বিজ্ঞাপন

সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর

January 27, 2021 | 4:07 pm

ফিচার ডেস্ক

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার (২৭ জানুয়ারি)। ২০০৫ সালের এই দিনে নিজ নির্বাচনী জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ এবং রাজনীতিবিদ।

বিজ্ঞাপন

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের জনসভার শেষ পর্যায়ে গ্রেনেড হামলার শিকার হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। এ হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। সেখান থেকে চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। হামলায় মারা যান তার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থক ৭০ জন আহত হন।

এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান (বর্তমান হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য)  বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। তবে ১৬ বছর পরেও মামলা দু’টির বিচার শেষ হয়নি। বর্তমানে উভয় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

শাহ আবু মোহাম্মদ শামসুল কিবরিয়া ১৯৩১ সালের ১ মে হবিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শাহ ইমতিয়াজ আলী ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৭ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন এবং  ১৯৪৯ সালে সিলেট মুরারীচাঁদ কলেজ থেকে আইএ পাস করেন তিনি। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। পরের বছর ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন তিনি এবং এ অভিযোগে গ্রেফতার হন। ১৯৫৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর পাকিস্তান সরকারের সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে পাকিস্তানে বৈদেশিক বিভাগে যোগদান করেন তিনি। কিবরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে ফ্লেচার স্কুল অব ল এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ব্রিটিশ ফরেন অফিসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তান আমলেই বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় শাহ এ এম এস কিবরিয়ার। পাকিস্তানের কূটনৈতিক মিশনের সদস্য হিসেবে কলকাতা, কায়রো, জাতিসংঘ মিশন, নিউইয়র্ক, তেহরান এবং জাকার্তায় নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে নিযুক্ত ছিলেন।

১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধের সময় ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করে মুজিবনগর সরকারের  প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন সংগঠনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিভাগে ডিরেক্টর জেনারেল পদে যোগ দেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ওই বছরেই পররাষ্ট্র সচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন তিনি। দেশের পাবলিক সার্ভিসে কর্মজীবন শেষে রাজনীতিতে যোগ দেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ১৯৯৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।  ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর  দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হবিগঞ্জ-৩ আসন থেকে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় মৃত্যু হয় তার।

বিজ্ঞাপন

শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যায় দু’টি মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। দু’টি মামলার একটিতে তিন দফা তদন্ত শেষে চার্জশিট গঠনের মাধ্যমে সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সালে। অপর মামলার চার্জশিট ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর গঠন করা হয়। আদালতে মামলা দু’টির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

সারাবাংলা/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন