বিজ্ঞাপন

ঢাকায় সরকারি করোনা হাসপাতালে আইসিইউ খালি মাত্র ৩টি

March 28, 2021 | 9:37 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে বিভিন্ন হাসপাতালে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবশেষ তথ্য বলছে, রাজধানীতে কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবা দেওয়া ১০টি সরকারি হাসপাতালের ১০৮টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ১০৫ জন। অর্থাৎ আইসিইউ বেড ফাঁকা রয়েছে মাত্র তিনটি।

বিজ্ঞাপন

তবে এর মধ্যে একটি বেড ফাঁকা আছে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে। এই হাসপাতালটি পুলিশ বাহিনীর জন্য বিশেষায়িত হওয়ায় কার্যত সাধারণ মানুষের জন্য আইসিইউ বেড খালি রয়েছে মাত্র দুইটি। রোববার (২৮ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২২ হাজার ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ৯০৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। যা নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এদিন কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে ৩৫ জন মারা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞতিতে দেখা যায়, কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ বেড থাকলেও খালি আছে একটি। সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ছয়টি আইসিইউর মাঝে মাত্র একটি বেড ফাঁকা আছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ’র মধ্যে কোনো বেড খালি নেই। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেড পরিপূর্ণ।

এ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (১০টির সবকটি), মুগদা জেনারেল হাসপাতাল (১৯টি শয্যার সবকটি), সব আইসিইউয়ে রোগী ভর্তি রয়েছে।

এ ছাড়া রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে একটি বেড ফাঁকা রয়েছে। এটি একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল, যা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে করোনাক্রান্ত রোগীদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আইসিইউ সুবিধা নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, অধিদফতরের তালিকাভুক্ত ১০টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ১৮৮টি আইসিইউ বেডের মাঝে ৪৩টি এখন পর্যন্ত ফাঁকা আছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন ১৪৫ জন রোগী আইসিইউ ইউনিটে ভর্তি আছেন।

রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম মহানগরীর তালিকাভুক্ত সরকারি চার হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে ২৫টি, তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ১০ জন। বেসরকারি তিনটি হাসপাতালের ২৬টি শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন ১৬ জন।

অন্যদিকে সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ রয়েছে ৫৭৮টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ৩৫৮ জন। ফাঁকা রয়েছে ২২০টি বেড।

বিজ্ঞাপন

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি খারাপে দিকে। আর এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের পাওয়ার সংবাদ আশঙ্কাজনক। একইসঙ্গে দেশের মানুষ যদি এখনও স্বাস্থ্যবিধি এড়িয়ে চলে, মাস্ক না পরে তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তখন হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট একটা কারণ হতে পারে। তবে মূল কারণ কখনোই না। এক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়ার জন্য মূলত দায়ী আমাদের জীবনাচরণে স্বাস্থ্যবিধিকে গুরুত্ব না দেওয়া। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসমাগম এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি এবং একইসঙ্গে মাস্ক পরাটাও। ভ্যাকসিন দেওয়ার পড়েও অনেকে রিল্যাক্স হয়ে ঘুরছে। এটাও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে আমাদের জন্য। কারণ, ভ্যাকসিন দিলেই সবার মাঝে অ্যান্টিবডি গড়ে উঠবে আর করোনা সংক্রমণ হবে না- এমনটা কিন্তু কোথাও বলা হয় নাই। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারিভাবেও চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে কিছু প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটকে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধিটা বেশি করে মানতে হবে, যাতে হাসপাতালে কাউকে না আসতে হয়।’

সারাবাংলা/এসবি/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন