃখের। মনটা পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা ঠিক। কিন্তু উপায় নেই। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব আমার পায়ে শৃঙ্খল বেঁধে দিয়েছে সেটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটা চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয় আবার তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই হচ্ছে আমাদের সারাদেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই এর পূর্ব গৌরব আবার ফিরে আসবে। এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে। শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং আমাদের সকল অর্জনের বাতিঘর এই জায়গা থেকেই তার আলো ছড়িয়ে পড়বে সারাবাংলাদেশে।’

বিজ্ঞাপন

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে চলবে না। এটি একটি প্রতিষ্ঠান। যেটি আমাদের প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। কাজেই সেই বিশ্ববিদ্যালয়টা আরও সুন্দরভাবে উন্নত হোক সেটাই আমরা চাই। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে শুধু এটুকু বলতে পারি, আমার পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব ধরনের সহযোগিতা আপনারা পাবেন। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গর্বের বিদ্যাপীঠ।’

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন