বিজ্ঞাপন

এখনই সংসদ সদস্যপদ হারাচ্ছেন না হাজী সেলিম

March 9, 2021 | 7:06 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এই মামলায় সাজা হলেও এখনই হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠছে না। হাইকোর্টের এই সাজা বহালের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আপিল করলে সেই আপিলের রায়ের পর নির্ধারিত হবে, হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ বহাল থাকবে কি না।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন। রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা।

আরও পড়ুন- হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল

হাইকোর্ট সাজা বহাল রাখায় হাজী সেলিমকে সংসদ সদস্যপদ হারাতে হবে কি না— এ প্রশ্ন উঠেছে। কেননা সংবিধানের ৬৬ (১) (ঘ) ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী হয়ে ন্যূনতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডি হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে সংসদ সচিবালয়ে যোগাযোগ করলে জানানো হয়, হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ আপাতত যাচ্ছে না। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিম আপিল করলে সেই আপিলের রায়ের ওপর নির্ভর করবে তার এই পদ। ওই সময় আপিল বিভাগ রায় বহাল রাখলে কিংবা হাজী সেলিমের আপিল খারিজ করলে তখন তার তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল করে আসন শূন্য ঘোষণা করবেন স্পিকার।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, হাজী সেলিম যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (৩০ কর্মদিবস) হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করেন, সেক্ষেত্রেও হাইকোর্টের রায়টিই তার চূড়ান্ত সাজা হিসেবে থেকে যাবে। ওই সময়ও সংসদ সদস্যপদ হারাতে হবে হাজী সেলিমকে। সেক্ষেত্রে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত আপিলের সুযোগ পাবেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ডেপুটি স্পিকার আ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, মামলাটি অ্যাপিলেট ডিভিশনে (আপিল বিভাগ) গেলে সেখানে এই রায় বহাল থাকলে হাজী সেলিমের এমপি পদ হারানোর প্রশ্ন উঠবে। এর আগে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ হারানোর সুযোগ নেই।

ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, অ্যাপিলেট ডিভিশন হাজী সেলিমের আবেদন খারিজ করলে কিংবা এই রায় বহাল রাখলে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে সেই রায়ের কপি এলেই স্পিকার তার এমপি পদ খারিজ করে আসনটি শূন্য ঘোষণা করবেন। এর আগে তার সংসদ সদস্যপদ খারিজ করার কোনো সুযোগ নেই।

বিজ্ঞাপন

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদ বিবরণী  দাখিল না করার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দু’টি অপরাধের দায়ে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গত বছরের ৯ নভেম্বর হাজী সেলিমের মামলাটি হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত করতে উপস্থাপন করা হয়। একদিন পর ১১ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। পরে গত ৩১ জানুয়ারি মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। এর পাঁচ সপ্তাহের মাথাতেই হাইকোর্টের রায় এলো এই মামলায়।

রায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে সম্পত্তির বিবরণী দাখিল না করার দায়ে যে তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল, সেই অংশটি বাতিল করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন