বিজ্ঞাপন

সাংবাদিক আরিফুলকে নির্যাতন, ডিসি সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা চলবে

March 7, 2021 | 1:00 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ মার্চ) আদেশের বিরুদ্ধে আরডিসি নাজিম উদ্দীনের করা আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন। তাকে সহযোগিতা করেন ইশরাত হাসান। আরডিসি নাজিমুদ্দিনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহানারা বেগম।

আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন সারাবাংলাকে বলেন, কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আরিফুল ইসলামের করা অভিযোগপত্র অনুসারে কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দীন, সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও সহকারী কমিশনার এসএম রাহাতুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫-৪০ জন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে এ মামলা গ্রহণ করতে বলা হয়।

একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়ার সাজার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ডিসিসহ জড়িত অজ্ঞাতনামা ৩৫/৪০ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম থানায় ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।

গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের দণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।

এই ঘটনায় কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে ওই সাজার বৈধতা নিয়ে গত ১৫ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট দায়ের করেন।

রিট আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থি হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়।

এছাড়াও রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আরিফুল ইসলামকে রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে নির্দেশ দেন। এরপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল সহ এ মামলার আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন:

কুড়িগ্রামের নতুন ডিসি রেজাউল, সুলতানা প্রত্যাহার

‘ঘটনা পরিকল্পিত, প্রত্যাহার হচ্ছেন কুড়িগ্রামের ডিসি’

সারাবাংলা/কেআইএফ/এএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন