বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে যারা আটক হলেন

February 1, 2021 | 1:30 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে বড় ব্যবধানে বিজয়ী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পার্লামেন্টে যাওয়ার দিনেই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে রাজধানী নেইপিডো থেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ আটক হন।

বিজ্ঞাপন

সেনাবাহিনীর হাতে মিয়ানমারের যেসব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আটক হয়েছেন, তাদের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট, স্টেট কাউন্সিলর এবং এনএলডি’র হয়য়ে সংসদ নির্বাচনে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে জয় পাওয়া সদস্যরা রয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট: সেনা অভ্যুত্থানের প্রথম প্রহরেই মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টকে আটক করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

স্টেট কাউন্সিলর: ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতা এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিকে আটক করার মাধ্যমে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত প্লট তৈরি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

পার্লামেন্ট সদস্য: রাজধানী নেইপিডো থেকে প্রকাশিত এক ফেসবুক ভিডিও থেকে দেখা যায়, এক নারী পার্লামেন্ট সদস্যকে সেনা সদস্যরা আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন। সে সময় তার শিশু সন্তানকেও কোল থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

এছাড়াও, মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুখ্যমন্ত্রীদের আটক করেছে সেনাবাহিনী।

যেহেতু, ইন্টারনেট, টেলিফোনসহ সকল ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে তাই আটক হওয়াদের সম্পূর্ণ তালিকা এখন অবধি প্রকাশ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা তবে বেলা বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে তলিকা হালনাগাদ করা হবে বলে ক্ষমতাসীন এনএলডি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে এনএলডি’র মুখপাত্র মি নিন্ট বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। জনগণকে জেনে বুঝে আইনানুগভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। তিনি নিজেও আটক হতে পারেন এমন আতংকের মধ্যে রয়েছেন।

এর কয়েক ঘণ্টা পর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে এক বছরের জন্য দেশে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেওয়া হয়।

ওই টেলিভিশন ঘোষণায় বলা হয়, নির্বাচনে জালিয়াতির ঘটনায় সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করা হয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের হাতে।

২০১১ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরুর আগ পর্যন্ত অর্ধশতক মিয়নমার সেনাবাহিনীর শাসনেই ছিল। সে সময় দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দি করে রাখা হয় সু চিকে। গৃহবন্দি থাকাবস্থায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অহিংস লড়াইয়ের জন্য ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। এর পর তার দল এনএলডি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে ২০১০ সালে, মুক্তি পান সু চি।

বিজ্ঞাপন

২০১২ সালের উপনির্বাচনে ৪৫ আসনের মধ্যে ৪৩টিতে জয়ী হয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী হয় সু চির দল। এর পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে এনএলডি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। সেই সরকারের মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়।

কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তার পর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কা করা হচ্ছিল।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন