বিজ্ঞাপন

যুক্তরাজ্যের নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট দেশে শনাক্ত হয় জানুয়ারিতেই!

March 10, 2021 | 3:11 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ও মাঝামাঝি সময়ে কিছু নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় বাংলাদেশে। করোনার এই ভ্যারিয়েন্টগুলো যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতো ছিল। তবে এগুলো বাংলাদেশে পাওয়া গেলেও এটি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। যাদের মাঝে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তাদের সবাইকে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। এমনকি তাদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত এই ভ্যারিয়েন্ট অন্য কারও মাঝে ছড়ানোর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ মার্চ) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে আমরা শুরু থেকেই সতর্ক ছিলাম। চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথমদিকে ছয়জনের করোনার নমুনায় যুক্তরাজ্যের নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুঁজে পাই। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যের সঙ্গে হুবহু মিল পাওয়া যায়। ঢাকা ও সিলেটে মূলত এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে যুক্তরাজ্যে থেকে আসা সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার নিয়ম আছে তাই খুব একটা বেশি ছড়ায়নি এই ভ্যারিয়েন্ট। যাদের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া গেছে তারা সবাই কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। আমরা তাদের আইসোলেশনে রেখে তত্ত্বাবধায়ন করেছি। একইসঙ্গে তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদেরকেও কন্টাক্ট ট্রেসিং করে বের করেছি। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইন সেদেশে যেভাবে ছড়িয়েছে তেমন কোনো গতি বাংলাদেশে পাইনি।’

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ডা. আলমগীর বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় ৮০টির বেশি দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যের মতো পৃথিবীর অনেক দেশেই যে সংক্রমণ বেশি হয়েছে বিষয়টা কিন্তু তেমন না। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু জায়গায় দেখেছি যে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট বেশ ছড়াচ্ছে। কিন্তু এই অঞ্চলে নতুন ভ্যারিয়ন্টটি স্প্রেডিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করেনি বলেই ধারণা আমাদের। কারণ আমরা এখনো সেরকম কিছু দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য থেকে আসার পর যাদের পজিটিভ পাওয়া গেছে তাদের নমুনা আমরা সিক্যুয়েনসিং করছি। সেই সিক্যুয়েন্সিং করেই আমরা আরও কিছু পেয়েছি। আমরা এই সিক্যুয়েন্সিং অব্যাহত রেখেছি। যারা পজিটিভ হয়েছে তাদের কন্টাক্ট ট্রেসিং করেছি। ১৪ দিন ফলোআপে রেখে ও পুনরায় নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছি। নমুনা পরীক্ষায় এই ভ্যারিয়েন্টটি কোথাও ছড়ানোর কোনো প্রমাণ পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কন্টাক্ট ট্রেসিং একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা আমরা শুরু থেকে করছি। এক্ষেত্রে বলা যায়, বাংলাদেশে সেই ভ্যারিয়েন্টকে আমরা এখনো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। তারা বাংলাদেশে আসার পরে হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে ছিল। সেখানে হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তাদের সংস্পর্শে এসেছে। তাদেরও নমুনা পরীক্ষা করে আমরা নতুন ভ্যারিয়েন্টের কোনো ট্রেস পাইনি। কিছু ক্ষেত্রে তাদের আত্মীস্বজনদেরও কন্টাক্ট ট্রেসিং করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে যাদের মাঝে নতুন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে তাদের আইসোলেশনে রেখে নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে।’

বিজ্ঞাপন

ডা. আলমগীর বলেন, ‘যুক্তরাজ্য থেকে যারা আসছেন তাদের প্রায় সবারই কিন্তু নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেখানে যাদেরই পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে তাদেরই আমরা সিকোয়েন্স করছি। নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেলে তাদের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। তারা সুস্থ হওয়া পর্যন্ত আমরা ফলোআপে থাকছি।’

জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্য থেকে আসা ছয়জনের মাঝে নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে জানিয়ে ডা. আলমগীর বলেন, ‘পরবর্তী পর্যায়ে আরও কিছু কাজ হচ্ছে। যাদের মাঝে পাওয়া গেছে তারা সবাই যুক্তরাজ্য থেকে ফেরা। এক্ষেত্রে ঢাকা ও সিলেটে পাওয়া গেছে এদের।’

ভ্যাকসিনের কার্যকারিতে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা যে ভ্যাকসিন দিচ্ছি সেটি এই ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে কার্যকর। যুক্তরাজ্যেও এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ভ্যাকসিন কাজ করছে না এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঢাকা শহরে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি, সিএইচআরএফ সহ আরও অনেকে সিকোয়েন্সিং করছে। সুতরাং কোনো নতুন কিছু পেলে সেটি অবশ্যই আমাদের কাছে চলে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্টের কোনো ভূমিকা নেই। মানুষের মধ্যে কিছুটা রিল্যাক্স মুড চলে আসায় সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও কিছুটা রিল্যাক্স ভাব দেখা যাচ্ছে। যার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ‘এই ভাইরাস দেশে কতটা ছড়িয়েছে তার বিস্তারিত জানতে কন্টাক্ট ট্রেসিং চলছে।’

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন