বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২ লক্ষ্য বিএনপির

January 29, 2021 | 4:04 pm

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সুনির্দিষ্ট দু’টি লক্ষ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পালনের উদ্যোগ নিয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। প্রথমত, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে একটি পরীক্ষায় ফেলা; দ্বিতীয়ত, দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের ব্যাস্ত রাখা। এই দু’টি লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতিও নিয়েছে দলটি। দলের কার্যক্রম গতিশীল করতে নতুন করে গঠন করা হচ্ছে আরও দু’টি কমিটি।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করে— বিগত ১৩/১৪ বছর ধরে তারা কোনো কর্মকাণ্ডই স্বস্তিতে করতে পারেনি। প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের সব কাজেই বাধা দিয়েছে। ন্যূনতম সহযোগিতা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছ থেকে তারা পায়নি। দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

এমন পরিস্থিতি ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতির অহংকার ও আবেগস্পর্শী ইস্যু ‘স্বাধীনতার সুববর্ণজয়ন্তী’ ঘিরে বিএনপি যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়— এ বিষয়টি জাতির সামনে তুলে ধরার প্রয়াস থাকবে তাদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন কেবল ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সীমাবদ্ধ রাখবে না বিএনপি। সভা, সেমিনার, র‌্যালি, সিম্পোজিয়াম, প্রদর্শনী, মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, আলোকসজ্জা, প্রচার-প্রকাশনা, চলচ্চিত্র উৎসবসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তের এসব আয়োজন সফল করতে উন্মুক্ত স্থান, হলরুম, মাঠ-উদ্যান ব্যবহারের প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি ও সহযোগিতা চাইবে বিএনপি। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া দল স্বাধীনতার সুববর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপিকে সহযোগিতা না করলে, সেটাকে একটা ইস্যু হিসেবে নেওয়ার সুযোগ থাকবে বিএনপির।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয়ত, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘিরে জাতীয় কমিটি, স্টিয়ারিং কমিটি, বিভাগীয় কমিটি, বিষয়ভিত্তিক কমিটি, বহির্বিশ্ব বিষয়ক কমিটি ও পেশাজীবী কমিটিসহ অন্তত ৩২টি কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। এসব কমিটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রায় সব সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদেরকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিভিন্ন কমিটিতে। ফলে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন কমিটির ফিজিক্যাল ও ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরগুলোতেও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেসব সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশ গ্রহণের ফলে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব ফিরে আসছে। বছরব্যাপী আয়োজনে এই চাঙ্গাভাব আরও স্থায়ী হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রাজনীতিতে ‘সরব’ অবস্থান ধরে রাখতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই উদ্যোগ বিএনপির জন্য টনিক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে দলটির হাইকমান্ড। রাজনীতিতে টিকে থাকা ও তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের সেতুবন্ধনের ক্ষেত্রেও এটি কাজে লাগবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামে যার যেটুকু অবদান, সেটুকু শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা, জাতির সামনে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা।’

বিজ্ঞাপন

‘এ ছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখা, কাজের মধ্যে রাখা, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখাও আমাদের লক্ষ্য। আর স্বাধীনতা সংগ্রামে সব কৃতিত্বের একমাত্র দাবিদার আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে কেমন ভূমিকা পালন করে, সেটাও দেখা যাবে,’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

এদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত্রী উদযাপনে জাতীয় কমিটি, বিভাগীয় কমিটি, বিষয় ভিত্তিক কমিটি ও বহির্বিশ্ব কমিটির পাশাপাশি পেশাজীবী কমিটিও গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। পেশাজীবী নেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসনের প্রেসউইং সদস্য শায়রুল কবির খান।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন