বিজ্ঞাপন

‘জনসনের ভ্যাকসিন এক ডোজই যথেষ্ট’

February 25, 2021 | 2:48 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এক ডোজের ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। এক্ষেত্রে, অন্য ভ্যাকসিনগুলোর মতো দুই ডোজ নিতে হবে না। এ ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ রেগুলেটর জানিয়েছে, এক ডোজের এই ভ্যাকসিন বেশ নিরাপদ ও কার্যকর। খবর ডয়চে ভেলে।

বিজ্ঞাপন

এফডিএ’র এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে জনসনের ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কয়েক দিনের মধ্যেই জনসনের ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটি হবে দেশটিতে অনুমোদন পাওয়া করোনার তৃতীয় ভ্যাকসিন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ফাইজার এবং মডার্নার ভ্যাকসিনের অর্থসাশ্রয়ী বিকল্প হবে জনসনের ভ্যাকসিন। আর ভ্যাকসিনটি সংরক্ষণ করা যাবে রেফ্রিজারেটরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়। কোনো বিশেষায়িত ফ্রিজারের প্রয়োজন পড়বে না।

এ ব্যাপারে জনসন অ্যান্ড জনসন বলেছে, মার্চের মধ্যে দুই কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আর জুনের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা একটি চুক্তির আওতায় তারা এ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

এর আগে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সংক্রান্ত ফলাফল জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করে জনসন অ্যান্ড জনসন। ওষুধ উৎপাদনকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান বেলজিয়ামভিত্তিক জ্যানসেন বলেছে, তারা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে, সে অনুযায়ী গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রেও এই ভ্যাকসিন উচ্চমাত্রায় কার্যকর।

বিজ্ঞাপন

নিজেদের উৎপাদিত ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে এফডিএ’র কাছে তথ্য-উপাত্ত দাখিল করেছে জ্যানসেন। পর্যালোচনা শেষে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যসংবলিত নথি প্রকাশ করেছে এফডিএ। সেখানে বলা হয়েছে, করোনার উপসর্গযুক্ত ও গুরুতর অসুস্থতা উভয় ক্ষেত্রে জনসনের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে চালানো জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে দেখা গেছে, করোনার তীব্র সংক্রমণে এই ভ্যাকসিন উচ্চমাত্রায় একই রকম কার্যকর। তবে সার্বিক সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে এটি কম কার্যকর হয়েছে। দেশ দুটিতে ভাইরাসের নতুন ধরনগুলোকে প্রভাব বিস্তারকারীর ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।

তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গুরুতর অসুস্থতা প্রতিরোধে জনসনের ভ্যাকসিন ৮৫ শতাংশের বেশি কার্যকর। তবে সার্বিকভাবে কার্যকর ৬৬ শতাংশ। এই সার্বিক অবস্থার মধ্যে মধ্যম মাত্রার অসুস্থতাও অন্তর্ভুক্ত। ভ্যাকসিন গ্রহণের ন্যূনতম ২৮ দিন পরের অবস্থাও বিবেচনায় আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, যারা জনসনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন, তাদের কেউ ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৮ দিন পর মারা যাননি বা হাসপাতালে ভর্তি হননি।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি বৈঠকে বসে জনসনের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়া উচিত হবে কি না, সে বিষয়ে সুপারিশ করবেন।

এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেন, সামনের সপ্তাহে জনসন অন্তত তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে বলে ধারণা করছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে প্রথমে এফডিএ থেকে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন প্রয়োজন হবে ভ্যাকসিনটির।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে যেখানে ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনের দুই ডোজ প্রয়োজন, সেখানে জনসনের ভ্যাকসিন শুধু এক ডোজই লাগবে। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন কর্মসূচির জন্য তুলনামূলক কম চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ দেওয়াই যথেষ্ট হবে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে সাড়ে ছয় কোটির বেশি মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক ১৩ লাখের মতো মানুষ সেখানে ভ্যাকসিন পাচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে নতুন রোগী, হাসপাতালে ভর্তির হার ও কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর ঘটনা কমে গেছে। তবে শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনাভাইরাসের রূপান্তর এই অগ্রগতির জন্য হুমকি বলে সতর্ক করে যাচ্ছেন।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন