রাজপরিবারের বর্ণবাদী উদ্বেগের কথা জানালেন মেগান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল বলেছেন, তাদের ছেলে আর্চির জন্ম হওয়ার আগ থেকেই তার গয়ের রঙ কতোটা কালো হবে তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে। আর কেনো তাকে প্রিন্স খেতাব দেওয়া হয়নি, তার ব্যাখ্যা ওই ঘটনা থেকেই পাওয়া যায়।

রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেলের ধারণকৃত সাক্ষাৎকার রোববার (৭ মার্চ) সিবিএস টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। ওই সাক্ষাৎকারে মেগান মার্কেল তুলে ধরেছেন রাজপরিবারের যাওয়ার পর তার নানা উপলব্ধি আর অভিজ্ঞতার কথা।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ মা আর শ্বেতাঙ্গ বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া মেগান সাক্ষাৎকারে বলেন, ২০১৮ সালে রাজপরিবারে বিয়ে হওয়ার আগে তার জীবন ছিল সাদাসিধে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর অসহায়ত্ব তাকে এতোটাই গ্রাস করেছিল যে, তিনি আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন।

মেগান বলেন, রাজপরিবারের কেউ চায়নি তার সন্তান প্রিন্স বা প্রিন্সেস হোক, রীতি অনুযায়ী যা হওয়ার কথা তা না হওয়ায় ভবিষ্যতে তার নিরাপত্তা থাকতো না।

তিনি যখন অন্তঃস্বত্ত্বা, তার দিনগুলো একইরকম ছিল। বার বার ওই কথাগুলো ঘুরে ফিরে আসছিল, ‘তুমি নিরাপত্তা পাবে না, কোনো খেতাবও পাবে না’। আর যখন সন্তানের জন্ম হবে, তখন তার গায়ের রঙ কতটা কালো হতে পারে সেসব নিয়ে তাদের আলাপ আর উদ্বেগও তো ছিলই— বলেন মেগান।

রাজ পরিবারের কে বা কারা গায়ের রঙ নিয়ে ওই উদ্বেগের কথা বলেছিল, তা প্রকাশ করতে চাননি মেগান। তিনি নিজে সে সময় চুপ ছিলেন, না তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল— এই প্রশ্নের জবাবে মেগান বলেছেন— পরেরটি।

এদিকে, রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করেছেন মেগান ও হ্যারি। রয়টার্স লিখেছে, এই সাক্ষাৎকার তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পর্ক আরও তিক্ত করে তোলার প্রেক্ষাপট তৈরি করল।

প্রিন্স হ্যারি বলেন, তিনি রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়েছেন বোঝাপড়ার সংকটের কারণে। তাছাড়া তার ভয় ছিল, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আবার না ঘটে। ১৯৯৭ সালে নিজের মা প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর ঘটার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন হ্যারি।

তিনি বলেছেন, নিজের দাদি, ব্রিটিশ রানিকে তিনি অন্ধকারে রাখতে চাননি, কারণ তাকে তিনি খুবই শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু বাবা প্রিন্স চার্লস তার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

রানি এলিজাবেথের সঙ্গে তার এ বিষয় নিয়ে তিন দফা কথা হয়েছিল। আর বাবা ফোন ধরা বন্ধ করে দেওয়ার আগে তার সঙ্গেও দুই দফা কথা হয়েছে। পরে উনি আমাকে বলেছিলেন, তিনি সব কথা তাকে লিখিতভাবে জানাতে পারে কি না— বলেন হ্যারি।

হ্যারি-মেগানের সমালোচকরা বলেন, রাজপরিবারের দায়িত্বে যে নিষ্ঠা প্রয়োজন, তার বদলে তারা গুরুত্ব দিয়েছেন গ্ল্যামারকে।

অন্যদিকে তাদের সমর্থকদের ভাষায়, সেকেলে ব্রিটিশ ধ্যানধারণা যে এখনও বর্ণবাদের চেতনা বহন করে চলেছে মেগানের প্রতি তাদের আচরণই তার প্রমাণ।

সারাবাংলা/একেএম