বিজ্ঞাপন

বিবর্ণ বাংলাদেশ

February 12, 2021 | 6:46 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলার ধরণ দেখে মনে হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটে তাদের বুঝি মাত্রই জন্ম হল। বয়স ২১ তবুও যেন আঁতুরঘরের গন্ধই কাটিয়ে উঠতে পারেনি! এর চেয়েও দুঃখজনক হলো, দুই দশক পেরিয়ে গেলেও টেস্ট মেজাজটাই তাদের সত্ত্বায় জন্ম নিল না! টেস্ট ক্রিকেট মানেই ধৈর্য্যের খেলা, গেরিলাদের মত ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সেশনের পর সেশন এখানে সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হয়; এই মন্ত্রটাই যেন তাদের আজও শেখা হয়ে ওঠেনি। ব্যাটিংয়ে যেমন নবিশ নবিশ ভাব! বোলিং, ফিল্ডিংয়েও তাই।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের প্লেয়ারদের ভাবখানা এমন, মিরপুরের উইকেট বুঝি তাদের জন্য কিছুই নেই! সেটা বোলিংয়ে যেমন তেমনি ব্যাটিংয়েও। স্রেফ বধ্যভূমি বৈ আর কিছুই নয়। প্রতিপক্ষের ওপরে প্রভাব বিস্তারের কোন সুযোগই নেই। যাবতীয় সুযোগ সুবিধাদি তৈরি করে রাখা হয়েছে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য!

কেন বলছি? ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে তাইজুল, মিরাজ, রাহিদের বোলিংকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৪৩ ওভার (১৪২.২) ব্যাটিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ পুরো দেড় দিন তারা ক্রিজে টিকে থেকেছে। তাতে প্রথম ইনিংসে অতিথিরা স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৪০৯ রান। আবার যখন ব্যাটিং করছে তখন বালুর বাঁধের মত ভেঙে পড়ছে। শেষ সেশনে দুই ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ব্যাটিং করে ৭১ রান তুলতেই হারিয়েছে চার উইকেট! দ্বিতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৬ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৫ রান। তাতে ফলোঅনের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তা এড়াতে মুমিনুলদের প্রয়োজন আরও ১০৫ রান।

কিন্তু বাস্তবতা হল, টেস্টের জন্য মিরপুরের উইকেটটি আদর্শ। সিমাররা চাইলেই ধারাবাহিকভাবে বডিলাইনে বাউন্সার ওঠাতে পারছেন, বাড়তি সুইং পাচ্ছেন, স্পিনাররাও প্রায় আট ইঞ্চি বাঁকে স্ট্যাম্পে বল চুমু খাওয়াতে পারছেন। ব্যাটিংও তথৈবচ। চাইলেই ব্যাটসম্যানরা শটসের পসরা সাজিয়ে বোলারদের লাইন লেংথ গুড়িয়ে দিতে পারছেন।

বিজ্ঞাপন

অথচ সেখানেই কিনা বিবর্ণ বাংলাদেশ! স্বাগতিক হয়েও ঘরের মাঠে সফরকারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হিমিশিম খাচ্ছে মুমিনুল হক অ্যান্ড কোং। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় দিনেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও তার দল!

শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের ই বাংলায় বাংলাদেশ দিনের শুরুটা করেছিল লাঞ্চ বিরতির মধ্যেই সফরকারিদের গুটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে। কেননা প্রথম দিন টপ অর্ডারের ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ক্রিজে যারা ছিলেন তাদের ক্রিজছাড়া করতে স্রেফ ধারাবাহিক বোলিংয়ে প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটা তারা করে দেখাতে পারেননি। বরং হয়েছে উল্টোটা। অলআউট হওয়ার আগ পর্যন্ত এলক্রুমা বোনার (৯০), জশুয়া ডি সিলভা (৯২) ও আলজারি জোসেফরা প্রবলভাবে চোখ রাঙিয়ে গেছেন।

চা বিরতির ১৮ মিনিট আগে যখন ১০ম উইকেটের পতন হলো, তখন স্কোরবোর্ডে ক্যারিবিয়দের নামের পাশে চোখ ছানাবড়া করে দেওয়া ৪০৯ রান। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে আবু জায়েদ, তাইজুল ইসলাম ৪টি করে উইকেটে পেয়েছেন সত্যি তাবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাকি দুই উইকেটের ১টি করে নিয়ে নিজেদের কেবল সান্ত্বনাই দিতে পেরেছেন মেহেদি মিরাজ ও সৌম্য সরকার।

বিজ্ঞাপন

এদিকে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে একেবারে প্রথম ওভারের শেষ বলে শর্ট মিডউইকেটে কাইল মায়ার্সের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূণ্য হাতে ফিরলেন সৌম্য সরকার। এক ওভার বিরতিতে গালিতে ব্যক্তিগত ৪ রানে গ্যাব্রিয়েলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ক্রিজ ছাড়া হন নাজমুল হোসেন শান্ত (৪)। বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ তখন ১১ রান। এরপরর ৬০ রান যোগ হতে না হতেই বিদায় নিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক (২১) ও তামিম ইকবাল (৪৪)। তামিম ইকবালকে শেইন মোজলের নিরাপদ তালুতে তুলে দিয়েছেন আলজারি জোসেফ। আর মুমিনুল হককে জশুয়া ডি সিলভার গ্লাভসবন্দি করিয়েছেন রাকিম কর্নওয়াল। দিন শেষ ২৭ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিকুর রহিম ও ৬ রানে মোহাম্মদ মিঠুন।

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএইচএস/একেএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন