বিজ্ঞাপন

গৃহকর্মীকে নির্যাতন: চিকিৎসক দম্পতিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

February 28, 2021 | 10:42 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈকে (১১) নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকর্তা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) রেজিস্ট্রার ডা. সিএইচ রবিন, তার স্ত্রী রাখি দাস ও তাদের সহযোগী বাসুদেবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শিশুটির চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে শনিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বরিশালের উজিরপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান। তিনি বলেন, মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নিপা বাড়ৈ উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামের ননী বাড়ৈর মেয়ে। তার বাবা একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার মা দুই বছর আগে অন্যত্র বিয়ে করে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে নিপা মেঝ।

বিজ্ঞাপন

অভাবের সংসারে বেঁচে থাকার জন্য নিপা বাড়ৈ ৬ মাস আগে স্থানীয় বাসুদেবের মাধ্যমে রাজধানীর শ্যামলীতে ডাক্তার সিএইচ রবিনের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে যোগদান করে। ডা. রবিন চন্দ্রের বাড়িও একই উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে। কাজে যোগ দেওয়ার পর ছোটখাটো অজুহাতে চিকিৎসকের স্ত্রী রাখি দাস নিপাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। কখনও দেয়ালের সঙ্গে তার মাথা ঠুকে দেওয়া হতো। আবার কখনও গলা চেপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করতো রাখি দাস। অব্যাহত নির্যাতনে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই চিকিৎসক দম্পতি লোক মারফত গত বুধবার সন্ধ্যায় নিপাকে তার গ্রামের বাড়ির কাছে একটি দোকানের সামনে ফেলে যায়। বাড়িতে আসার পর স্বজনরা নিপার শরীরে জখম ও ক্ষত দেখতে পেয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে। বুধবার রাত একটার দিকে নিপাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ।

পরদিন বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তার স্বজনরা। কিন্তু শিশুটি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। শুক্রবার ভোররাতে শিশুটিকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাপাত্তা হয় তার স্বজনরা। এ ঘটনায় শুক্রবার বেলা ১১টায় উজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তৌহিদ। নিখোঁজের ২৩ ঘণ্টা পর শনিবার ভোর চারটার দিকে পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে নিপাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির পর হারতা ইউনিয়নের একজন মেম্বারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি ডা. সিএইচ রবিন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শিশুর স্বজনদের অর্থের প্রলোভন দেখানো হয়। এ কারণে হাসপাতাল থেকে নিপাকে নিয়ে উধাও হয়েছিল স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন

শিশু গৃহকর্মী নিপা জানায়, কাজের শুরু থেকেই সামান্য ভুলত্রুটি হলেই ডাক্তার রবিনের স্ত্রী রাখি দাস তার শরীরে কখনো খুন্তি দিয়ে আঘাত করতো, কখনো বা ধারালো চাকু দিয়ে কোপ মারত।

সারাবাংলা/এএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন