বিজ্ঞাপন

‘নতুনের’ শুরু হোক অজেয় সাগরিকায়

February 2, 2021 | 7:15 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম থেকে: পরিসংখ্যান বলছে সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্টও হারেনি বাংলাদেশ। সাদা পোষাকে আজ অব্দি দুই দলের দুইবারের মোকাবিলায় একটিতে টাইগাররা জিতেছে, আর অপরটি হয়েছে ড্র। অর্থাৎ ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে এই মাঠে পয়েন্ট হারায়নি লাল সবুজের দল। সেই দলটির বিপক্ষে সেই ভেন্যুতেইে আবার আগামীকাল দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে নামছে টিম টাইগার্স। যার মধ্য দিয়ে করোনার এক বছর বিরতির পরে ডমিঙ্গো শিষ্যরা পা রাখবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দৌঁড়ে। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের দাপটে পৃথিবী আর আগের মত নেই। সবকিছুতেই নতুনের ছোঁয়া। নিউ নরমালের যুগে এই লড়াইয়েও নিশ্চয়ই তারা অজেয় থাকতে চাইবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ের বিস্তৃত অতীত ভুলে শুরুটা করতে চাইবে নতুন আঙ্গিকে।

বিজ্ঞাপন

উইন্ডিজদের বিপক্ষে টাইগাররা সব শেষে সাগরিকায় খেলেছিল ২০১৮ সালে। সেবার নভেম্বরে সফরকারি দলটিকে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬৪ রানে হারের গ্লানি উপহার দিয়েছিল সাকিব আল হাসান অ্যান্ড কোং। তার আগের ম্যাচটি গড়িয়েছিল ২০১১ সালের অক্টোবরে। কাকতালীয়ভাবে সেটিও ছিল সিরিজের প্রথম টেস্ট। তবে এবার ফলাফল ভিন্ন। দুই দলের ব্যাটে-বলের হাড্ডাহড্ডি লড়াইয়ের পর ম্যাচটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিতে হয়েছিল।

মজার ব্যাপার হল, এবারও সেই দলটির বিপক্ষে দু্ই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি সেই সাগরিকায়। তো কী হবে এবার? ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সবশেষ খেলা আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই বিব্রতকর হারের পুনরাবৃত্তি নাকি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম তিন ম্যাচের ধারাবাহিকতা? যেখানে ভারতের বিপক্ষে দুটি ও পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচে স্রেফ উড়ে গিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়শিপের পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের নামের পাশে একটি পয়েন্টও যোগ করতে পারেনি টাইগাররা। না, লাল সবুজের টেস্ট দলপতি মুমিনুল হক অবশ্য বলছেন তিনি আর সেই হতাশায় মোড়ানো অতীতে ফিরে যেতে চান না। এক বছর বিরতিতে টেস্ট খেলতে নেমে শুরুটা করতে চান নতুন করে। এবং আশার কথা হল এক বছর পরে টেস্টে ফেরাটা তিনি সুযোগ হিসেবেই দেখছেন।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) জহুর আহমেদে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

বিজ্ঞাপন

‘আমার কাছে মনে হয় এক বছর পর যেহেতু ফিরছি নতুন করে আরেকটা সুযোগ এসেছে টেস্ট ক্রিকেট নতুনভাবে শুরু করার। এটাকে সুযোগ হিসেবেই দেখছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটু চ্যালেঞ্জ তো থাকেই। ওটার চাইতে আমি যে জিনিসটা ভাবছি, আমরা দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করার, নতুন করে শুরু করার সুযোগ পাচ্ছি।’

অধিনায়ক হিসেবে ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই নামছেন মুমিনুল। যেখানে সাকিব, তামিম, মুশি’র সঙ্গে থাকছে মোস্তাফিজ, আবু জায়েদ রাহি, মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুলের মত টেস্ট স্পেশালিস্ট। তাছাড়া ম্যাচটিও ঘরের মাঠে। সঙ্গত কারণেই নিজেদের ফেবারিট মানছেন স্বাগতিক অধিনায়ক।

বিজ্ঞাপন

‘অবশ্যই। ঘরের মাঠে সবসময় স্বাগতিকরা ফেভারিট থাকে। আমরা আমাদের দিকেই মনোযোগ রাখছি বেশি। আমরা মাদের সেরাটা খেলার চেষ্টা করবো। তার মানে এই নয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুর্বল হিসেবে দেখছি।’

তবে নিজেদের ফেবারিট মানলেও প্রতিপক্ষ হিসেবে উইন্ডিজকে বিন্দুমাত্র খাট করে দেখছেন না স্বাগতিক দলপতি। কেননা তিনি ভাল করেই জানেন এই দলটি ওয়ানডে দলের অনুরুপ নয়। এখানে জার্মেইন ব্ল্যাকউড, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, জন ক্যাম্পবেল, কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, আলজারি জোসেফ, রাকিম কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিকনের মত ডাকসাইটে প্লেয়াররা মজুদ আছেন। মুহুর্তেই যারা ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে দারুণ পারঙ্গম।

ধরুণ চট্টগ্রামের উইকেট সামান্যতম পেস বান্ধব হল না, তখন নিশ্চয়ই অনেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন, যাক তাহলে বুঝি বাংলাদেশের জয় সুনিশ্চিত। তাদের জন্য দুঃসংবাদ হল, এভাবে ভাবার কোন কারণই নেই। কেননা গত ২৯-৩১ জানুয়ারি এম এ আজিজ স্টেডয়ামের স্পিন ট্র্যাকে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন দুই স্পিনার রাকিও কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিকন। কাজেই কন্ডিশন যেমনই হোক নির্ভার থাকার সুযোগ বাংলাদেশের একেবারেই নেই। এদিকে সামগ্রিক টেস্ট ম্যাচের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে উইন্ডিজরা। এই পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ বারের মোকাবেলায় ১০ বারই তারা জিতেছে। বাকি চারটিতে জিতেছে বাংলাদেশ, আর দুটি ম্যাচ হয়েছে ড্র।

বিজ্ঞাপন

তবে মুমিনুল হক যেহেতু বলছেন যেহেতু বলছেন নিউ নরমালের যুগে তিনি নতুন শুরু চাইছেন সেহেতু তার ওপর আস্থা রাখাই যায়। আখেরে স্বাগতিক অধিনায়ক বলে কথা, তার ওপরে খেলাটি আবার অজেয় ভেন্যুতে।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল সাড়ে ৯টায়।

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএইচএস

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন