বিজ্ঞাপন

মুখে ইসলামের নাম, অপবিত্র কাজ করে ধরা পড়ে রিসোর্টে

April 4, 2021 | 5:37 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টে নারী নিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হক ধরা পড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি ‍মুখে কিছু বলতে চাই না। গতকালকে আপনারা দেখেছেন, এরা একদিকে ইসলামের নাম, ধর্মের নাম, পবিত্রতার নাম- এতকিছু বলে অপবিত্র কাজ করে আজকে ধরা পড়ে সোনারগাঁওয়ে একটা রিসোর্টে।’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে রোববার (৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা রিসোর্টে ধরা পড়ে হেফাজতের জয়েন্ট সেক্রটারি, সে ধরা পড়ল। এবং সেটা বিষয়টি ঢাকার জন্য নানা রকমের চেষ্টা। পার্লারে কাজ করে এক মহিলা। একদিকে বউ বলে পরিচয় দেয়, আবার নিজের বউয়ের কাছে বলে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পড়ে আমি এটা বলে ফেলেছি।’

যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে তারা কি এরকম মিথ্যা কথা বলতে পারেন, এরকম অসত্য কথা কি তারা বলতে পারেন- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তো বলতে পারেন না। তাহলে এ কী ধর্ম পালন করে, মানুষকে কী শেখাবে? যারা হেফাজতের সদস্য, তাদেরকেও আমি অনুরোধ করি, তারাও একটু বুঝে দেখুক, কোন নেতৃত্ব তাদের? আগুন-জ্বালাও-পোড়াও করে তিনি বিনোদন করতে গেলেন একটা রিসোর্টে আরেকজন সুন্দরী মহিলা নিয়ে। এই তো বাস্তবতা। অর্থাৎ এরা ইসলাম ধর্মের নামের কলঙ্ক এবং ইসলাম ধর্মকে তারা ছোট করে দিচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসবেন তাকে আসতে দেওয়া হবে না। কেন? সেটিই আমার প্রশ্ন। তারা কি ভারতের দেওবন্দে পড়ালেখা করতে যায় না? আমরাও তো কওমি মাদ্রাসার সনদ দিয়েছি যেন তারা চাকরি-বাকরি করতে পারে। এতকিছুর পরও তারা এ সব করে বেড়াচ্ছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কিছু লোকের জন্য আজকে এই ধর্মটা, জঙ্গির নাম, সন্ত্রাসের নাম- আর এখন তো যে চরিত্র দেখাল, দুশ্চরিত্রের নাম, সব নাম জুড়ে দিচ্ছে। তার মানে, আমার পবিত্র ধর্ম, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। শান্তির কথা বলেছে। সাধারণ মানুষের কথা বলেছে, মানুষের উন্নয়নের কথা বলেছে। পবিত্র ধর্মকে এরা কলুষিত করে দিচ্ছে। এরা ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে। এবং এতো অর্থ কোথা থেকে আসে এই বিনোদনের সেটাও একটা প্রশ্ন। কাজেই এটা দেশবাসী বিচার করবে।’

একজন মুসলমানের আরেকজন মুসলমানের জানমাল হেফাজত করা, রক্ষা করা হচ্ছে দায়িত্ব- এমনটা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের নামে তারা জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। আর বিএনপি-জামায়াত তাদের মদদদাতা। এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য লজ্জার। সমস্ত পৃথিবীর জন্য লজ্জার বিষয় এনে দিচ্ছে তারা। এটাই হচ্ছে আমাদের দুঃখ। আমাদের পবিত্র ধর্মটাকে তারা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দিচ্ছে। তাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে বহু মানুষের জীবন গেছে। ২৬ মার্চ অনেক মানুষের জীবন গেছে। এজন্য দায়ী তো তারা।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও করে বিনোদন করতে গেল রিসোর্টে। তাদের বিনোদনে টাকা কোথা থেকে এটিও প্রশ্ন।’

‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষে আমাদের অনেক বিদেশি অতিথি এসেছেন, শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য সম্মানের। এগুলো তাদের ভালো লাগে না। তারা (হেফাজত) কর্মসূচি দেয় আর বিএনপি-জামায়াত সমর্থন দেয়। কীভাবে তাদের সমর্থন দিচ্ছে সেটিও প্রশ্ন। আসলে বিএনপির রাজনৈতিক কোনো আদর্শ নেই।’

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পর্যটন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদেশ থেকে যাত্রী এলে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। এক সপ্তাহ অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিং মল বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে কেনাকাটা করা যাবে। সব নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।’ এগুলো মানলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘করোনাভাইরাস এখন বিশ্বব্যাপী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে ২৯, ৩০ ও ৩১ মার্চ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ খুব বেশি বেড়ে গিয়েছিল। এখনো বাড়ছে। সে কারণে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মানতে হবে। বিয়ে-শাদিসহ সব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এবারের ভাইরাসটি কতটুকু খারাপ করল, চট করে তা বোঝা যায় না। পরে দেখা যায়, পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হয়েছে। তাই সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, তরুণ ও শিশুরাও সংক্রমিত হচ্ছে। তাদের সুরক্ষিত রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু করবো। আরও টিকা আনা হবে। টিকা আনার ব্যবস্থা করব।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন