বিজ্ঞাপন

ভ্যারিয়েন্ট নয় স্বাস্থ্যবিধি অবহেলার কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে

March 29, 2021 | 11:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাম্প্রতিক দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। শুধুমাত্র কোনো স্ট্রেইন বা ভ্যারিয়েন্টকেই দায়ী না করে আত্মতুষ্টিতে ভুগে স্বাস্থ্যবিধিকে অবহেলা করার কারণে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। সোমবার (২৯ মার্চ) অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির জন্য স্ট্রেইন দায়ী কি না?- কিছুদিন ধরে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা দেখছি। এটি আসলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রথমত করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত তার রূপ পাল্টাচ্ছে অর্থাৎ তার মিউটেশন হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই চলমান প্রক্রিয়ায় নানা রকম স্ট্রেইনের কথা গবেষকরা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে পেয়েছে। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, স্ট্রেইন যাই হোক না কেনো উপসর্গ বা লক্ষণ বা রোগের তীব্রতা কিন্তু একই রকম। কাজেই স্ট্রেইন নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘গত তিন মাসে সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে সবকিছুতেই মানুষের ঢল ছিল। এখানে ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করার কোনো সুযোগ নেই। গত তিন মাসের অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখেছি, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে চরম অনীহা, অবহেলা ও একধরনের বেপরোয়া ভাব দেখা গেছে। এসব কারণে আজ সারাদেশে সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি। এসব কারণেই সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। আর আমরা মনে করি, এই ১৮ দফা মেনে চলার মাধ্যমে খুব দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। গত বছরের মার্চ থেকে যে চর্চাগুলো আমরা করেছি, স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য যে শিষ্টাচারগুলো আমরা শিখেছি- গত দুই থেকে তিন মাসে আমরা চরম আত্মতুষ্টিতে ভুগে এসব বিষয়ে অবহেলা করেছি। এ কারণেই আজ সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি।’

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যারিয়েন্ট দেশে আসবেই। কারণ এটি একটি আরএনএ ভাইরাস। আমাদের গবেষকরা এ নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে যতক্ষণ না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বলতে পারব না যে, বিশেষ কোনো ভ্যারিয়েন্টের জন্য এটা হয়েছে। যখন সব তথ্য-প্রমাণ আসবে সেটা আমরা সবাইকে জানাব। এক্ষেত্রে কোনও স্ট্রেইনকে এখানে দায়ী করে লাভ নেই। এটি একেবারেই মনুষ্যসৃষ্ট এবং আমাদের অবহেলার কারণে হয়েছে।’

মানুষের কাছ থেকে মানুষের মাঝে সংক্রমণ বন্ধ করাই আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডা. নাজমুল বলেন, ‘আমাদের এটি রোধ করতেই হবে। আর তাই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি নিয়ন্ত্রণ কমিটি ঠিক করবে। তবে আমরা বিষয়টি মনিটরিং করব। আমরা দেখেছি, প্রথম দিকে নতুন করে করোনা সংক্রমণের জেলা ছিল ছয়টি। ২০ তারিখে সেটি ২০ জেলায় পেয়েছি এবং ২৪ তারিখে পেয়েছি ২৯ জেলায়। সুতরাং করোনা সংক্রমণ বেড়েই যাচ্ছে।’

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন