বিজ্ঞাপন

হাঁটুর নিচে গুলি না করে পেটে-শিনায় কেন?— প্রশ্ন বাবুনগরীর

April 11, 2021 | 7:47 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় আক্রমণকারীদের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। তবে থানায় যারা হামলা করেছে তাদের ‘হাঁটুর নিচে’ গুলি না করে ‘পেটে-শিনায়-মাথায়’ গুলি কেন করা হয়েছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বাবুনগরী।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আল জামিয়াতুল আহিলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদরাসায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা শাহ মহিবুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা ৩৫ জন কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্নস্থানে সহিংসতায় হতাহত, বিভিন্ন স্থাপনায় তাণ্ডব, এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হকের অবরুদ্ধ হওয়া নিয়ে নানামুখী বিতর্কের মাঝেই এ সভা অনুষ্ঠিত হলো।

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী জানান, ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের দিন কেন্দ্রীয়ভাবে এবং দেশের কোথাও আঞ্চলিকভাবে হেফাজতে ইসলামের কোনো কর্মসূচি ছিল না। সেদিন যারা হাটহাজারীতে মিছিল করেছে তারা কারা, তা হেফাজতে ইসলাম জানে না বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাবুনগরী বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ রোজ শুক্রবার হাটহাজারীতে যে ঘটনা হয়ে গেল, ওইদিন আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এমনকি আমি নিজেও মাদরাসায় ছিলাম না। আমি অনেক দূরে ছিলাম। কিছু মানুষ মিছিল করেছে। তারা বলেছে- আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। কিন্তু প্রশাসনের পুলিশবাহিনী নির্বিচারে গুলি করে চারজনকে নিহত করেছে। আমাদের কথা হলো, তারা কারা আমরা জানি না। যদি তারা কিছু ভাংচুর করেও হালকা, যদি থানার গ্লাস (কাচ) একটা ভেঙেও ফেলে, পুলিশ গ্যাস ছাড়তে পারে, রাবার গুলি করতে পারে। অথবা পুলিশের জন্য তো অর্ডার আছে, গুলি করতে হলেও হাঁটুর নিচে করতে পারে যেন উত্তেজনা দমন হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি সফরে ছিলাম। আসার পথে আমি হাসপাতালে যাই। দেখি চারজনের লাশ, কারও পেটে, কারও শিনায়, কারও মাথায় গুলি। সাথে সাথে তারা মারা গেছে। পেটে-শিনায়-মাথায় কেন ‍গুলি করা হলো? পুলিশের কি এভাবে গুলি করার ক্ষমতা আছে?’

সারদেশে উত্তেজনা তৈরির প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় বায়তুল মোকাররমে মুসুল্লিদের সঙ্গে আওয়ামী ক্যাডারদের সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানেও হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। সেখানে মূলত মাদরাসায় ঢুকে ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এরপর স্থানীয় জনগণসহ মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল বের করেছে। ২৬ তারিখ, ২৭ তারিখ দুদিন উত্তেজনা হয়েছে। ২০-২১ টা লাশ পড়েছে। ২৭ মার্চ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করেছি, বিক্ষোভ মিছিল করেছি। কোথাও কিছু হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

হেফাজতের আমির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘চাকরিতে প্রমোশনের জন্য প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা এমন জুলুম করলে আল্লাহর গজব নেমে আসবে। এভাবে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এখন মাদরাসাগুলো একেবারে ঠাণ্ডা। কিন্তু ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে বাড়াবাড়ি করলে আবারও উত্তেজনা বাড়বে। তখন কিন্তু আমরা দায়ী থাকব না। আগেভাগে মন্ত্রী-এমপিদের, সরকারকে বলে দিচ্ছি।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন